Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in North Bengal

বাড়ি যেন এখনও দূরের পথ

কেউ জিজ্ঞেস করছেন, “কোয়রান্টিনে জায়গা হবে তো আমাদের?” অনেকেই বাড়ি ফিরেছেন।

ফেরা: এ ভাবেই ফিরছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা। নিজস্ব চিত্র

ফেরা: এ ভাবেই ফিরছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা। নিজস্ব চিত্র

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২০ ০৬:০৭
Share: Save:

মনের আতঙ্ক ছুঁয়েছে ওঁদের মুখের রেখায়। স্পষ্ট হয়ে উঠেছে অভিব্যক্তিতে। কেউ কেউ গাড়ি থেকে নেমে পড়ছেন হুটহাট। খানিকটা এগোতেই যেন জড়োসড়ো হয়ে পড়ছেন। চারদিকের মুখগুলো দেখে ভয় পাচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে থেকেই একজন বলছেন, “জেলায় তো ফিরলাম। বাড়ি ফিরতে পারব তো?”

কেউ জিজ্ঞেস করছেন, “কোয়রান্টিনে জায়গা হবে তো আমাদের?” অনেকেই বাড়ি ফিরেছেন। হোম কোয়রান্টিনে রয়েছেন। জেলা জুড়ে তাঁদের ঘিরে ফিসফাস চলছে গ্রামের পথে পথে।কোচবিহার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “সবক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আতঙ্কের কিছু নেই।”

এই জেলায় এখন পর্যন্ত একজন করোনা রোগীর সন্ধান মেলেনি। আলিপুরদুয়ার জেলার কোয়রান্টিনে থাকা দু-জন কোচবিহারের বাসিন্দা অবশ্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু তাঁরা বাইরের রাজ্য থেকে এসেছিলেন। তাঁদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বা গ্রামেও তা ছড়ায়নি।

এই অবস্থায় গ্রিন জ়োন কোচবিহার নিয়ে কিছুটা হলেও স্বস্তি রয়েছে প্রশাসনে। এরই মধ্যে গত তিন-চারদিন ধরে হাজারে হাজারে ভিনরাজ্য থেকে বাসিন্দারা কোচবিহারে নিজের বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন। অভিযোগ, তার বড় একটি অংশের হিসেব প্রশাসনের খাতায় নেই। তাঁরা চুপিসাড়ে ঢুকে পড়ছেন বাড়িতে। আর যে অংশের হিসেব প্রশাসনের কাছে রয়েছে, তাঁদের বেশিরভাগকেই হোম কোয়রান্টিনে পাঠানো হচ্ছে। বাড়ি ফেরার পরে ওই বাসিন্দা হোম কোয়রান্টিনে রয়েছেন কি না তা নিয়ে নজরদারির অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ।

আর তা নিয়েই কিছু গ্রামে উত্তেজনা রয়েছে।

কোচবিহার থেকে চার হাজারের বেশি মানুষের লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তাতে রবিবার পর্যন্ত ২৬৭৪ জনের রিপোর্ট মিলেছে। প্রত্যেকেই নেগেটিভ। আরও ১৩৯৭ জনের রিপোর্ট বকেয়া রয়েছে। প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, ওই রিপোর্ট আসতে আরও অন্তত তিন-চারদিন লাগবে। তার পরে নতুন লালারসের রিপোর্ট আসবে। সেক্ষেত্রে দুই-তিনদের মধ্যে ভিনরাজ্য ফেরত বাসিন্দাদের রিপোর্ট পেতে অনেকটাই সময় লাগবে।

রবিবারই তোর্সা সেতুর উপর একটি গাড়ি থেকে নেমে শ্রমিক আজিজার রহমান বলেন, “খুব কষ্টে আছি। খুব ভয়েও আছি। একে আমাদের খাবার নেই। তার উপরে সবাই আমাদের দেখে কেমন দূরে সরে যাচ্ছে। গ্রামেও শুনছি একই অবস্থা।” চান্দামারির গ্রামীণ সম্পদ কর্মী বট মহন্ত বলেন, “অনেক মানুষ ভিনরাজ্য থেকে ফিরছেন। তাঁদের নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, সবাই গ্রামের বাসিন্দা। বরং সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in North Bengal Quarantine Center
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE