Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Bratya Basu

ব্রাত্যের বৈঠকের মাঝে উত্তাল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়! শিক্ষামন্ত্রীকে ঘিরে বিক্ষোভ

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই বিক্ষোভ দেখান ‘বিশ্ববিদ্যালয় বাঁচাও’ মঞ্চের ছাত্রছাত্রী-সহ অধ্যাপকেরা। আলোচনার জন্য সময় দিয়েছেন ব্রাত্য বসু।

শিক্ষামন্ত্রীকে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের একাংশের। তাঁদের সঙ্গে আলোচনার করবেন বলে জানান ব্রাত্য।

শিক্ষামন্ত্রীকে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের একাংশের। তাঁদের সঙ্গে আলোচনার করবেন বলে জানান ব্রাত্য। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২২ ১৪:৫৯
Share: Save:

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বৈঠক চলাকালীন উত্তাল পরিস্থিতি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। বৈঠক থেকে বেরোনোর পর বিক্ষোভের মুখে পড়লেন ব্রাত্য।

বুধবার একাধিক কর্মসূচি নিয়ে উত্তরবঙ্গ সফরে আসেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র-সহ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিনি৷ ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘বিশ্ববিদ্যালয় বাঁচাও’ মঞ্চের তরফে বিক্ষোভ প্রদর্শন কর্মসূচির জন্য মাইক লাগানোর সময় শুরু হয় ঝামেলা। আন্দোলনকারীদের বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। আঙুল ওঠে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের দিকে। এই গন্ডগোলে অভিজিৎ সান্যাল নামে ‘বিশ্ববিদ্যালয় বাঁচাও’ মঞ্চের এক সদস্য জখম হয়েছেন বলে অভিযোগ। ওই ধুন্ধুমারের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা। কিন্তু তাঁদের সঙ্গেও বচসা শুরু হয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের। এর পর শিক্ষামন্ত্রীকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই বিক্ষোভ দেখান ‘বিশ্ববিদ্যালয় বাঁচাও’ মঞ্চের ছাত্রছাত্রী-সহ অধ্যাপকেরা। উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি সংক্রান্ত বিষয়ে বেশ কিছু দিন ধরে আন্দোলন করছেন পড়ুয়াদের একাংশ। শিক্ষকদের একাংশ সেই আন্দোলনের সমর্থনে রয়েছেন।

আন্দোলনকারী এবং আহত ছাত্র অভিজিৎ বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি বেসরকারিকরণ বা হস্তান্তরের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন কর্মসূচি ছিল। প্রশাসনিক ভবনের সামনে মাইক বাঁধার কাজ চলছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীরা আমাদের জানান এখানে মাইক বাঁধার কোনও অনুমতি উপাচার্য দেননি৷ আমরা তাঁর কাছে এ সংক্রান্ত নথি দেখতে চাইলে তাঁদের সঙ্গে বচসা শুরু হয়। তখন হঠাৎ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জড়িত না হয়েও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক নেতা আমাদের উপর চড়াও হন। আমার মুখে এবং বুকে লাথি-ঘুষি চালাতে থাকেন। অবশেষে অধ্যাপকরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।’’

অন্য দিকে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কার্যকারী সভাপতি মিঠুন বৈশ্যের দাবি, ‘‘এগুলো সব ভিত্তিহীন অভিযোগ। ওঁরা জানেনই না যে, কেন আন্দোলন করছেন। আন্দোলন বাঁচিয়ে রাখতে হবে, সে জন্যই এই ভুল পদক্ষেপ করেছেন৷’’ তাঁর সংযুক্তি, ‘‘কোথায় কী মারপিট হয়েছে, তা আমি জানি না। শিক্ষামন্ত্রীর একাধিক অনুষ্ঠান রয়েছে, সেগুলোর দিকেই আমাদের নজর।’’

এর মধ্যে বিক্ষোভ প্রসঙ্গে ব্রাত্য বলেন, ‘‘ক্যাবিনেটই শেষ সিদ্ধান্ত জানাবে। তবে আমি এটুকু বলতে পারি, বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি দেওয়া হচ্ছে না। আর বেসরকারিকরণও হয়নি। এটা সরকারেরই একটি দফতর থেকে আরও একটি দফতরে যাচ্ছিল। পর্যটন বিভাগ অন্যত্র জমি নেবে।’’ তিনি জানান, আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে তিনি দেখা করবেন। তবে মারামারির বিষয়টি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে উল্লেখ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক সমর বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রায় ২০০ কোটি টাকার জমি বেসরকারি হাতে আমরা তুলে দিতে দেব না। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ছেলেরা এসে ঝামেলার সৃষ্টি করছে। এই সমস্ত কিছু হচ্ছে বর্তমান উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্রের নির্দেশে। আমাদের ধারণা শিক্ষামন্ত্রী এই বিষয়টি জানেন না। আমরা তাঁর কাছে সব খুলে বলব। তিনি বিকেল ৪টেয় সময় দিয়েছেন আমাদের। তবে তাঁর কাছে জমি সংক্রান্ত বিষয়ের পাশাপাশি সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ আবেদন থাকবে এই উপাচার্যের অপসারণ। কারণ, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভেদ সৃষ্টি করছেন।’’ এ নিয়ে উপাচার্য ওমপ্রকাশের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE