Advertisement
০২ মে ২০২৪
Coronavirus

খাবার খেয়ে খিদেও ফিরে এল বৃদ্ধের

গত কাল পেট ভরে ভাত খেয়েছেন। এ দিন কাছে যেতেই বলেন, ‘‘ভাত খাব।’’

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২০ ০৬:৩৯
Share: Save:

খাবার পেটে পড়তেই খিদেটা ফের ফিরে এসেছে।

মঙ্গলবার সকাল থেকে বারান্দার গ্রিলের দরজা ধরে ভাতের আশায় দাঁড়িয়ে থাকলেন বালুরঘাটের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের নেপালিপাড়ার ৯০ ছুঁইছুঁই বিমানকৃষ্ণ সরকার।

গত কাল পেট ভরে ভাত খেয়েছেন। এ দিন কাছে যেতেই বলেন, ‘‘ভাত খাব।’’ ঠিক দুপুর ১২টায় খাবার নিয়ে হাজির হলেন যুব তৃণমূলের ওয়ার্ড সভাপতি বাবাই দেব। মেঝেতে শালপাতায় ভরা ভাত, ডাল, সজনে আলুর তরকারি খেলেন তিনি।

সোমবার নোংরা ঘরের মেঝের এক কোণে পড়ে থাকা অসহায়, অভুক্ত ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করেন তৃণমূলের যুব ও ছাত্ররা।

ঘরবাড়ি সাফাই করে তাঁর চুল-দাড়ি কাটিয়ে স্নান করিয়ে নতুন পোশাক পরানো হয়। তাঁকে ভাত খাওয়ানোর পাশাপাশি লকডাউন চলাকালীন দু’বেলা খাবার ও জলের বন্দোবস্ত করা হবে বলে সকলে কথা দিয়ে যান।

এ দিন তাঁকে রাতের খাবারও পৌঁছে দেওয়া হবে বলে বৃদ্ধকে বলে যান বাবাই। আশ্বস্ত হন ওই বৃদ্ধ প্রাক্তন শিক্ষক।

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাশ বিমানবাবু চাকরি না পেয়ে বালুরঘাটের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে অস্হায়ী শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। চাকরি চলে গেলে তিনি শহরের বুড়াকালী মন্দিরে জোগাড়ের কাজ করে দু’বেলা খাবারের ব্যবস্হা করেন। তত দিনে একমাত্র ছেলেকে নিয়ে স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন।

নেপালিপাড়ার গলির ধারে বৃদ্ধের একতলা ছোট্ট ও জীর্ণ পাকা বাড়ির সামনেই এক আত্মীয়ের তিনতলা বাড়ি।

বৃদ্ধ জানান, কালীমন্দিরে কাজ করার সময় অন্নভোগে দু’বেলা চলে যেত। কাজ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলার পরে প্রতিবেশি ও বাড়ির সামনের ওই আত্মীয় মাঝেমধ্যে খাবার দিতেন। কিন্তু তাঁরা আর কত দিন টানবেন? বৃ্দ্ধের কন্ঠে হতাশার সুর। তাই অশক্ত শরীর নিয়েও কোনও মতে হেঁটে বুড়াকালী মন্দিরে গিয়ে অন্নভোগে একবেলা খাবারের ব্যবস্থা হচ্ছিল।

কিন্তু লকডাউনে কালীমন্দিরে অন্নভোগ বন্ধ হওয়ায় তিনি বিপাকে পড়েন। রাস্তায় পড়ে গিয়ে হাত-পা কেটে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।

এ দিন ওই বৃদ্ধ বলেন, ‘‘৩০ বছর আগে ছেলেকে নিয়ে স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে চলে যান। তার পর থেকে ওদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। আইসিডিএস কর্মী স্ত্রী এই জেলাতেই আছেন বলে শুনেছি। ছেলেটা মানসিক ভাবে অসুস্থ।’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেনআপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE