Advertisement
E-Paper

ফের ভূকম্পে ফাটল জল্পেশের মন্দিরে

রবিবার ছুটির দিনে ফের ভূমিকম্পে আতঙ্ক ফিরে এল জলপাইগুড়িতে। ফাটল ধরল প্রাচীন জল্পেশ মন্দিরে। ফাটল দেখা গিয়েছে বেশ কিছু বহুতলে। হোটেল ছেড়ে রাস্তায় নেমে দাঁড়ান পর্যটকরা। হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন রোগীদের অনেকে বাইরে বেড়িয়ে ফাঁকা জায়গা খুঁজে নেন। ভূমিকম্পের আতঙ্কে শহর ও সংলগ্ন এলাকায় অসুস্থ পাঁচ মহিলাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৫ ০২:২১
ভূমিকম্পে জল্পেশ মন্দিরে ফাটল।

ভূমিকম্পে জল্পেশ মন্দিরে ফাটল।

রবিবার ছুটির দিনে ফের ভূমিকম্পে আতঙ্ক ফিরে এল জলপাইগুড়িতে। ফাটল ধরল প্রাচীন জল্পেশ মন্দিরে। ফাটল দেখা গিয়েছে বেশ কিছু বহুতলে। হোটেল ছেড়ে রাস্তায় নেমে দাঁড়ান পর্যটকরা। হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন রোগীদের অনেকে বাইরে বেড়িয়ে ফাঁকা জায়গা খুঁজে নেন। ভূমিকম্পের আতঙ্কে শহর ও সংলগ্ন এলাকায় অসুস্থ পাঁচ মহিলাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শনিবার যে সাত জনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়, তাঁদের মধ্যে ছয় জন এদিন সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন। একজনকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বারো ঘণ্টা আগে কম্পন ধাক্কার রেশ না-কাটতে রবিবার দুপুর ১২টা ৪৩ মিনিটে ফের কেঁপে উঠল শহরের ভূতল। শনিবার, পুরভোটের দিন সকাল ১১ টা ৪১ মিনিটে ভূকম্পনের স্থায়িত্ব ছিল ৫৮ সেকেন্ড। প্রাথমিকভাবে রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ৭.৫ ধরা হলেও চূড়ান্ত হিসেবে সেটা দাঁড়ায় ৭.৮।

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়াবিদ সুবীর সরকার জানান, রিখটার স্কেলে রবিবার জলপাইগুড়িতে ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৯। সুবীরবাবু বলেন, “জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ি সহ গোটা উত্তর পূর্বাঞ্চল ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা। শনিবারের ঘটনার আরও কিছু ‘আফটার শকের’ সম্ভাবনা রয়েছে।”

শনিবার বড় ধাক্কার পরে অন্তত দশ বার মৃদু কম্পন অনুভব করেন শহরের বাসিন্দারা। তাই আতঙ্ক ছিলই। রবিবার দুপুরে বেশ জোরে দুলুনি লাগতে দিশেহারা হয়ে যে যার মতো ঘরদোর ছেড়ে পড়িমরি ছুটে রাস্তায় দাঁড়ান। জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, “আর্তনাদে মুহূর্তে শহরের ছবি পাল্টে যায়।”

ফাঁকা হয়ে যায় দোকানপাট। ছুটির দিনের বাজার। ফাঁকা মাঠে দাঁড়িয়েও ভয়ে থরথর কাঁপতে থাকেন গৃহবধূরা। ‘আবার হবে’—আশঙ্কায় দুপুরের অনেকটা সময় রাস্তায় কাটে তাঁদের। পুরসভার প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা সিপিএমের প্রমোদ মণ্ডল জানান, শনিবার কম্পনে শহরের অন্তত ত্রিশটি বাড়ির দেওয়ালে ফাটল ধরে। রবিবার অন্তত দশটি বাড়িতে ফাটল দেখা গিয়েছে। সুহৃদ লেনের একটি বহুতল সামান্য কাত হয়েছে টের পেয়ে শিল্প সমিতি পাড়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান মোহন বসু জানান, মোহন্ত পাড়ায় একটি বহুতল কয়েক ইঞ্চি মাটিতে তলিয়েছে। বেশ কিছু বাড়ির দেওয়ালে ফাটল ধরে। জলপাইগুড়ির মহকুমাশাসক সীমা হালদার বলেন, “প্রচুর বাড়ির দেওয়ালে চিড় ধরার খবর মিলছে। সেগুলি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।”

শুধু জলপাইগুড়ি শহর নয়। রবিবার আতঙ্কে জবুথবু ছিল ময়নাগুড়ি ও ধূপগুড়ি। এদিনের কম্পনে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শৈব তীর্থ প্রাচীন জল্পেশ মন্দিরের দেওয়ালে, চূড়ায় অসংখ্য ফাটল দেখা দেয়। মন্দির কমিটির সম্পাদক গিরীন্দ্রনাথ দেব বলেন, “শনিবার এবং রবিবার দু’দিনের ভূমিকম্পে প্রাচীন মন্দিরের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা গিয়েছে।” এদিকে ধূপগুড়ির শালবাড়ি এলাকার একটি হিমঘরের দেওয়ালে ফাটল দেখা দেয়।

এদিন আতঙ্ক এতটাই ছিল যে জেলা সদর হাসপাতাল, নার্সিংহোম এবং ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে চিকিৎসাধীন রোগীদের অনেকে মুহূর্তের জন্য অসুস্থতা ভুলে শয্যা ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে যান। জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা বলেন, “ধূপগুড়ি, ময়নাগুড়ি ও জলপাইগুড়ি শহরে ভূমিকম্পের আতঙ্কে রবিবার পাঁচজন মহিলা অসুস্থ হয়েছেন। তাঁদের জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। শনিবার যে সাত জনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁদের মধ্যে ছয়জন সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন। একজনকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’’

jalpesh temple earthquake jalpesh temple jalpesh temple crack quake hit jalpaiguri jalpaiguri earthquake
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy