Advertisement
E-Paper

ডেঙ্গি সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ শিলিগুড়িতে

ডেঙ্গি সংক্রমণ ঠেকাতে প্রকৃতির উপরেই ভরসা রাখছেন স্বাস্থ্য কর্তাদের একাংশ। তাঁরা মনে করছেন, জমিয়ে ঠান্ডা না পড়া পর্যন্ত শিলিগুড়িতে ডেঙ্গির সংক্রমণ চলবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৬ ০২:১১
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রোগীদের মশারির ব্যবস্থা নেই। — নিজস্ব চিত্র

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রোগীদের মশারির ব্যবস্থা নেই। — নিজস্ব চিত্র

ডেঙ্গি সংক্রমণ ঠেকাতে প্রকৃতির উপরেই ভরসা রাখছেন স্বাস্থ্য কর্তাদের একাংশ। তাঁরা মনে করছেন, জমিয়ে ঠান্ডা না পড়া পর্যন্ত শিলিগুড়িতে ডেঙ্গির সংক্রমণ চলবে।

সুভাষপল্লি, মহাবীরস্থান, ডিআই ফান্ড বাজার, ডাঙিপাড়া, ঝঙ্কারমোড়-সহ শিলিগুড়ি শহরের বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গির সংক্রমণ চলছেই। শহরের নার্সিংহোমগুলিতে ডেঙ্গি আক্রান্ত অনেকেরই চিকিৎসা চলছে। রোগী রয়েছে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও। এনএসওয়ান পরীক্ষায় তাদের অনেকের শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু মিললেও স্বাস্থ্য দফতর তা মানতে রাজি নয়। ম্যাক এলাইজা পরীক্ষায় ডেঙ্গির জীবাণু মিললে তবেই স্বাস্থ্য দফতর ডেঙ্গি বলে মানছে। মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের ভাই চন্দনবাবু ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে কলেজপাড়ার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন। এনএসওয়ান পজিটিভ হলেও ম্যাক এলাইজা পরীক্ষায় তাঁর দেহে ডেঙ্গির জীবাণু মেলেনি। সুস্থ হওয়ায় সোমবার নার্সিংহোম থেকে তাঁকে ছুটি দেওয়া হয়।

চিকিৎসকদের একাংশ জানান, শীত পড়লে সাধারণত ডেঙ্গির মতো রোগের প্রকোপ কমে আসে। ইতিমধ্যে ঠাণ্ডা পড়তে শুরুও করেছে। অথচ শিলিগুড়িতে তা সত্ত্বেও ডেঙ্গির প্রকোপ চলতে থাকায় উদ্বেগ বাড়ছে। দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত বিশ্বাস বলেন, ‘‘ঠান্ডা আর একটু বেশি হলে রোগের প্রকোপ কমবে বলে আশা করছি। এখন ঠান্ডা পড়লেও দিনের বেলা তাপমাত্রা বেশি থাকাতে তা ডেঙ্গির বাহক মশা জন্মাতে সহায়তা করছে।’’ সরকারি হিসাবে শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১০৫ হলেও বেসরকারি মতে সংখ্যাটা কযেক গুণ বেশি বলেই মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ।

সুভাষপল্লির দীনবন্ধু মিত্র সরণিতে বাড়ি বাড়ি ডেঙ্গির সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। ওই এলাকার দিব্যজ্যোতি কর্মকার ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। তাঁদের অ্যাপার্টমেন্টে আরও চার জন জ্বরে আক্রান্ত। তাঁদের এক জন জয়েন্দ্র নারায়ণ শীলের প্লেটলেট সংখ্যাও কমছে বলে পরিবারের লোকেরা উদ্বিগ্ন। জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিল এলাকার বাসিন্দা প্রদীপ কুমার কুণ্ডু। পরে আচমকা কিডনিতে সংক্রমণ হয়ে তিনি ২৩ অক্টোবর মারা যান। তবে প্রদীপবাবুর ডেঙ্গি হয়নি বলেই স্বাস্থ্য দফতর দাবি করেছে।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রদীপবাবুর স্ত্রী সুকৃতিদেবী এবং পুত্রবধূর সম্প্রতি জ্বর হয়েছিল। তবে তাঁরা এখন ভাল আছেন। জ্বরে ভুগছেন ওই এলাকার বাসিন্দা স্বপ্না ঘোষ, বিনা পালরা। বিনাদেবীর পরিবারের আরও দু জন জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিল। কয়েকদিন হল তারা সুস্থ হয়েছেন। পুরসভার বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকারের দাবি, ‘‘ডেঙ্গি ঠেকাতে পুরসভা তৎপর নয়। ওয়ার্ডগুলিতে মশা মারার তেল, এলাকার পরিষ্কার রাখতে ব্লিচিং কিছুই পর্যাপ্ত দেওয়া হচ্ছে না। তা নিয়ে আমরা আন্দোলনে নামারও সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’

শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র অশোকবাবু অবশ্য বিরোধীদের অভিয়োগ মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, ‘‘রাজ্যের মধ্যে শিলিগুড়ি পুরসভা ডেঙ্গির নিয়ন্ত্রণের কাজ ভাল করেছে। তাই বলে আমরা বসে থাকতেও চাই না। মশা মারতে বিভিন্ন এলাকায় ধোঁয়া ছড়ানো ,স্প্রে করার কাজ চলছে। ছট পুজোর জন্য দু’দিন কর্মীদের অনেকে অনুপস্থিত ছিলেন। মঙ্গলবার থেকে কাজে ফের জোর দেওয়া হবে।’’

শিলিগুড়ি পুরসভাকে ম্যাক এলাইজা পরীক্ষার যন্ত্র দেওয়ার জন্য রাজ্যের কাছে পুর কর্তৃপক্ষের তরফে আবেদন জানানো হয়েছে।

Siliguri Dengue
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy