লকডাউনে কাজ হারিয়ে সঙ্কটের জেরে বুনো আলু ও কচু খেয়ে দিনপাত করার খবর প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসল রাজ্য সরকারের খাদ্য দফতর। রবিবার প্রকাশিত খবরটির জেরে আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকের টটপাড়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা ১৫টি পরিবারের ৫৫ জন আদিবাসীর জন্য খাদ্যশস্য পাঠিয়ে দেয় দফতর।
এ দিন সন্ধেয় দফতরের তরফে আলিপুরদুয়ার-২ বিডিও এবং আলিপুরদুয়ার জেলার খাদ্য দফতরের আধিকারিকেরা। ব্লক প্রশাসন এবং পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে ওই পরিবারগুলির হাতে ত্রাণসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। এছাড়া তাঁদের রেশন কার্ড না থাকায় যে সমস্যা হচ্ছিল, সেটা সমাধান করা যায় কিনা সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করারও তাঁরা আশ্বাস দেন। জানা গিয়েছে, খাদ্য ভবনের নির্দেশেই এ দিন জেলা খাদ্য দফতরের কর্তারা ওই গ্রামে যান। আলিপুরদুয়ার ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অনুপ দাস বলেন, ‘‘আলিপুরদুয়ার ২ পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে ওই আদিবাসী দের থাকা খাওয়ার সমস্ত ব্যবস্থা কী ব্যবস্থা করা যায় সে ব্যাপারে আগামীকাল আলোচনায় বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
এর আগে অবশ্য এ দিন সকাল থেকেই ওই আদিবাসী পরিবারগুলিকে ত্রাণ দেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। বিভিন্ন সংগঠন গ্রাম পঞ্চায়েত এবং অনেকে ব্যক্তিগত ভাবেও এগিয়ে আসেন। সকালেই নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কয়েকজন সদস্য শিক্ষক ওই এলাকায় গিয়ে পরিবার পিছু পাঁচ কেজি করে চাল, বিস্কুট এবং বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দেন।
আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সভাধিপতি শীলা দাস সরকার বলেন, ‘‘লকডাউনের শুরু থেকে যেখানেই খাবারের সমস্যার কথা শুনেছি সেখানেই ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। গতকালই ১৫টি আদিবাসী পরিবারের সমস্যার কথা জানতে পেরেই এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানকে দ্রুত ত্রাণ দিতে বলা হয়েছে। গতকালই তাঁদের ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত তাঁদের আরও ত্রাণ সামগ্রী এবং প্রয়োজনীয় জিনিস দেওয়া হবে।’’
রাজ্যের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের উপদেষ্টামণ্ডলীর চেয়ারম্যান মৃদুল গোস্বামী বলেন, ‘‘ওই আদিবাসী পরিবারগুলি যাতে খাবারের সমস্যায় না ভোগে সেটা দেখা হবে। লকডাউন শেষ হলে তাঁদের কী ভাবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা যায় সেটাও দেখা হবে।’’
লকডাউন শুরু হওয়ার কয়েকদিন পর থেকে অর্ধাহারে দিন কাটছে ওঁদের। জঙ্গল থেকে আনা জংলি আলু এবং কচু সেদ্ধ খেয়ে কোনওমতে বেঁচে আছে ওই পরিবারগুলি। রবিবার আনন্দবাজার পত্রিকায় এই খবর বেরোতেই প্রশাসনের টনক নড়ে।