মিছিলে ছিটমহল বিনিময় কমিটির সদস্য-সমর্থকেরা। —নিজস্ব চিত্র।
সংসদে স্থল চুক্তি সীমান্ত বিল পাশের দাবিতে জেলাশাসকের মাধ্যমে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী বেংকাইয়া নাইডুকে স্মারকলিপি দিল ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় কমিটি। সোমবার দুপুরে কোচবিহার স্টেশন মোড় এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে সাগরদিঘি পাড়ে শহিদবাগে সভা করে বিনিময় কমিটি। পরে তাঁরা জেলাশাসক পি উল্গানাথনের দফতরে যান। তাঁর মাধ্যমেই সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী, সংসদের দুই সভার স্পিকারকেও স্মারকলিপি দেন তাঁরা।
পাশাপাশি এ দিন একই দাবিতে ছিটমহল বিনিময় কমিটির বাংলাদেশ শাখার পক্ষ থেকে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারকেও স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এ দিন থেকেই লোকসভার অধিবেশন শুরু হয়েছে। কমিটির সহকারি সাধারণ সম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “ওই বিল পাশ করার ব্যাপারে সরকারের তরফে আশ্বাস মিলেছে। কিন্তু এখনও পাশ হয়নি। ছিটমহলের মানুষ কষ্টে রয়েছেন। আমরা তা বিনিময়ের দাবিতে আন্দোলন করে যাব। চলতি মরসুমে তা না পাশ হলে দিল্লিতে গিয়ে অবস্থান করা হবে।”
কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, দুই দেশ মিলিয়ে ছিটমহলের সংখ্যা ১৬২টি। ভারতীয় ভূখন্ড ঘেরা বাংলাদেশের ৫১টি এবং বাংলাদেশ ভূখন্ড ঘেরা ভারতের ১১১টি ছিটমহল রয়েছে। দু’পাশ মিলিয়ে প্রায় প্রায় ষাট হাজার মানুষ রয়েছেন সেখানে। যাদের নিজস্ব কোনও পরিচয় নেই। বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই ওই ছিটমহল বিনিময় নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও নিজের আগের অবস্থান (বিনিমিয় প্রসঙ্গে এক ছটাক জমি দেব না) থেকে ঘুরে ছিটমহল বিনিময় নিয়েই উদ্যোগী হয়ে ওঠেন। এই পরিস্থিতিতে ছিটমহলের বাসিন্দাদের মনে নতুন করে এক আশার আলো জেগে ওঠে। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের আলোচনা ফলপ্রসূ হওয়ায় সে ব্যাপারে আশ্বস্ত হন বাসিন্দারা। সম্প্রতি ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ তিনবিঘা সফর কালে ওই বিলের সমর্থনে সওয়াল করেন। সংসদে ওই বিল দ্রুত পাশ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। ছিটমহলের মানুষের কষ্টের জীবনযাপন নিয়েও সহমর্মিতাও জানান তিনি।
এই অবস্থায় ছিটমহলের বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের জন্য জমি যাতে কোনও সমস্যা না হয় সে জন্য দিন কয়েক আগে প্রধানমন্ত্রী নরেনন্দ্র মোদীকে চিঠি দেওয়া হয় কমিটির পক্ষ থেকে। তাদের হাতে ১০০ একর জমি রয়েছে। যা পুনর্বাসনের জন্য যথেষ্ট বলে মনে করছে তাঁরা। কমিটি মনে করে, এখন যা পরিস্থিতি তাতে ছিটমহল বিনিময়ে কোনও প্রতিবন্ধকতা নেই। এ দিন দিনহাটা, মেখলিগঞ্জ থেকে কয়েকটি ছিটমহলের মানুষ কোচবিহার শহরে মিলিত হন। পতাকা হাতে মিছিল করে তাঁরা বিল পাশ করানোর দাবি তোলেন। দীপ্তিমানবাবু বলেন, “পুনর্বাসন নিয়ে কোনও সমস্যা তৈরি হবে না। আমরা সে ব্যাপারে আগেই প্রশাসনিক স্তরে সমস্ত কিছু জানিয়েছি। এখন বিলটি পাশ হওয়া প্রয়োজন। না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy