মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দু’দফায় উত্তরবঙ্গে এসেছেন। তিন দিন পাহাড়ে কাটিয়েছেন। ত্রাণ বিলি, বিপর্যয় পরিস্থিতি সামলানোর প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন। তার পরেও পাহাড়ের লোধামা, রিম্বিকের মতো কিছু প্রত্যন্ত এলাকায় এখনও ত্রাণ ঠিক মতো পৌঁছয়নি বলে অভিযোগ। রাস্তার ধস না সরানোয় বিপাকে পড়েছেন বাসিন্দারা। বিভিন্ন এলাকায় বাড়ছে ক্ষোভ। তবে স্থানীয় প্রশাসন ত্রাণ না দেওয়ার অভিযোগ মানেনি।
বিজনবাড়ি ব্লকের রিম্বিক গ্রাম পঞ্চায়েতের টুবুন, তোকসার, গুম্বাদ্বার, ইয়াকরেবং, চেরিবোটের মতো পাঁচটি গ্রাম এখনও কার্যত বিচ্ছিন্ন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, যথাযথ ত্রাণও পাননি বাসিন্দারা। প্রশাসনের কাছে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা, বিপর্যস্ত এলাকাগুলির নাম, পরিস্থিতির তথ্য জানানো হয়েছে। তার পরেও ত্রাণ শিবির খোলা হয়নি। কেউ আত্মীয়ের, কেউ পরিচিতদের বাড়িতে কোনও রকমে আশ্রয় নিয়েছেন।
রিম্বিকের বাসিন্দা সঞ্জিত লেপচার কথায়, “বাড়ির একাংশের ক্ষতি হয়েছে। তবে থাকতে পারছি। অনেকে আত্মীয়ের বাড়িতে আছেন। রাস্তার পরিস্থিতি খুব খারাপ। যাতায়াতের উপায় নেই। ত্রিপল একটা পেয়েছি। আর কোনও ত্রাণ পাইনি।” আপার টুবুনের কৃষক রাজাবাহাদুর লেপচাও বলেন, “একটা ত্রিপল ছাড়া কিছু মেলেনি। মিরিক, পুলবাজার, সুখিয়াপোখরির মতো নানা এলাকায় শুনেছি সব কিছু দেওয়া হচ্ছে।”
মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে লোধামা-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। সে এলাকায় ফ্যানচেটার থেকে ফেডিখোলা পর্যন্ত ও এলাকার একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জায়গা থেকে ফ্যানচেটার পর্যন্ত রাস্তা এখনও বন্ধ। রিম্বিক, লোধামা বিজনবাড়ি ব্লকের অন্তর্গত। বিডিও অভিষেক বিশ্বাস বলেন, “বিপর্যয়ের পরে এলাকায় গিয়েছি। ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। আরও সমস্যা কী রয়েছে তা দেখতে এলাকায় যাব।”
‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ) সূত্রের খবর, নানা এলাকায় ধসের পরে মাটি সরানো হচ্ছে। লোধামা ও রিম্বিকের মতো এলাকায় ১০ অক্টোবরের আগে পর্যন্ত ‘আর্থমুভার’ জাতীয় মাটি সরানোর যন্ত্র পাঠানো যায়নি। তা পাঠিয়ে এখন ধীরে-ধীরে ধস সরানো চলছে। বুংকুলুংয়ের মতো এলাকাতেও আজ, শনিবার ‘আর্থমুভার’ পাঠানোর কথা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দার্জিলিং পাহাড়ে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলের সংখ্যা ৩২। তার মধ্যে ২০টি উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুল।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)