কুয়াশায় পথ দুর্ঘটনা এড়াতে শীতের শুরু থেকেই সাবধান ছিল পুলিশ। রবিবার রাতে কোচবিহারের কালজানি এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে গাড়ি পড়ে দুর্ঘটনায় একই পরিবারের চার জনের মৃত্যুর পরে পথ নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা আরও বাড়াতে তৎপর হল কোচবিহার জেলা পুলিশ। স্কুল, কলেজস্তর থেকে শুরু করে আমজনতার মধ্যেও পথ-নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে নানা ভাবে প্রচারের জোর দেওয়া হচ্ছে।কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, “শীত-কুয়াশার মরসুমে যান চলাচলে সাবধানতার ব্যাপারে আগে থেকেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ওই ব্যাপারে আরও বেশি করে সচেতনতা বাড়ানো হবে। নানা ভাবে এই বিষয়ে প্রচারও করা হবে।”
রবিবার রাতে তুফানগঞ্জে বিয়েবাড়ি থেকে ফেরার পথে পুন্ডিবাড়ি থানার কুয়ারপাড়ের কাছে একটি গাড়ি রাস্তার পাশে পুকুরে পড়ে যায়। ওই দুর্ঘটনায় গাড়িতে থাকা এক শিক্ষক দম্পতি ও তাঁদের দুই শিশু সন্তানের মৃত্যু হয়। সোমবার ঘটনাস্থলে যান কোচবিহারের পুলিশ সুপার নিজেও। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের ধারণা, রাস্তায় বাঁক থাকায় কোনও কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জলাশয়ে গাড়িটি পড়ে দুর্ঘটনা হয়। গাড়ির গতি বেশি ছিল বলেও মনে করছে পুলিশ। স্থানীয়দের একাংশের অবশ্য দাবি, শীতের রাতে গ্রামের রাস্তায় কয়েক দিন থেকে ঘন কুয়াশা হচ্ছিল। ওই রাতে তুলনায় কম হলেও কুয়াশা ছিল। সেটাও দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।
জেলা পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, এ বার শীত, কুয়াশার মরসুম শুরু হতে না হতেই জেলার চকচকা, রাজারহাট, খাগরাবাড়ি, মাথাভাঙার বেঙ্গলদই, কুশিয়ারবাড়ি, চিলাখানা, তুফানগঞ্জের রামহরি মোড়, বক্সিরহাটের হরিপুর মোড়ের মোট ৯টি ‘ব্ল্যাকস্পটে’ গতি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হয়। বাড়ানো হয় নজরদারি। দূরপাল্লার যানবাহন চালকেরা শীতের রাতে ক্লান্ত ও তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থার যাতে দুর্ঘটনায় না পড়ে, সে জন্য ভোরের দিকে চালকদের চা, গরম জল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। সেই সঙ্গে নেশাগ্রস্থ অবস্থায় গাড়ি চালানো বন্ধ করতেও নজরদারি বাড়ানো হয়। যদিও জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, ২০২৩ সালের (জানুয়ারি-নভেম্বর) নিরিখে চলতি বছরে ওই একই সময়ে কোচবিহারে দুর্ঘটনা কমেছে। যদিও অনেকেরই অভিযোগ, জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়ক বা গুরুত্বপূর্ণ বড় রাস্তায় নজরদারি থাকলেও গ্রামীণ এলাকায় তার সিকিভাগ নজরদারিও থাকে না। কালজানির দুর্ঘটনার পরে ওই ব্যাপারে আরও কড়া নজরদারির দাবি উঠছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)