Advertisement
০৮ মে ২০২৪

নদী থেকে বাপ্পার দেহ

প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বাপ্পার দু’হাতে দাগ রয়েছে। সে দাগ ধস্তাধস্তির বলেই অনুমান। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে বাপ্পার ময়নাতদন্ত হয়। সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে দেহাংশের নমুনাও।

শোকস্তব্ধ: বাড়িতে এল কফিনবন্দি বাপ্পার মরদেহ। শোকে বিহ্বল বাপ্পার বাবাকে সান্ত্বনা পরিজনদের। নিজস্ব চিত্র

শোকস্তব্ধ: বাড়িতে এল কফিনবন্দি বাপ্পার মরদেহ। শোকে বিহ্বল বাপ্পার বাবাকে সান্ত্বনা পরিজনদের। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি ও মেটেলি শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৮ ০৪:৩৯
Share: Save:

নিখোঁজ হওয়ার ১০ দিন পর শুক্রবার উদ্ধার হল জলপাইগুড়ি শহরের বাসিন্দা তথা জেলা ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বাপ্পা সাহার মৃতদেহ। জলে ডুবেই বাপ্পার মৃত্যু হয়েছে বলে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জেনেছে পুলিশ। বাপ্পার শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণ মদও মিলেছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে নদীর জলে পড়ে গিয়ে বাপ্পার মৃত্যু হয়েছে, না কি তাঁকে ধাক্কা দেওয়া হয়েছিল, তার তদন্ত চলছে।

ডুযার্সের মূর্তি নদীর পাড়ে যেখানে সবান্ধব পিকনিক চলছিল বাপ্পাদের, তার ৫০০ মিটারের মধ্যে নদী থেকে মিলেছে বাপ্পার দেহ। নদীতে জল কমে যাওয়ার পর শুক্রবার ভোর থেকে তল্লাশি শুরু হয়। কৃত্রিম বাঁধ দিয়ে জল আটকে পে-লোডার দিয়ে তল্লাশি চলে। মূর্তি সেতুর নীচে একটি স্তম্ভের পাশের গর্তে মেলে বাপ্পার দেহ।

প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বাপ্পার দু’হাতে দাগ রয়েছে। সে দাগ ধস্তাধস্তির বলেই অনুমান। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে বাপ্পার ময়নাতদন্ত হয়। সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে দেহাংশের নমুনাও। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেছেন, “আমরা আশাবাদী, দ্রুত এই মৃত্যুরহস্য ভেদ করা যাবে।”

গত বৃহস্পতিবার আদালতে যে প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছিল পুলিশ, তাতে উল্লেখ করা হয়, বন্ধু আনন্দ সরকারের নির্দেশে প্রতীক দাম বাপ্পাকে নদীতে ধাক্কা দেন। যদিও ১০ জুলাই মূর্তিতে বাপ্পা তলিয়ে যান বলে দাবি করেন বন্ধু আনন্দ এবং প্রতীক। তাঁরা নদীর পাড়ে পিকনিক করতে গিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন আনন্দের স্ত্রী এবং মেয়ে। আনন্দদের দাবি উড়িয়ে দিয়ে বাপ্পার পরিবার অভিযোগ করে যে, বাপ্পাকে খুন করা হয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে দুই বন্ধু সহ গাড়ির চালককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃত আনন্দের আইনজীবী শান্তনু ভৌমিক এদিনও বলেছেন, “বাপ্পার মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক! আনন্দদের ফাঁসানো আরও দুর্ভাগ্যের! আনন্দেরা বাপ্পাকে জলে নামতে বারণ করেছিল। পুলিশের দাবি যে ভিত্তিহীন, আদালতেই তা প্রমাণ হবে।”

সপ্তাহখানেক ধরে মূর্তি নদীতে তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। নামানো হয় কুনকি হাতিও। পুলিশ এবং বন দফতর সূত্রেই জানা যায়, তল্লাশির সময় দেখা যায় যে, অবাধে বালি-পাথর তোলার ফলে নদীগর্ভের কিছু জায়গায় গভীরতা বেড়েছে। স্তম্ভের পাশের গর্ত বালি-পাথর তোলার কারণেই কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতদের জেরা করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই শুক্রবার তল্লাশি অভিযানে গতি আনা হয়।

শুক্রবার বাপ্পা সাহার দেহ প্রথমে জেলা ক্রীড়া সংস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁর দুই ক্লাব ঘুরে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় মাসকলাইবাড়ি শ্মশানে। সেখানেই শেষকৃত্য হয় উঠতি ক্রিকেটারের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Bappa Saha River
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE