চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় চালু হয়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলা শিক্ষা ভবন। ওই ভবনেই রয়েছে মহকুমাশাসকের দফতরও। কিন্তু ভবনটি চালু হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত সেখানকার বিদ্যুতের বিল মেটাতে পারেনি জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে ওই ভবনের সমস্ত দফতরের বিভাগ মিলিয়ে পাঁচ মাসে সেখানকার বিদ্যুতের বকেয়া বিল বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় তিন লক্ষ টাকা।
জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক মুরারিমোহন মণ্ডল বলেন, “জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরের তহবিলে টাকা নেই। তাই, প্রায় তিন লক্ষ টাকা বিদ্যুতের বিল মেটানোর মতো আমাদের ক্ষমতা নেই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সমস্যার কথা জানানো হয়েছে।” প্রসঙ্গত, বিদ্যুত বণ্টন কোম্পানির তরফে ইতিমধ্যেই একাধিক বার ওই দফতরে চিঠি পাঠিয়ে বিদ্যুতের বিল মেটানোর অনুরোধ করা হয়েছে। ফলে, বিল না মেটানোর কারণে কোম্পানি ওই ভবনের বিদ্যুত সংযোগ কেটে দেবে কিনা, জেলা শিক্ষা-প্রশাসনের অন্দরেই উঠেছে সেই প্রশ্ন। মুরারি বলেন, “কোম্পানি বিদ্যুতের সংযোগ কেটে দিলে দেবে।” কোম্পানির জেলার আঞ্চলিক ম্যানেজার মানুচন্দ্র বর্মণ বলেন, “কোম্পানির তরফে জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় দফতরকে ফের বকেয়া বিদ্যুতের বিল মেটাতে অনুরোধ করা হবে। সহজে সরকারি দফতরে সংযোগ কাটা হয় না।”
চারতলার ওই শিক্ষা ভবনের সরকারি ভাবে মালিকানা রয়েছে জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের নামে। প্রতি মাসে কোম্পানি ওই পদের নামে বিদ্যুতের বিল পাঠায়। ওই ভবনে ৫০টিরও বেশি ঘর রয়েছে। ভবনটিতে জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক, মহকুমাশাসকের দফতর ছাড়াও জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় দফতরের বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে। মুরারির দাবি, “ভবনটি তৈরির কাজের সময় বিভিন্ন প্রয়োজনে নির্মাণকারী সংস্থা বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছে। ফলে, জানুয়ারি মাসে ভবন চালুর সময়েই প্রায় ৮০ হাজার টাকা বকেয়া বিদ্যুতের বিল মাথায় নিয়ে ভবনের দায়িত্ব নিই। তার পর থেকে প্রতিমাসে বিদ্যুতের বিল বাড়ছে। জেলা শিক্ষা দফতরের এই নতুন ভবন চালু হলেও বিদ্যুতের বিল মেটানোর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এখনও টাকা বরাদ্দ করেনি।” প্রশাসনিক সূত্রের খবর, জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় দফতরের পুরনো ভবনে মাসে প্রায় দশ হাজার টাকার কাছাকাছি বিদ্যুতের বিল আসত। ওই টাকা মেটাতে সমস্যা হত না। মহকুমাশাসক (রায়গঞ্জ) কিংশুক মাইতি বলেন, “প্রশাসনিক বিভিন্ন সমস্যার কারণে ওই ভবনের বিভিন্ন দফতরের বিদ্যুতের মিটার পৃথক করা যায়নি। বকেয়া বিদ্যুতের বিল মেটানোর চেষ্টা চলছে।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)