কাজে: ফের ট্র্যাফিক সামলাচ্ছেন করোনা-জয়ী মালদহের পুলিশ অফিসার অসিত সাহা। নিজস্ব চিত্র
প্রথমে লড়াইটা ছিল সাধারণ বাসিন্দাকে করোনা থেকে রক্ষা করার। আর সেই কাজ করতে করতে নিজেরাই সংক্রমিত হন ওঁরা। তারপর দিন কেটেছে গৃহ-নিভৃতবাসে। সেরে উঠে বুধবার কাজে যোগ দিয়েছেন মালদহ ট্র্যাফিক পুলিশের অফিসার, কনস্টেবল, একাধিক সিভিক ভলান্টিয়ার। কিন্তু করোনার বিরুদ্ধে লড়াই থামেনি। তাই যান নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি মাস্কবিহীন পথচারীদের দেখলেই দিচ্ছেন সচেতনতার পাঠ ওঁরা। তাঁদের লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়ে সকলেরই সঙ্গে রাস্তায় নেমে যান-নিয়ন্ত্রণ করলেন জেলার ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তাও। আর এ ভাবে গৃহ নিভৃতবাসে থেকে করোনা সেরে যাওয়ায় খুশি স্বাস্থ্য দফতরও। তারা জানায়, এর থেকেই স্পষ্ট, সাবধানে থাকলে করোনাকে হারানো সম্ভব।
ক্রমশ জেলায় মুঠি শক্ত করছে করোনা, বাড়ছে সংক্রমিতের সংখ্যাও। সংক্রমণ ছড়াচ্ছে পুলিশ মহলেও। জেলায় দেড় শতাধিক পুলিশের সংক্রমণের খবর মিলেছে। তালিকায় মালদহের একাধিক থানার কর্তারা যেমন রয়েছেন, রয়েছেন নিচুতলার কর্মীরাও। সংক্রমিত হয়েছেন ট্র্যাফিক পুলিশের কর্মী, অফিসারেরাও। শুধু ট্র্যাফিক পুলিশেই আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ জন। আর এর পর থেকেই নিরাপত্তার জন্য শহরের একাধিক ট্র্যাফিক পয়েন্টে গার্ডরেল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ব্যারিকেড। তার মধ্যে থেকেই যান নিয়ন্ত্রণ করছেন তাঁরা।
এ অবস্থায় করোনা আক্রান্তেরা সুস্থ হয়ে কাজে যোগ দেওয়ায় সহকর্মীদের মনোবল আরও চাঙ্গা হবে বলেই দাবি পুলিশের। তারা জানায়, এক অফিসার, কনস্টেবল, সিভিক ভলান্টিয়ার সুস্থ হয়ে এ দিন কাজে যোগ দিয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন গৃহ-নিভৃতবাসে। এ দিন শহরের প্রাণকেন্দ্র রথবাড়িতে ট্রাফিক সামলাতে দেখা যায় করোনা জয়ী এক ট্র্যাফিক পুলিশকে। কী ভাবে সুস্থ হলেন? প্রশ্ন শুনে তাঁর উত্তর, ‘‘বাড়িতে থাকলেও সকলের থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছিলাম। আর চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো ভিটামিন-সি জাতীয় ওষুধ খেয়েছি। সঙ্গে গরম জল, চা, কফি, ডিম সেদ্ধ। টানা ২৮ দিন বাড়িতেই ছিলাম। তবে কখনও মনোবল হারাইনি।’’
সপ্তাহ দুয়েক আগে গৃহ-নিভৃতবাসে থেকে সুস্থ হয়ে কাজে যোগ দিয়েছিলেন করোনা জয়ী এক নার্সও। এ ভাবে ফলে গৃহ-নিভৃতবাসে থেকে সুস্থ হওয়ার প্রবণতা বাড়ায় স্বস্তি স্বাস্থ্য মহলে। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার তথা সহ অধ্যক্ষ অমিতকুমার দাঁ বলেন, ‘‘উপসর্গ না থাকলে নিয়ম মেনে চললে বাড়িতে থেকেই যে সুস্থ হওয়া যায় তারই প্রমাণ করছেন এই অফিসার, নার্সেরা। তাই অযথা আতঙ্কিত না হয়ে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।’’ সহকর্মীদের মনোবল চাঙা করতে এ দিন তাঁদের সঙ্গে রাস্তায় নেমে সচেতনতার পাঠ দেন
মালদহের ট্রাফিক ওসি তরুণ সাহা। তিনি বলেন, ‘‘নিয়ম মেনে চললে করোনা থেকে যে রক্ষা পাওয়া যায়, তা আমাদের সহকর্মীরা দেখিয়েছেন। ওঁরা আমাদের অনুপ্রেরণা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy