উত্তরবঙ্গে তিন দফায় হতে চলেছে লোকসভা ভোট। লোকসভা ভোটের ক্ষেত্রে যাকে নজিরবিহীন বলেই দাবি রাজনৈতিক নেতাদের। সাধারণত আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং দার্জিলিং যাকে অনেকে ডুয়ার্স-তরাই বলে এসেছে এই ক্ষেত্রে একসঙ্গেই লোকসভা ভোট হতো। এ বছর সারা রাজ্যে সাত দফায় লোকসভা ভোটের সূচি ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। উত্তরের শাসক দলের নেতারা এত দফায় ভোট নিয়ে প্রতিক্রিয়া না দিয়ে জানিয়েছেন, রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আগামী মঙ্গলবার বৈঠকের পরেই যা বলার বলা হবে।
আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল সাংসদ দশরথ তিরকে বিষয়টিকে নির্বাচন কমিশনের বিষয় বলে দাবি করলেও তাঁর মন্তব্য, “আমার মনে হয় এ রাজ্যে এত দফায় ভোটের কোনও প্রয়োজন ছিল না।” খোদ প্রধানমন্ত্রী ভোট ঘোষণার পরে ট্যুইট করে গণতন্ত্রের উৎসব বলে উল্লেখ করেছেন। বিজেপির স্থানীয় নেতারা স্বভাবতই দাবি করেছেন, তাঁরা প্রস্তুত। কংগ্রেস ও বামেদের দাবি, বেশি পর্যায়ে ভোট হলে সন্ত্রাসের আশঙ্কা থাকবে না।
লম্বা ভোট হওয়ায় প্রচারের ক্ষেত্রেও সমস্যা হতে পারে বলে অনেক দলের নেতারা মনে করেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে অথবা স্থানীয় ভাবে প্রচার ছাড়াও তারকা প্রচারের ওপর দলগুলি বেশি করে নির্ভর করে। অর্থাৎ দলের ওজনদার নেতা-নেত্রীকে এনে প্রচার করা হয়। দফায় দফায় ভোট হলে বারবার তাঁদের একই এলাকায় আনা সম্ভব হবে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এক নেতার কথায়, “ধরুন দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে প্রচারের শেষ লগ্নে হাওয়া তোলার জন্য আলিপুরদুয়ার কোচবিহারে নিয়ে এলাম। এই দুই কেন্দ্রের প্রায় ছ’দিন পরে জলপাইগুড়িতে ভোট। তাহলে কি প্রতি সপ্তাহে সপ্তাহে দল নেতাকে ডুয়ার্স-তরাইতে আনা যাবে?”
বিরোধীরা প্রসঙ্গ তুলেছেন সন্ত্রাসেরও। কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি শ্যামল চৌধুরী বলেন, ‘‘এটা পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল। ওই সময় যা হয়েছে কমিশন দিল্লিতে বসে সব দেখেছে। তাই সাত দফায় হল।’’ বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, ‘‘আমরা ওই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। পঞ্চায়েত নির্বাচন এক দফায় করে কী হয়েছিল তা সবাই দেখেছে। একজন মহিলা কনস্টেবল দিয়ে ভোট করানো হয়েছে। কার্যত কোনও ভোটই হয়নি। তাই সাত দফায় আমরা খুশি।’’ আলিপুরদুয়ারের বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের মানুষ যাতে ভোট দিতে পারেন সেজন্যই এখানে সাত দফায় নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছে কমিশন। কমিশনকে ধন্যবাদ।”
তৃণমূলের দাবি, যত দফাতেই ভোট হোক না কেন প্রচারে তার কোনও প্রভাব পড়বে না। দলের জয় নিয়েও তাঁরা নিশ্চিত বলে দাবি শাসক দলের। তবে প্রকাশ্যে এখনই কোনও মন্তব্য করছেন না তাঁরা। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘এ বিষয়ে যা বলার রাজ্য নেতৃত্ব বলবেন।’’ জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “উত্তরবঙ্গে তথা সারা রাজ্যেই এখন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট হয়। বাকি যা বলার আগামী মঙ্গলবার রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের পরে বলব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy