E-Paper

সোনা পাচার: শিলিগুড়ি করিডর নিয়ে উদ্বেগ

কেন্দ্রের রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরের রিপোর্ট বলছে, গোটা দেশে সোনা পাচার বা ‘স্মাগলিং’ রুখতে যে ধরপাকড় হচ্ছে তা খতিয়ে দেখে বোঝা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ-সহ চারটি রাজ্য সোনা পাচারের কারবারের ‘এন্ট্রি পয়েন্ট’ তথা ‘ট্রানজ়িট হাব’ হিসেবে কাজ করছে।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৬:২৮

— প্রতীকী চিত্র।

পশ্চিমবঙ্গ সোনা পাচারের অন্যতম প্রবেশপথ বা ‘এন্ট্রি পয়েন্ট’ হলে শিলিগুড়ি করিডর ‘হটস্পট’। যেখানে সারা বছরই সোনা পাচারকারীরা ধরা পড়ছে। সোনা আটক হচ্ছে। এই দুই মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও তার শিলিগুড়ি করিডর কেন্দ্রীয় সরকারের রাজস্ব গোয়েন্দাদের চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় পাচারকারীদের অসংখ্য ‘নেটওয়ার্ক’ কাজ করছে। যাদের শিকড় গভীরে।

কেন্দ্রের রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরের রিপোর্ট বলছে, গোটা দেশে সোনা পাচার বা ‘স্মাগলিং’ রুখতে যে ধরপাকড় হচ্ছে তা খতিয়ে দেখে বোঝা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ-সহ চারটি রাজ্য সোনা পাচারের কারবারের ‘এন্ট্রি পয়েন্ট’ তথা ‘ট্রানজ়িট হাব’ হিসেবে কাজ করছে। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে এই তালিকায় রয়েছে তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র ও উত্তরপ্রদেশ। তবে পশ্চিমবঙ্গ প্রথম সারিতে। রাজস্ব গোয়েন্দাদের বক্তব্য, গোটা দেশে পাচারের সময়ে যে সোনা ধরা পড়ছে, তার একটা বড় অংশ পশ্চিমবঙ্গ-সহ এই চারটি রাজ্যে। পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী অবস্থান, রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর ও বাংলাদেশ থেকে আসা সোনা পাচারের ‘ট্রানজ়িট রুট’ হওয়ার ফলে এই রাজ্য সোনা পাচারকারীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে ভারতের সঙ্গে উত্তর-পূর্বের সংযোগকারী ২০-২২ কিলোমিটার দীর্ঘ শিলিগুড়ি করিডর সোনা পাচারের ‘হটস্পট’ হিসেবে কাজ করছে। সারা বছরই এখানে পাচারের সোনা আটক হয়। গত অর্থ বছরে গোটা দেশে যা সোনা আটক হয়েছে, তার চার শতাংশ, প্রায় ৩০ কোটি টাকা মূল্যের সোনা শুধু এই ছোট্ট এলাকায় ধরা পড়েছে। সূত্রের বক্তব্য, স্বাভাবিক ভাবেই বিপুল পরিমাণ সোনা ধরা পড়ছে না।

রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরের ২০২৩-২৪-এ ভারতে পাচার নিয়ে রিপোর্ট অনুযায়ী, গত অর্থ বছরে ভারতে ৪৪৭.৪৮ মেট্রিক টন সোনা আমদানি হয়েছে। বেআইনি পথে সোনা আমদানির সময়ে রাজস্ব গোয়েন্দাদের হাতে ১৩১৯ কিলোগ্রাম সোনা ধরা পড়েছে। মূলত সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, সৌদি আরব ও পশ্চিম এশিয়ার অন্য দেশ থেকে বাংলাদেশ, মায়ানমার, নেপাল হয়ে সোনা ভারতে ঢোকে। রিপোর্ট বলছে, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় সোনা পাচারের বহু ‘গভীর নেটওয়ার্ক’ কাজ করছে। সম্প্রতি সীমান্তে একটি সুড়ঙ্গের খোঁজ মেলে, যার মাধ্যমে সোনা পাচার হত। বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া সোনা প্রথমে কলকাতা ও অন্যান্য শহরে যায়। পরে সেখানে ওই সোনা গলিয়ে গয়না তৈরি করে বিক্রি হয় এবং গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। পশ্চিমবঙ্গে ঘনঘন আটক হওয়া সোনার পরিমাণ থেকে বোঝা যায়, রাজ্যে কী পরিমাণ সোনা পাচারের কারবার চলছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Gold Smuggling gold Siliguri

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy