শোওয়ার ঘরের মেঝেয় কন্যার ক্ষতবিক্ষত দেহ। কাছে ভাতের থালা তখনও ছড়ানো। পাশের ঘরেই সিলিং থেকে ঝুলছেন বাবা। সোমবার বিকেলে শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানার মিলনমোড়ের জদুভিটার এই ঘটনায় মেয়েকে কুপিয়ে খুন করেই বাবা আত্মঘাতী হয়েছেন বলে মনে করছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, পেশায় দিনমজুর শুকরা হাঁসদার (৪০) দেহটি টিনের ছোট বাড়ির একটি ঘরের সিলিং থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে। সোমা হাঁসদার (১১) দেহ আর একটি ঘরের খাটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিল। দেহের পাশে ধারালো অস্ত্র পাওয়া গিয়েছে।
সোমা পরমানন্দ নেপালি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তার মা মঞ্জুলাও দিনমজুরি করেন। বেশ কিছু দিন ধরে মানসিক ভাবে অসুস্থ থাকায় শুকরা কাজ করতে যেতেন না। তাঁর চিকিৎসাও চলছিল। বাড়িতে প্রতিদিনই তিনি গোলমাল করতেন বলে অভিযোগ। এ দিন সকালেও চিৎকার-চেঁচামেচি ভাঙচুর করেছিলেন। গোলমালের পর মঞ্জুলা কাজে বেরিয়ে যান। একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া বড় ছেলে হরিশ্চন্দ্র আর সোমাও বেরিয়ে যায়। বাড়িতে শুকরা একাই ছিলেন।
সোমার দেহের পাশেই ভাতের হাঁড়িও খোলা পড়েছিল। পুলিশের অনুমান, বিকেলে বাড়ি ফিরে সোমা খেতে বসেছিল। সেই সময়েই শুকরা তার উপরে হামলা করে। সোমার ঘাড়ে, গলায়, পায়ে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। সন্ধেয় হরিশ্চন্দ্র বাড়িতে ফিরলে বাইরের ঘরে বোনের দেহ এবং পাশের ছোট ঘরে বাবার ঝুলন্ত দেহ দেখে চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। তাঁদের দাবি, খুনের সময়ে তাঁরা ঘর থেকে কোনও চেঁচামেচির আওয়াজ পাননি।
হরিশ্চন্দ্র জানায়, দিন সাতেক ধরে তার বাবার মানসিক অবস্থার অবনতি হয়েছিল। কিন্তু বোনকে খুন করে তিনি আত্মঘাতী হবেন, এমন কথা তারা ভাবতেও পারেনি। ডেপুটি পুলিশ কমিশনার সংমিত লেপচা জানান, ময়নাতদন্ত হচ্ছে। কী কারণে এমন ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy