Advertisement
E-Paper

মেয়ের মৃত্যুর বিচার চেয়ে ভোটের প্রচারে বাবা

এ বারের পুর নির্বাচনে সরাসরি প্রার্থী হওয়ারই প্রস্তাব এসেছিল মেয়েটির মায়ের কাছে৷ সংরক্ষিত আসন হওয়ার জন্য প্রয়োজন ছিল শংসাপত্রের৷ তা না থাকায় তিনি প্রার্থী হতে পারেননি৷ তবে মেয়েটির বাবা কিন্তু সিপিএমের হয়ে প্রচারে নেমেছেন৷

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৭ ০২:২৫
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সে দিনটি এখনও ভুলতে পারেননি ধূপগুড়ির মানুষ। ২০১৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর। শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে একটি সালিশি সভা বসেছিল। সেখানে বাবার সম্মান রক্ষা করতে এগিয়ে গিয়েছিল এক কিশোরী। তারপরে তাকেও নির্যাতনের মনুখে পড়তে হয়। সালিশি সভা ছেড়ে ছুটে বেরিয়ে যায় সে। পরের দিন বাড়ির সামান্য দূরে রেললাইনের ধার থেকে তার বিবস্ত্র দেহ উদ্ধার হয়। পুরভোটে সে কথাই আবার শুনছে ধূপগুড়ি। সেই কিশোরীর বাবাই সেই কাহিনির কথা বলছেন। প্রচার করছেন।

এ বারের পুর নির্বাচনে সরাসরি প্রার্থী হওয়ারই প্রস্তাব এসেছিল মেয়েটির মায়ের কাছে৷ সংরক্ষিত আসন হওয়ার জন্য প্রয়োজন ছিল শংসাপত্রের৷ তা না থাকায় তিনি প্রার্থী হতে পারেননি৷ তবে মেয়েটির বাবা কিন্তু সিপিএমের হয়ে প্রচারে নেমেছেন৷

তিনি জানালেন, এক সময় তাঁরা তৃণমূলের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন৷ মাঝে মধ্যে মিটিং-মিছিলেও যেতেন৷ কিন্তু ওই দিনটার পরে ধীরে ধীরে শাসকদলের সঙ্গে তাঁদের দূরত্ব তৈরি হয়েছে৷ শ্বশুরবাড়িতে বসে তিনি বলছিলেন, ‘‘আমার মেয়ের সঙ্গে যখন এত বড় ঘটনা ঘটল, তখন শাসকদলের কাউকে পাশে পাইনি৷ বরং সিপিএমই আমার পাশে ছিল৷’’ তিনি জানান, এখনও বিমান বসু ধূপগুড়িতে এলে তাঁর খোঁজ করেন৷ কলকাতায় গেলে সূর্যকান্ত মিশ্রর সঙ্গেও তাঁর দেখা হয়৷ তিনি নিয়মিত পার্টি অফিসেও যান৷

মধ্যপাড়ায় বাড়ি ছিল তাঁদের। কিশোরীর মৃত্যুর পরে তার বাবা-মা কিশোরী আরও দুই ভাইবোনকে নিয়ে থাকছেন পাশের পাড়া উত্তর বোরাগাড়িতে কিশোরীর মামাবাড়িতে৷ গোয়াল ঘরটাকেই নিজেদের থাকার ঘর করে নিয়েছেন তাঁরা৷

কিন্তু বাড়ি ছেড়ে শ্বশুর বাড়িতে কেন? বললেন, ‘‘ভয়ে৷ ওরা মেয়েটাকে যে ভাবে মেরেছে, আমাকেও সে ভাবে মারতে পারে৷ তাই বাড়ি যাই না৷’’ কিশোরীর মায়ের কথায়, ‘‘অভিযুক্তদের প্রত্যেকরই বাড়ি তো ওই এলাকাতেই৷ সে জন্যই অনেকদিন ধরে বাড়িটা বিক্রি করে দিতে চাইছি৷ কিন্তু খদ্দের পাচ্ছি না৷’’

উত্তর বোরাগাড়ির যে বাড়িতে তাঁরা রয়েছেন, তার থেকে পাঁচশো মিটার দূরেই রেল লাইন৷ ট্রেনের আওয়াজ শুনলেই আজও বুকের ভিতরটা ছ্যাঁত করে ওঠে কিশোরীর বাবা-মায়ের৷ বাবা বললেন, ‘‘মেয়েটার কোনও দোষ ছিল না৷ শুধু সালিশি সভায় আমাকে মারধর করার প্রতিবাদ করেছিল৷ তার জন্য তাকে ওভাবে মেরে ফেলা হল, আজও ভাবতে পারি না৷’’

কিন্তু ভোটে সিপিএম জিতলে তাঁর কী লাভ হবে? কিশোরীর বাবার স্পষ্ট বক্তব্য, ‘‘এখন যাঁরা ক্ষমতায় রয়েছেন, তারা থেকে গেলে আমার মেয়ে বিচার পাবে না। মেয়ের বিচারের জন্য আমি এদের পরিবর্তন চাই৷’’

তবে ধূপগুড়ি পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী নমিতা রায় বলেন, ওই কিশোরীর কী ভাবে মৃত্যু হয়েছে তা আইন-আদালতই বলবে৷ কিন্তু কিশোরীর বাবা যেভাবে মেয়ের কথা বলে সিপিএমের হয়ে প্রচার চালাচ্ছেন তাকে সমর্থন করছেন না এলাকার মানুষ৷

CPM সিপিএম ধূপগুড়ি Election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy