শিবদিঘির পরে এ বার সাগরদিঘি। কোচবিহারের ওই দুই দিঘিতে মোহন (কচ্ছপ) মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বুধবার সকালে সাগরদিঘির তীরে একটি কচ্ছপকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। কয়েক দিন আগেও সাগরদিঘির ঘাটে একটি কচ্ছপের মৃত্যু হয়েছিল। শুধু নভেম্বর মাসেই বাণেশ্বরের শিবদিঘিতে পাঁচটি কচ্ছপের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। পরিবেশপ্রেমীদের অভিযোগ, জল বা মাটি দূষণ থেকেই এমন ঘটনা ঘটছে। শিবদিঘিতে কচ্ছপের খাবার ঠিকমতো দেওয়া হয় না বলেও অভিযোগ উঠেছে। কোচবিহারের সদর মহকুমাশাসক কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায় কয়েক দিন আগেই শিবদিঘি পরিদর্শনে যান। শীতের সময়ে দিঘির পুরো জলের উষ্ণতা সঠিক রাখতে ওই দিঘির জল কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পরিবেশপ্রেমী সংস্থা ন্যাস গ্রুপের সম্পাদক অরূপ গুহ বলেন, ‘‘সাগরদিঘির জল দূষণের জেরেই এমন ঘটনা ঘটছে। অনেক দিন ধরেই আমরা এ নিয়ে বলছি। কিন্তু জল শোধনে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। জলজ প্রাণীর প্রাণ ওষ্ঠাগত। সাগরদিঘির চারপাশও জলজ প্রাণীর উপযুক্ত করে তুলতে হবে।’’
বাণেশ্বরের শিবদিঘিতে দেড় শতাধিক মোহন রয়েছে বলে কয়েক বছর আগে দাবি করা হয়েছিল। ওই দিঘি ও মোহনদের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড। ওই দিঘি থেকে মোহন ছড়িয়ে পড়েছে বাণেশ্বর এলাকার অন্য নানা জলাশয়েও। সবমিলিয়ে সেই সংখ্যা এক হাজারের কম নয় বলে মোহন রক্ষা কমিটির দাবি। অভিযোগ, শিবদিঘিতে মোহনদের দেখভাল ঠিকমতো করা হয় না। খাবারও ঠিকমতো দেওয়া হচ্ছে না। এ ছাড়া মোহনরা প্ৰতিনিয়ত রাজ্য সড়ক পারাপার করে। তখন গাড়ি চাপা পড়ে মৃত্য়ুরও ঘটনা ঘটেছে। গত বছর অসুস্থ হয়ে ও দুর্ঘটনায় বেশ কিছু মোহনের মৃত্যু হয়। তা নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে বানেশ্বর। স্থানীয় বাসিন্দারা বনধ পর্যন্ত পালন করেন। তার পরে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এ বারে ফের অসুস্থ হয়ে মোহনের মৃত্যু শুরু হওয়ায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে।
মোহন রক্ষা কমিটির সম্পাদক রঞ্জন শীল বলেন, ‘‘নভেম্বর মাসেই পাঁচটি মোহনের মৃত্যু হয়েছে। আরও পাঁচটি মোহন চিকিৎসাধীন। স্বাভাবিক ভাবেই তা নিয়ে প্ৰত্যেকে উদ্বেগে রয়েছি। মোহনদের রক্ষা করতে প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এসে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এর আগে মাটি দূষণের কথাও বলা হয়েছিল। সেটাও পরীক্ষা করে দেখা হোক।’’ সাগরদিঘিতেও প্রচুর কচ্ছপের বাস। সেই কচ্ছপগুলির অবস্থাও ভাল নয় বলে অভিযোগ। পর পর দু’টি কচ্ছপের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)