দিগন্ত বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র
পড়শি থেকে পরিজন যখনই কেউ বিপদে পড়েছেন ডাক পড়েছে তাঁর। রাস্তায় পড়ে থাকা দুর্ঘটনাগ্রস্ত কোনও অজ্ঞাতপরিচয়কে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে, এগিয়ে আসতেন তিনি। এ ভাবেই ছোটবেলা থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে পাশে থাকার চেষ্টা করেন বালুরঘাটের দিগন্ত বিশ্বাস।
এ বার করোনা ভ্যাকসিন পরীক্ষায় ‘হিউম্যান ট্রায়ালে’ ভল্যান্টিয়ার হতে এগিয়ে এলেন তিনি। আইসিএমআর-এর মেল-এ সেই ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন দিগন্ত। সোশ্যাল মিডিয়ায় সে কথা লিখে তাঁর আবেদন যাতে সর্বোচ্চ স্তরে দ্রুত পৌঁছয় সেই বার্তাও দিয়েছেন বছর তেত্রিশের ওই যুবক।
দিগন্ত বলেন, ‘‘আমার বাবা বিকাশচন্দ্র বিশ্বাস অবসরপ্রাপ্ত হোমগার্ড। সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। তার পরে মনে হল, মানুষের জীবনের কোনও মূল্য নেই। যে কোনও সময়ে মারা যেতে পারে। কেউ নিজের জীবনকে মহৎ কাজে উৎসর্গ করতে পারে, একমাত্র তা হলেই তাঁর জীবন অমূল্য হয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘করোনা নিয়ে মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত। এখনই সময় ভাল কিছু কাজ করার। এই ভাবনা থেকেই আমার এই সিদ্ধান্ত।’’
দিগন্তের সাড়ে তিন মাসের ছেলে রয়েছে। তাঁর এমন ইচ্ছার কথা শোনার পরে স্বাভাবিক ভাবেই প্রথমে আপত্তি করেছিলেন তাঁর স্ত্রী, রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল মালবিকা। দিগন্ত বলেন, "স্ত্রীকে বিষয়টা বোঝানোর পরে অবশ্য রাজি হয়েছেন।" কিন্তু কী ভাবে হিউম্যান ট্রায়ালের জন্য নিজের নাম লেখাবেন, তা নিয়েই ভাবছেন তিনি।
আইসিএমআর সূত্রে খবর, করোনা ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়ালের জন্য ৩৬৫ জন সুস্থ যুবককে মনোনীত করা হবে। সমস্ত ডাক্তারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে তবেই কাউকে চূড়ান্ত পর্যায়ের ভ্যাকসিনের পরীক্ষার জন্য নেওয়া হবে। হিউম্যান ট্রায়ালে শারীরিক ক্ষতিরও আশঙ্কা রয়েছে।
দিগন্তের দাবি, তিনি সব কিছু জেনেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, মানসিক ও শারীরিক ভাবে প্রস্তুতি নেওয়াও শুরু করেছেন। ‘‘এখন অপেক্ষা ডাকের। তা পেলেই বেরিয়ে যাব’’— জানালেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy