বৃষ্টিতে চলছে চা পাতা তোলার কাজ। মাঝেরডাবরি চা বাগানে। নিজস্ব চিত্র
পুজো আসতেই বোনাস নিয়ে ধীরে ধীরে চা বাগান এলাকার পরিস্থিতি বদলানো শুরু হয়েছে। ডুয়ার্স থেকে তরাই—কয়েক জায়গায় গেট মিটিং, ধর্ণা শুরু হতেই মালিকপক্ষের তরফে শ্রমিক সংগঠনগুলিকে চিঠি দিয়ে বোনাস আলোচনার আগে আন্দোলন থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি মালিকপক্ষ আগাম বলা শুরু করেছে যে করোনার জন্য বাগানের অবস্থা ভাল নয়। যদিও শ্রমিক নেতাদের দাবি, মার্চ, এপ্রিল ও মে’র পর থেকে বাগানগুলির উৎপাদন খুব একটা খারাপ হয়নি। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে রাজ্যের চা বাগানগুলির বোনাস চুক্তি নিয়ে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর প্রথমবার ভার্চুয়াল বোনাস মিটিং শুরু হবে।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের পর ২০১১ থেকে ২০১৬ অবধি চা বাগান শ্রমিকেরা পুজোয় ২০ শতাংশ হারে বোনাস পেয়েছেন। ২০১৭ সাল থেকে বোনাস কমা শুরু করে। ত্রিপাক্ষিক চুক্তিতে গত বছর ১৮.৫০ শতাংশ হারে বোনাস হয়। যদিও পাহাড়ে বরাবর বোনাস চুক্তি আলাদা হয়েছে। সেখানে গতবার ২০ শতাংশ হারে বোনাস হলেও তা ১২ শতাংশ এবং ৮ শতাংশ হারে দেওয়ার কথা ঠিক হয়েছিল। সেই পরের ৮ শতাংশ এখনও বেশ কিছু বাগানের শ্রমিকেরা পাননি বলে অভিযোগ। কার্শিয়াঙের লংভিউ চা বাগানে আন্দোলনও হচ্ছে। এরমধ্যেই গত ৩-৪ সেপ্টেম্বর তরাই এবং ডুয়ার্সের কিছু বাগানে গেট মিটিং শুরু হয়েছে।
এতেই উদ্বিগ্ন মালিকপক্ষের সংগঠন কনসালটেটিভ কমিটি অব প্ল্যান্টেশন অ্যাসোসিয়েশনস (সিসিপিএ)। সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল অজিত রাহা বলেন, ‘‘চা শিল্প বোনাস বৈঠকের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই অবস্থায় কাজ বন্ধ করে গেটে ধর্ণা, বিক্ষোভ বা মিটিং হলে উৎপাদনে প্রভাব পড়তে পারে। করোনায় এমনিতেই পরিস্থিতি খারাপ।’’ সিসিপিএ-র তরফে রাজ্যের শ্রমমন্ত্রীকেও পরিস্থিতির কথা জানানো হয়েছে।
চা শ্রমিক নেতারা জানাচ্ছেন, করোনার জন্য তিনমাস বাগান খারাপ ছিল। এখন বিদেশে চা পাঠাতে না পারলেও দেশের বাজার চাঙ্গা হয়েছে। কাঁচা পাতা ৪০ টাকা কেজি অবধি বিক্রি হচ্ছে। তৈরি চা ২৫০ টাকা কেজির নিচে নেই। গতবার এই সময় তা ১৫০ টাকা কেজির আশেপাশে ছিল। সেকেন্ড ফ্লাশ থেকে চাহিদা বাড়ছে বলে জানান তারা। শ্রমিকদের দাবি, মালিকেরা বোনাস চুক্তির আগে প্রতিবছর নানা কিছু বলে থাকে।
তৃণমূলের চা শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি মোহন শর্মা চলতি সপ্তাহে বোনাস বৈঠকের আগে উত্তরবঙ্গের সমস্ত চা শ্রমিক নেতাদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন। সংগঠনের নব নিযুক্ত যুগ্ম সম্পাদক নির্জল দে বলেন, ‘‘বোনাস বৈঠকে শ্রমিকদের স্বার্থে আমরা লড়ব।’’ সিটুর নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ সমন পাঠক বলেন, ‘‘মালিকেরা কী বলে তা আমরা দেখে নেব। ওদের যুক্তির অভাব থাকে না। প্রয়োজনে আন্দোলন হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy