খাসপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চলছে করোনার পরীক্ষা। নিজস্ব চিত্র।
উত্তর দিনাজপুর জেলায় করোনা আক্রান্ত বাসিন্দাদের মৃত্যুর ঘটনা অব্যাহত। রায়গঞ্জ মেডিক্যাল সূত্রে খবর, সোমবার সকাল সাতটা থেকে মঙ্গলবার সকাল সাতটা পর্যন্ত মেডিক্যালের কোভিড আইসোলেশন ও অন্য ওয়ার্ড মিলিয়ে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দু’জন মহিলা। মৃতদের বাড়ি রায়গঞ্জ, করণদিঘি ও মালদহের বিভিন্ন এলাকায়। হাসপাতালের সহকারী সুপার অভিক মাইতি বলেন, ‘‘মৃতরা শ্বাসকষ্ট-সহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন।’’
এদিকে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জেরে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে জেলায় লাফিয়ে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। আর তারজেরেই জেলার বিভিন্ন কোভিড হাসপাতাল ও সেফহোমে শয্যার আকাল দেখা গিয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সোমবার থেকে জেলার কোনও কোভিড হাসপাতাল ও সেফ হোমে শয্যা ফাঁকা নেই।
ফলে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকেরা কম ও বেশি উপসর্গ থাকা করোনা আক্রান্ত বাসিন্দাদের বাড়িতে হোম আইসোলেশনে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে রায়গঞ্জের উকিলপাড়া এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড ওয়ার্ড চালু করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর। পাশাপাশি দফতরের তরফে ইসলামপুরের কোভিড হাসপাতাল ও রায়গঞ্জের কর্ণজোড়া কালীবাড়ি এলাকার কোভিড হাসপাতালে শয্যা বাড়ানোরও প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গৌতম মণ্ডল বলেন, ‘‘রায়গঞ্জের জীবনরেখা বেসরকারি হাসপাতালে ৬০ শয্যার কোভিড ওয়ার্ড চালু করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, ইসলামপুর ও রায়গঞ্জের কোভিড হাসপাতালে ৫০টি করে শয্যা বাড়ানোর কাজ শুরু হয়েছে। দুয়েকদিনের মধ্যেই তিনটি জায়গা মিলিয়ে করোনা রোগীদের জন্য অতিরিক্ত মোট ১৬০টি শয্যা চালু হয়ে যাবে।’’ তাঁর দাবি, রায়গঞ্জের ওই বেসরকারি হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীরা বিনা খরচে চিকিৎসা পরিষেবা পাবেন। রাজ্য সরকার তাঁদের চিকিৎসার খরচ মেটাবেন।
প্রসঙ্গত, ২ মে পর্যন্ত জেলায় ১০ হাজার ৫৯৬ জন বাসিন্দা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ওইদিন পর্যন্ত তাঁদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৮৬৫৮ জন। ওইদিন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় মৃত্যু হয়েছে ৯৬ জনের। তার মধ্যে দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাবে এপ্রিল মাসে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩৪০ জন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, বর্তমানে রায়গঞ্জ মেডিক্যালের কোভিড ওয়ার্ডে ৫৬টি, রায়গঞ্জের কোভিড হাসপাতালে ৫০টি, ইটাহারের সেফহোমে ১৩০টি, ইসলামপুরের সেফহোম ও ইসলামপুর কোভিড হাসপাতালে ৫০টি করে শয্যা রয়েছে। সব মিলিয়ে বর্তমানে জেলায় করোনা রোগীদের জন্য শয্যা রয়েছে ৩৩৬টি। রায়গঞ্জের ওই বেসরকারি হাসপাতালে ৬০টি শয্যা ও ইসলামপুর এবং রায়গঞ্জের কোভিড হাসপাতালে ৫০টি করে শয্যা চালু হলে জেলায় শয্যা সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৪৯৬টি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy