Advertisement
E-Paper

১৮+ টিকা: ফিরতে হল সেই শূন্য হাতে

দফতরের দাবি, ‘অনলাইনে’ অনেকেই স্লট বুকিংয়ের মাধ্যমে টিকা নিতে পারছেন না।

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২১ ০৬:৩৭
প্রশ্ন: জলপাইগুড়ি পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের শিবিরে সোমবার টিকার খোঁজ নিচ্ছেন কয়েকজন তরুণ।

প্রশ্ন: জলপাইগুড়ি পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের শিবিরে সোমবার টিকার খোঁজ নিচ্ছেন কয়েকজন তরুণ। নিজস্ব চিত্র।

সৌমিত্র কুণ্ডু ও অর্জুন ভট্টাচার্য
শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি

কেন্দ্রীয় মন্ত্রক থেকে কোভিড অ্যাপ নিয়ন্ত্রিত হয়। সেখান থেকে নির্দেশ, ৫০ শতাংশ ‘অনলাইন’ এবং ৫০ শতাংশ ‘অনসাইট’ অর্থাৎ কেন্দ্রে গিয়েই নাম নথিভুক্ত করাতে পারবেন আঠারোর্ধ্ব যে কোনও বয়সের ব্যক্তিরা। না হলে ‘সেশন’ বা করোনা কেন্দ্র চালু করা হবে না। এই নির্দেশ মেনে ১৮-৪৪ বয়সের বহু ব্যক্তি ‘অনলাইনে’ টিকার জন্য নাম নথিভুক্ত করান। সেই মতো তাঁরা এ দিন জেলার বিভিন্ন টিকাকরণ কেন্দ্রে হাজির হন। কিন্তু রাজ্যের তরফে ওই বয়সের মধ্যে যাঁরা ‘অগ্রাধিকার’ তালিকায় পড়বেন, তাঁদেরই শুধু দেওয়া হচ্ছিল। এ দিনও সেটাই মানা হয়েছে। তাতে দার্জিলিং জেলায় আঠারোর্ধ্ব বহু ব্যক্তি টিকা নিতে এসে ফিরে গিয়েছেন।

মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য় বলেন, ‘‘টিকা পর্যাপ্ত নেই। রাজ্য সরকারের নতুন কোনও গাইডলাইনও এখনও আসেনি। তাই পুরনো নিয়ম মেনেই ১৮-৪৪ বছরের বাসিন্দাদের আগের নিয়ম মেনে অগ্রাধিকারভুক্ত ব্যক্তিদেরই টিকা দেওয়া হচ্ছে।’’

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৮ থেকে ৪৪ বছর পর্যন্ত বয়সের সাধারণ মানুষ এত বেশি মাত্রায় ‘অনলাইনে’ নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন যে সমস্যা তৈরি হয়েছে। কারণ, এখনও সরকারি নির্দেশ না আসায় আঠারোর্ধ্ব সকলকে সার্বিক ভাবে টিকা দেওয়ার শুরুর সিদ্ধান্ত হয়নি। অথচ এ দিন টিকা মিলবে ভেবে পাহাড় থেকে এবং সেনা হাসপাতাল, বাগডোগরা বিমানবন্দরের হাসপাতালের মতো জায়গায় সাধারণ মানুষ গাড়ি নিয়ে পৌঁছয়। ভিড় জমে যায় সর্বত্র। অথচ টিকা নেই সেখানে। যাঁদের বয়স ৪৪-এর বেশি, শুধু তাঁদের প্রতিষেধক দিতে বলা হয়। কিন্তু ১৮-৪৪ বছর বয়সীদের নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। যাঁদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়া হচ্ছিল তাঁদেরই দেওয়া হয়, যে তালিকা প্রশাসনের অনুমোদন করা। কিছু ক্ষেত্রে এ দিন ১৮-৪৪ বছর বয়সীরা কোনও বিশেষ বিভাগে পড়ছেন কি না দেখে নিয়ে টিকা দেওয়া হয়েছে।

অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে যে সমস্ত দল বা পেশার মানুষের টিকা দেওয়া হচ্ছিল এ দিনও সেই মতো চলে। সেই কারণে অনলাইনে যাঁরা ‘বুক’ করেছেন তাঁরা রাজ্যের সূচি অনুসারে অগ্রাধিকার দলের তালিকায় না থাকায় তাঁদের দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে জানানো হয়েছে। করোনা প্রতিষেধকের দায়িত্বে থাকা উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সংযুক্তা লিউ বলেন, ‘‘পর্যাপ্ত টিকা এবং সরকারি নির্দেশ না মেলা পর্যন্ত পুরনো পদ্ধতিতেই টিকাকরণ চলবে।’’ সর্বত্র সাধারণ উপভোক্তাদের অভিযোগ, বিষয়টি প্রশাসন স্পষ্ট করে না জানানোয় সমস্যা বেড়েছে।

একই ভাবে জলপাইগুড়িতেও সমস্যায় পড়েন আঠারোর্ধ্বেরা। সোমবার থেকে আঠারোর্ধ্ব সকলকেই টিকা দেওয়ার নির্দেশ ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। সেই অনুযায়ী, এ দিন জলপাইগুড়ির টিকাকরণ শিবিরগুলিতে গিয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু এখনও আঠারোর্ধ্বদের টিকা দেওয়া শুরু হয়নি বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁদের।

জলপাইগুড়ির ফার্মাসি কলেজের টিকাকরণ শিবিরে টিকা নিতে এসেছিলেন বছর উনিশের এক তরুণী। তিনি বলেন, ‘‘শুনেছিলাম আমাদের টিকা দেওয়া হবে। কিন্তু এখানে এসে হতাশ হলাম। টিকা কর্মীরা জানলেন, এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি নির্দেশিকা নাকি তাঁদের কাছে আসেনি।’’ এ দিন জেলার অন্য শিবিরগুলিতেও টিকা নিতে গিয়ে ফিরতে হয়েছে অনেককেই। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, ‘‘আঠারোর্ধ্বদের টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সরকারি শিবিরের পাশাপাশি আগ্রহী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতেও টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা চলছে। বুধবার বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে এই বিষয়ে কথা হবে।’’

এ দিন জেলা স্বাস্থ্য দফতরে টিকার নতুন পদ্ধতি নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ শিবির বসে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এখন থেকে জেলায় ‘অনলাইনে’ ২৫ শতাংশ এবং লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা উপভোক্তাদের ৭৫ শতাংশের টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। দফতরের দাবি, ‘অনলাইনে’ অনেকেই স্লট বুকিংয়ের মাধ্যমে টিকা নিতে পারছেন না।

COVID-19 coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy