Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

লোক টানতে সাজছে মিষ্টি

হোলির দিনকয়েক আগে থেকে মিষ্টির দোকানে ভিয়েন চলত। রাতভর জেগে বারেবারে ছানার জল ঝরানো হতো। রসগোল্লা, সন্দেশ, কাঁচাগোল্লার মতো যে মিষ্টি বছরভর দোকানে মেলে, তারই পরিমাণ বাড়িয়ে তৈরি হতো হোলির জন্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৭ ০২:১২
Share: Save:

হোলির দিনকয়েক আগে থেকে মিষ্টির দোকানে ভিয়েন চলত। রাতভর জেগে বারেবারে ছানার জল ঝরানো হতো। রসগোল্লা, সন্দেশ, কাঁচাগোল্লার মতো যে মিষ্টি বছরভর দোকানে মেলে, তারই পরিমাণ বাড়িয়ে তৈরি হতো হোলির জন্য। নেট দুনিয়ার আগ্রাসী বিপণনের ছোঁয়ায় বদলাচ্ছে এই সাবেকিয়ানাও। শুধু মাত্র হোলির জন্য তৈরি হচ্ছে মিষ্টির প্যাকেজ। গুড়ের সঙ্গে চকোলেট মিশিয়ে কড়াপাক। আবির রঙের রসগোল্লা। শিলিগুড়ির মিষ্টির দোকানের কাচ ঘেরা আলমারিতে দেখা মিলছে নানা হোলি প্যাকেজের।

শহরের বিধান রোডের একটি দোকানে মিলছে বিশেষ ‘হোলি-ট্রে’। তাতে কাজু বরফির সঙ্গে বিক্রি হচ্ছে আবিরও। রং-মিষ্টি একই দোকানে? ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এখন প্যাকেজিংয়ের যুগ। সেই প্যাকেজিং দিয়ে গ্রাহক টানতেই এমন ব্যবস্থা। ফাগুন রঙের ছোঁয়া টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির কড়াপাকের চমচমের ঐতিহ্যেও। যে চমচমে কামড় বসালে চাকভাঙা মধুর মতো রস গড়াতে থাকে মুখের ভিতরে। সেই পেল্লায় চমচম সাজছে হোলির রঙে। নানা রং দিয়ে চমচমের ওপরে লেখা হয়েছে ‘হ্যাপি দোল।’’

দিল্লি-কলকাতার মতো শহরে বাড়িতে বসেই অনলাইনে মেলে দোলের মিষ্টির প্যাকেজ। শিলিগুড়িতে এখনও সে সুযোগ নেই। তবে পিছিয়ে থাকতে রাজি নন এখানকার মিষ্টি ব্যবসায়ীরা। বিধানরোডের একটি জনপ্রিয় মিষ্টির দোকানের মালিক ললিত জৈন বলেন, ‘‘আজ বাদে কাল অনলাইন পরিষেবা এই শহরেও শুরু হয়ে যাবে। তার আগে আমরাই প্রস্তুত।’’ তাই সাবেক মিষ্টির সঙ্গেই দোলের আগে রং, স্বাদ নিয়ে একটু পরীক্ষানিরীক্ষা করছেন তাঁরা।

হোলিতে নাকি শুকনো মিষ্টিই সকলে বেশি পছন্দ করেন! তার সঙ্গে যুব প্রজন্মের চকোলেটে দুর্বলতার কথা মাথায় রেখেই ওই দোকানে তৈরি হয়েছে গুড়-চকোলেটের মিশেল। পান পাতার মতো দেখতে মিষ্টিটি চকোলেট দিয়ে মোড়া। মাঝখানে গুড় ঠাসা। চকোলেট ও গুড় কড়াপাক দিয়ে মিষ্টি তৈরি। স্ট্রবেরি দিয়ে হয়েছে আবির রঙের রসগোল্লা। ছানার সন্দেশের গায়ে তিন-চার রঙের আস্তরণ। হিলকার্ট রোডে একটি দোকানে আবার ছানার তৈরি কাজুবাদামে আবিরের সুগন্ধি ঢালা হয়েছে।

উত্তরবঙ্গে বেলাকোবার চমচমের নাম সকলেই একডাকে চেনেন। সেই চমচম বানানোর প্র্রক্রিয়ায় এখনও রক্ষণশীল বেলাকোবার বাদল দত্তরা। দত্ত বাড়ির ছোট ছেলে লিটন এখন সামিল মিষ্টির হেঁসেলে। তাঁর সৌজন্যেই চমচমের শরীরের রঙের আঁকিবুকি। লিটনের কথায়, ‘‘এখন মোড়ক ভাল না হলে মিষ্টি বিক্রিও সমস্যা হবে। তাই মিষ্টিকেও দর্শনধারী করে তোলাটা প্রয়োজন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sweets Consumers Holi Festival
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE