Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Dengue

ডেঙ্গি নিয়ে ক্ষুব্ধ শহর

৪ নম্বর ওয়ার্ডে ইতিমধ্যেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। ওই ওয়ার্ডের বাম কাউন্সিলর পরিমল মিত্রের অভিযোগ, জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে রোগীরা ঠিক মতো পরিষেবা পাচ্ছেন না।

অসুস্থ নিখিল সহানির কাছে গৌতম দেব। নিজস্ব চিত্র

অসুস্থ নিখিল সহানির কাছে গৌতম দেব। নিজস্ব চিত্র

সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:০৭
Share: Save:

মশা যখন কামড়ায়, কে কোন দলের নেতা তা বিচার করে না। রোগও দলমত মেনে হয় না। দু দিন আগে শিলিগুড়ি পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে এই কথাগুলো বলেই ডেঙ্গি পরিস্থিতি সামাল দিতে পুরসভাকে আরও তৎপর হওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন তৃণমূল কাউন্সিলর নান্টু পাল।

সেবক রোডের একটি নার্সিংহোমে শনিবার ভর্তি করানো হল নান্টুবাবুর দলের জেলা কমিটির নেতা ডেঙ্গি আক্রান্ত সৌমিত্র কুণ্ডুকে। গত তিন দিন ধরে জ্বরে ভুগছেন তিনি। র‌্যাপিড কার্ড টেস্টে তাঁর শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। শুক্রবার রাতে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁর দলেরই কাউন্সিলর ও ৩ নম্বর বরো কমিটির চেয়ারম্যান নিখিল সহানিকে। এ দিন দু’জনের রক্তের নমুনাই ম্যাক এলাইজা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর সুজয় ঘটক এবং জ্বরে আক্রান্ত তাঁর ১৫ বছরের মেয়েকে নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। র‌্যাপিড কার্ড টেস্টে এনএসওয়ান পরীক্ষায় সুজয়বাবুর শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেও ম্যাক এলাইজা পরীক্ষায় মেলেনি বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। তবে জ্বর, প্লেটলেট কমে যাওয়া, শরীরে ব্যথার মতো উপসর্গ দেখে চিকিৎসকরা ডেঙ্গি বলেই মনে করছেন। দিন কয়েক আগেই জ্বরে ভুগেছেন বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকারও।


শিলিগুড়ি হাসপাতালে জ্বরের রোগী। ছবি: স্বরূপ সরকার

শিলিগুড়ি শহরে ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে পুরসভায় বিরোধী তৃণমূল কাউন্সিলররা সরব হন। আগাম সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় রোগ প্রতিরোধ যথাযথ ভাবে করা যায়নি বলে অভিযোগ তোলেন নান্টু পাল, রঞ্জন সরকাররা। শহরের যে ওয়ার্ডগুলোতে ডেঙ্গি মারাত্মক ভাবে ছড়িয়েছে তার মধ্যে নান্টুবাবুর ১২ নম্বর ওয়ার্ড, সুজয়বাবুর ১৬ নম্বর ওয়ার্ড-ও রয়েছে। গত ৩১ অগস্ট বোর্ড সভায় তিনি জানান, তাঁর ধারণা অন্তত দু’হাজার মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। পুরসভা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখুক। জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন শিলিগুড়ির অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। যিনি ডেঙ্গির নোডাল অফিসার পদে রয়েছেন।

৪ নম্বর ওয়ার্ডে ইতিমধ্যেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। ওই ওয়ার্ডের বাম কাউন্সিলর পরিমল মিত্রের অভিযোগ, জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে রোগীরা ঠিক মতো পরিষেবা পাচ্ছেন না। তাঁর ওয়ার্ডে যে দু’জন মারা গিয়েছেন শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তাঁরা। তাঁদের চিকিৎসা নিয়ে গাফিলতি রয়েছে।

মেয়র অশোক ভট্টাচার্য জানান, পুরসভার তরফে সচেতনতা প্রচার, বাড়ি বাড়ি সমীক্ষার কাজ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে আলোচনা করেই সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে অবশ্য সম্প্রতি পুর কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়, বাড়ি বাড়ি ঢুকে সমীক্ষার কাজ ঠিক মতো করছেন না কর্মীরা। বাড়ির ভিতরে ঢুকে কোথাও জমা জল রয়েছে কি না নজরদারি করা ও বাসিন্দাদের সচেতন করতে হবে তাঁদের। অথচ অধিকাংশ বাড়িতে তাঁরা ঢুকছেন না বলে অভিযোগ। এর পর পুরসভার তরফে স্বাস্থ্য কর্মীদেরও সতর্ক করা হয়। পাশাপাশি পরিচয়পত্র দেখালেও ওই স্বাস্থ্য কর্মীদের যারা বাড়িতে ঢুকতে দেবেন না তাঁদের নামে পুলিশে অভিযোগ জানানোরও নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE