মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পরে জাল ওষুধ রুখতে অভিযানে নামতে চলেছে দার্জিলিং জেলা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতর। দু’দিন আগে, শুক্রবার দার্জিলিঙের জেলাশাসক প্রীতি গোয়েল জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দ্রুত ওষুধের দোকানগুলিতে পরিদর্শন এবং জাল ওষুধ রুখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে জাল ওষুধের তালিকাও টাঙাতে বলা হচ্ছে ওষুধের দোকানগুলিতে।
তবে সমস্যা হচ্ছে ওষুধের দোকানগুলি ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের অধীন। তাদের কাজকর্ম জেলা স্বাস্থ্য দফতরের নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। তাই সেই কাজ সরাসরি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে দেখা হয় না। তবে মুখ্যমন্ত্রী উত্তরকন্যার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকদের বিষয়টি দেখতে নির্দেশ দেন। দোকানে গিয়ে গুজরাত, উত্তরপ্রদেশের কয়েকটি সংস্থার তৈরি ৫৫টি জাল ওষুধের তালিকা টাঙাতে বলেন। হাসপাতালগুলিতে যাতে চিকিৎসকেরা ওই ওষুধ না দেন, তা দেখতেও বলেন। বাসিন্দারা যাতে সচেতন হন, সে জন্য ব্যবস্থা নিতে নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তার পরেই তৎপর হয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। ঠিক হয়েছে অভিযানে নামার আগে দ্রুত ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের সঙ্গে বৈঠকে বসা হবে। তাদের সঙ্গে আলোচনার পরে জেলা প্রশাসন এবং জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফেও ওষুধের দোকানগুলিতে পরিদর্শন শুরু হয়ে যাবে।
দার্জিলিঙের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তুলসী প্রামাণিক বলেন, ‘‘জেলাশাসকের উপস্থিতিতে ইতিমধ্যে বৈঠক হয়েছে। ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের সঙ্গে দ্রুত বৈঠক করা হবে। তার পরে প্রশাসনকে নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফেও ওষুধের দোকানগুলিতে পরিদর্শন শুরু হবে।’’ তিনি জানান, হাসপাতালগুলিতেও ওই সব ওষুধ যাতে ব্যবহার করা না হয়, তা দেখতে ইতিমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর তথা উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক শুভময় সান্যাল বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই জেলাগুলিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই মতো তাদের তরফে ওষুধের দোকানগুলিতেও জাল ওষুধের তালিকা টাঙাতে বলা হয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, জেলা স্বাস্থ্য দফতর, ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের জেলা আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে কাজ করবে।
শিলিগুড়িতে জাল ওষুধের রমরমা কারবার নিয়ে এর আগেও ওষুধ বিক্রেতাদের একাংশ ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। তা রুখতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন। ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগকে নিয়মিত নজরদারির জন্যও সরব হন তাঁরা। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতি খুব একটা বদলায়নি বলে অভিযোগ। বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের শিলিগুড়ি শাখার তরফে মনোজ তেওয়ারি বলেন, ‘‘জাল ওষুধ, খারাপ মানের ওষুধ নিয়ে আমরাও অভিযোগ তুলেছি। সম্প্রতি ৫৫টি জাল ওষুধের তালিকা দোকানে টাঙানোর জন্য ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগ জানিয়েছে। দোকানগুলিতে ওই তালিকা টাঙাতে বলা হচ্ছে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)