Advertisement
E-Paper

ইদেও ফেরা হল না ঘরে

করোনা ভাইরাসের প্রভাব পড়েছে ইদেও। বাজারে তেমন ভিড় নেই। কোলাহল নেই। রাস্তায় মানুষের সংখ্যা খুই কম।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২০ ০৩:৫২
পথ-সংসার: রবিবার ময়নাগুড়ি ইন্দিরা মোড়ে পরিযায়ী শ্রমিকের একটি দল। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

পথ-সংসার: রবিবার ময়নাগুড়ি ইন্দিরা মোড়ে পরিযায়ী শ্রমিকের একটি দল। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনের কথা শুনে কিছুটা আশা তৈরি হয়েছিল ওঁদের মনে। কয়েকদিন এদিক ওদিক ঘুরে বুঝতে পেরেছিলেন, এবারে আর ইদে হয়তো বাড়ি ফেরা হবে না। অবশেষে সেই আশঙ্কাই সত্যি হল আয়ুব, সহিদুল, ফিরদৌসদের। কোচবিহারের ওই পরিযায়ী শ্রমিকেরা রয়েছেন উত্তরপ্রদেশের নয়ডায়৷ মন খারাপ ওঁদের। আয়ুব বললেন, “শুধু বাড়ির কথাই মনে হচ্ছে। কয়েক’শ কিলোমিটার দূরে বসে থাকতে আর ভাল লাগছে না। ইদে এবারে প্রিয়জনদের সঙ্গে দেখা করতে পারব না, তা ভাবিনি। এই ইদ সারা জীবন মনে থাকবে।”

করোনা ভাইরাসের প্রভাব পড়েছে ইদেও। বাজারে তেমন ভিড় নেই। কোলাহল নেই। রাস্তায় মানুষের সংখ্যা খুই কম। সে সব কিছুকেই ছাপিয়ে গিয়েছে প্রিয়জনদের কাছে না পাওয়া। বছরের পর বছর ধরেই নয়ডায় কাজ করেন দিনহাটার নয়ারহাটের আয়ুব আলি। শুধু আয়ুব আলি নন, জেলার এমন হাজার হাজার মানুষ রুটি-রুজির টানে কোচবিহার থেকে পাড়ি দিয়েছেন ভিনরাজ্যে। ওঁদের অনেকেই আর ফিরতে পারেননি। আয়ুব জানান, তিনি কয়েক দফায় অনলাইনে আবেদনের পরে সাড়া না পেয়ে অবশেষে কোনওভাবে টাকা জুগিয়ে ট্রেনের টিকিট কেটেছেন। সেই টিকিট আগামী ১৭ জুনের। আরও অন্তত ২৩ দিন অপেক্ষা করতে হবে তাঁকে। তিনি বলেন, “দিনহাটার বাড়িতে দুই সন্তান, বাবা-মা রয়েছেন। তাঁদের ছেড়ে থাকতে মন চাইছে না।” তিনি আরও বলেন, “ঘরে এক মুঠো চাল নিয়ে টানাটানি চলছে। আগামী তেইশ দিন কী করে খাবার জোগাড় করব তা ভাবতেই ভয় পাচ্ছি। আসলে আমাদের পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই।” সেখানেই তাঁর প্রতিবেশী ওকরবাড়ির বাসিন্দা সহিদুল আলি। তিনি বলেন, “এভাবে বেঁচে থাকা যায় না। আমাদের কথা কেউ তো ভাবুক।”

নয়ডাতেই থাকেন কোচবিহারের আরেক বাসিন্দা ফিরদৌস আলি। অনেকদিন ধরেই বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন তিনি। শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনের জন্য আবেদনও করেছেন। কিন্তু এখনও নির্দিষ্ট করে তাঁকে কিছু জানানো হয়নি। শুধু অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে।

ফিরদৌস বললেন, “এই সময় সবার সঙ্গে মিলেমিশে আনন্দ করব ভেবেছিলাম। কিছুই হল না। ইদে বাড়ি ফেরাই হল না।” দিনকয়েক ধরে বেশ কিছু পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ি ফিরেছেন। তাঁদের কেউ কোয়রান্টিনে রয়েছেন, কেউ হোম কোয়রান্টিনে। তাঁদের একজনের কথায়, “বাড়ির কাছে এসেও বাড়ি ফিরতে পারলাম না। এই কষ্ট থেকেই যাচ্ছে। কিছু করারও নেই। ভাইরাসের সঙ্গে তো লড়াই করতেই হবে।”

Coochbehar MIgrant Workers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy