ত্রিমোহিনীতে এমনই হাল নিকাশির। —নিজস্ব চিত্র।
রাস্তা চওড়া হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছে। কিন্তু পালাবদলেও নিকাশি ব্যবস্থার হাল ফেরেনি ত্রিমোহিনীর। দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি ব্লকের বহু পুরনো এলাকা ত্রিমোহিণী। জেলা সদর বালুরঘাট-হিলি এবং পতিরাম থেকে ত্রিমোহিনী এই দুটি রাজ্য সড়কগুলি মিলেছে তিন মাথার মোড় ত্রিমোহিনীতে। রাজ্য সড়কগুলি সঙ্গমস্থল। ত্রিমোহিনী বাজারে ব্যবসায়ী থেকে বাসিন্দারা সুষ্ঠু নিকাশির অভাবে চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন বলে অভিযোগ। রাস্তার উপর জমে থাকা নোংরা কাদা জল পার হয়ে বাসিন্দারা বাজারহাট করা থেকে বাসে ওঠা যাবতীয় নিত্যদিনের কাজকর্ম করতে বাধ্য হচ্ছেন।
বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা জানান, মূল বাজার এলাকায় রাস্তার ধারে নর্দমা থেকেও নেই। ফলে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের ট্যাপের জল থেকে দোকানিদের ব্যবহৃত সমস্ত জল রাস্তার ধারে জমা হচ্ছে। আর একটু বৃষ্টিতে পুরো এলাকা জলে ভাসছে। এলসাকার ব্যবসায়ী পলাশ সরকার, কার্তিক মাহাতো, পার্থ সাহা, সঞ্জয় ঘোষেরা বলেন, “আকাশে মেঘ দেখলে আমাদের আতঙ্ক বাড়ে। বৃষ্টির জল ওই নোংরা জলে মিশে রাস্তা উপচে দোকান ঘর ভাসায়। তার উপর রাস্তা দিয়ে হিলিগামী বহির্বাণিজ্যের ট্রাক ও বাস চলায়। ওই জমা জল ঢেউয়ের মতো দোকানে আছড়ে পড়ে।” বস্তুত ত্রিমোহিনী বাজারে সারা বছরই জল জমে থাকে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, তৃণমূলের ধলপাড়া পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে বারবার আবেদন করেও কোনও ফল হয়নি। এতে এলাকার বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা এবং পঞ্চায়েতের রাস্তা সংস্কারের দাবিতে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর ব্লক অফিসে বিক্ষোভ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে আরএসপি। তৃণমূলের ধলপাড়া প্রধান উজ্জ্বল মন্ডলের অভিযোগ, “দীর্ঘদিন ধরে পঞ্চায়েতে আরএসপি ক্ষমতায় ছিল। নিকাশি ব্যবস্থা গড়তে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আমরা জেলা পরিষদের মাধ্যমে ত্রিমোহিনীতে নিকাশি নালা তৈরির প্রকল্প নিয়েছি।”
আরএসপির হিলি জোনাল সম্পাদক রথীন সরকার বলেন, “বিগত পঞ্চায়েতের উদ্যোগে বাজার এলাকায় নিকাশি নালা তৈরি করা হয়। বর্তমানে সাফাইয়ের অভাবে ওই নর্দমা কার্যত বুজে গিয়েছে। আমরা বহুবার পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে নর্দমা ও রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়েছি। কাজ হয়নি। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর হিলি ব্লকে বিক্ষোভ জমায়েত হবে।”
রাজ্যে পালা বদলের পর এলাকার পঞ্চায়েতও তৃণমূলের দখলে এসেছে। হিলির তৃণমূল নেতা তথা জেলা প্রাথমিক স্কুল সংসদের চেয়ারম্যান কল্যাণ কুন্ডু বলেন, “হিলি-বালুরঘাট ভায়া ত্রিমোহিণীর ওই রাজ্য সড়ক চওড়া হওয়ার ফলে নিকাশি সমস্যা প্রকট হয়েছে। ত্রিমোহিণীর বাজার এলাকায় সুষ্ঠু নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে জেলা পরিষদের মাধ্যমে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।” তিনি জানান, সীমান্ত এলাকা উন্নয়ন প্রকল্প থেকে গভীর নর্দমা তৈরির জন্য ২ কোটি টাকার খসরা প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। টাকা বরাদ্দ হয়ে এলে ওই কাজ শুরু করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy