জলপাইগুড়িতে করোনা প্রতিষেধক টিকার প্রথম ডোজ়ের টোকেন দেওয়া নিয়ে দালাল চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। যদিও লাইনে দাঁড়ানো ব্যক্তিদের সঠিক ক্মানুযায়ী টোকেন দিয়েই টিকা দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি দফতরের।
অন্যদিকে, জলপাইগুড়ি পুরসভার ‘প্রয়াস’ হলে ১৮ থেকে ৪৪ বছরের নথিভুক্ত হকারদের না দিয়ে সাধারণ মানুষকে টিকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুরসভার বিরুদ্ধে। অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুরসভা। পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের দাবি, স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ মেনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুপারিশের ভিত্তিতে নথিভুক্ত হকারদের পাশাপাশি কোমর্বিডিটি রয়েছে, এমন ব্যক্তি বা করোনা আক্রান্তদের পরিবারের সদস্যদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নথিভুক্ত হকারদের সংখ্যা ১০৯১ জন । এখনও পর্যন্ত ৫০০ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সরকারের নির্দেশিকা মেনেই যাঁদের কোমর্বিডিটি রয়েছে, তাঁদের টিকা দেওয়া হচ্ছে।’’
দালাল চক্রের সক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে জলপাইগুড়ি ফার্মাসি কলেজের টিকাকরণ শিবির ঘিরে। অভিযোগ, ৫০০ টাকার বিনিময়ে দালালেরা খাতায় নাম লিখে টিকা দেওয়ার টোকেন উঠিয়ে উপভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছিল। এই দালাল চক্র উপভোক্তাদের কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে লাইনেও দাঁড়িয়ে থাকছেন। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, দালাল চক্র ঠেকাতে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা উপভোক্তাদের আগে আসার ভিত্তিতেই টিকার টোকেন দেওয়া হচ্ছে।
১৬ জানুয়ারি থেকে জেলায় টিকা দেওয়া শুরু হলেও প্রবীণদের অনেকেই প্রথম দিকে টিকা নিতে আগ্রহী ছিলেন না। টিকা নিতে ভয় পেয়েছিলেন বলে জানান অনেকেই। ৭৯ বছরের প্রবীণ নাগরিক সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এতদিন টিকা নিতে ভয় ছিল। এখন সবাই নিচ্ছেন। তাই লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা নিচ্ছি।’’
স্থানীয় পার্থ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রথম ডোজ় টিকা নিতে এর আগে এসে বেশ কয়েকবার ফিরে যেতে হয়েছে। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা প্রথম ৪০০ জনকে টিকা দেওয়া হচ্ছে। তাই গভীর রাতে লাইনে দাঁড়ানো ছাড়া উপায় নেই। "
জেলার ভারপ্রাপ্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মৃদুল ঘোষ বলেন, ‘‘জলপাইগুড়ি ফার্মাসি কলেজে টিকা দেওয়া নিয়ে দালাল চক্রের অভিযোগ পুলিশকে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।’’