মা: ছেলের মৃত্যুর পরে খাওয়া বন্ধ পার্বতীর। নিজস্ব চিত্র
একদিকে সন্তান হারানোর শোক। অন্য দিকে সন্তানকে খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্তের গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ। এই দুইয়ের জেরে কার্যত খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন তপসিখাতার নিহত তৃণমূল কর্মী তুষার বর্মণের মা পার্বতীদেবী। গত ১১ দিন ধরে কেবলমাত্র গ্লুকোজ মেশানো জলের উপরেই রয়েছেন তিনি। কিন্তু এভাবে কত দিন তাঁকে সুস্থ রাখা যাবে, তা নিয়েই এখন চিন্তায় পরিবারের লোকেরা।
তুষারের বাবা তৃণমূলের প্রাক্তন বুথ সভাপতি তরুণচন্দ্র বর্মণ বছর কয়েক আগে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান। গত ২২ জানুয়ারি তপসিখাতায় খুন হন তৃণমূল কর্মী তুষার বর্মণ। জয় বাংলা হাটে একমাত্র ছেলে তুষার খুন হতে ভেঙে পড়েছেন পার্বতী। খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।
তুষারের জ্যাঠামশাই অরুণচন্দ্র বর্মণ বলেন, “গত ১১ দিন ধরে তুষারের মা শুধু ছেলের কথা বলে কেঁদেই চলছেন। সেই সঙ্গে মাঝেমধ্যে ছেলের খুনিদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। অনেক বুঝিয়েও তাঁকে আমরা কিছুই খাওয়াতে পারছি না। মাঝেমধ্যে জোর করে একটু গ্লুকোজ মেশানো জল খাওয়ানো হচ্ছে। ব্যস, ওইটুকুই। এ ভাবে ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছেন উনি। এখন ভাবছি, বাড়িতেই স্যালাইনের ব্যবস্থা করব। সে জন্য এক চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে৷”
স্থানীয় পরোরপাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান শম্ভু রায়ের দলবলের বিরুদ্ধে তুষারকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল। তুষারের পরিবারের লোকেদের অভিযোগ ছিল, জয় বাংলা হাটে শম্ভুরা প্রথমে তুষারকে মারধর করে। তারপর শম্ভু কোমর থেকে রিভলভার বের করে তুষারের মাথা লক্ষ করে গুলি চালিয়ে দেন বলে অভিযোগ। ঘটনার পর অভিযুক্ত তৃণমূলেরই গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সোনা রায় গ্রেফতার হলেও শম্ভু ও বাকিরা পলাতক।
তুষারের বাড়ির লোকেদের কথায়, এর মধ্যেই তৃণমূলের জেলা শীর্ষ নেতারা বাড়িতে এসে এই ঘটনায় দোষীদের কড়া শাস্তির ব্যাপারে সাধ্যমতো চেষ্টার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু পুলিশ তো এখনও পর্যন্ত মূল অভিযুক্তকে ধরতেই পারছে না। তুষারের জ্যাঠামশাই অরুণবাবু বলেন, “মূল অভিযুক্ত ধরা পড়লে হয়তো তুষারের মাকে আমরা আর একটু বোঝাতে পারতাম!’’
অভিযুক্তদের গ্রেফতারের বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কিছু না বললেও, তৃণমূলের নেতারা এ দিনও দাবি করেন, অভিযুক্তদের গ্রেফতারের সব রকম চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ ও গোয়েন্দারা। তৃণমূল বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “তুষারের মায়ের সুস্থ থাকাটাও খুবই জরুরী। তাই আমাদের দলের স্থানীয় নেতাদেরকেও বলেছি, ওঁকে বোঝাতে, যাতে উনি ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy