প্রতীকী ছবি
দুই বউমা করোনায় আক্রান্ত। সঙ্গে বছর বারোর নাতনিও। খবরটা মালবাজার পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আসে সোমবার সকালে। তবে তাঁর নিজের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। কিন্তু বাড়ির তিনজনের সংক্রমণের খবরে সকাল থেকেই মুষড়ে পড়েন শাশুড়ি। এরপর দুপুর নাগাদ স্বাস্থ্য দফতর থেকে অ্যাম্বুল্যান্স এসে আক্রান্ত তিনজনকেই কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রতিবেশীরা জানান, অ্যাম্বুল্যান্স চলে যাওয়ার পরই কান্নাকাটি শুরু করেন ওই বৃদ্ধা। তার পরেই আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন। পাশের বাড়িতে এক আত্মীয় ও অন্য প্রতিবেশীরা এসে তাঁকে মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই মারা যান বছর ষাটেকের ওই বৃদ্ধা। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা গিয়েছেন।
এ দিন ঘটে মালবাজারের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে বাজার রোড লাগোয়া এলাকায় এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পুর প্রশাসক বোর্ডের প্রধান স্বপন সাহা এই মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক বলে জানিয়েছেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, গত রবিবারই ওই এলাকায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে এক মহিলা মারা যান। তার পর থেকেই ওই এলাকাকে কন্টেনমেন্ট বলে ঘোষণা করা হয়। সেই পরিস্থিতিতেই এ দিন এই ঘটনা। অন্যদিকে, এ দিনই ওদলাবাড়ির এক ব্যক্তি করোনা সংক্রমণে মারা যান। কিছুদিন আগে করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে তাঁর। শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার কোভিড হাসপাতালে সোমবার দুপুরে তিনি মারা যান বলে জানান মালবাজারের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রিয়াংকু জানা।
এ দিন মালবাজার পুর এলাকার করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এ দিন সকালে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১৮ জনের পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। এঁদের মধ্যে ১৬ জন পুর এলাকার বাসিন্দা। রিপোর্ট আসার আগেই রবিবার পুর প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান স্বপন সাহা বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন ও ক্লাবগুলির সম্মিলিত অনুরোধে ফের সাতদিনের জন্যে লকডাউন ঘোষণা করেন। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মালবাজারের করোনা পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক জানিয়ে সোমবার ভোর ৬টা থেকে সাতদিনের জন্যে লকডাউনের নির্দেশ পাঠান। পুরসভার পাশাপাশি সক্রিয় হয় মালবাজার থানাও। পুলিশের উদ্যোগে শহর জুড়ে লকডাউনের সিদ্ধান্ত ঘোষিত হয়।
তবে মালবাজারের বিদায়ী বিরোধী দলনেতা তথা ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর সুপ্রতিম সরকার বলেন, “মালবাজারের স্বার্থে পুর প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান লকডাউনের সিদ্ধান্ত রবিবারে নিলেও সেখানে আমাদের তিনি বিষয়টি জানাননি। আলোচনা-সাপেক্ষে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিলে পরিস্থিতির মোকাবিলা সহজ হবে বলেই মনে করি।” স্বপন সাহা বলেন, “আমি জনমানসের ইচ্ছা বুঝেই দ্রুত লকডাউন বাড়িয়েছি এবং সেই সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিল তার প্রমাণ জেলাশাসকের লকডাউনের নতুন নির্দেশ।”
পুর প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান স্বপন সাহার পরিবারের দাদা ও ভাইপোও আক্রান্ত। তিনি বলেন, “করোনা যাতে অবিলম্বে নিয়ন্ত্রণ করা যায় সেজন্যে আমি করজোড়ে পুর বাসিন্দাদের বাড়িতে থাকতে অনুরোধ করছি, প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপও গ্রহণ করব।” এদিকে ওদলাবাড়িতে এদিন ৮ জন পজিটিভ হয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy