এখনও পুরোপুরি আতঙ্ক কাটেনি ক্রান্তিতে। জলপাইগুড়ির সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মনের ডাকা শান্তি বৈঠকে এমন কথাই জানালেন পুলিশ কর্তারা। মালবাজারের এসডিপিও দেবাশিস চক্রবর্তী এদিনের বৈঠকে বলেন, ‘‘এখনও ক্রান্তি ফাঁড়ি এলাকায় আতঙ্ক এবং গুজব তৈরির পরিস্থিতি যে পুরোপুরি কাটানো যায়নি তার প্রমাণ বারবার মিলছে।’’
গত সপ্তাহের সোমবার মৌলানি এলাকায় একটি গাড়ি ঘিরে ছেলেধরার অভিযোগ ওঠে। দ্রুত ক্রান্তি ফাঁড়ির ওসি খেসাং লামা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। দেখা যায়, একটি পরিবার বাচ্চাদের নিয়ে চ্যাংড়াবান্ধা থেকে নাগরাকাটার বাড়িতে ফিরছে। কেন উত্তেজনা এবং গোলমালের আটদিন পরেও এখনও এলাকা স্বাভাবিক হয় নি তা নিয়ে উদ্বিগ্ন সাংসদ বিজয়। তিনি বললেন, “ক্রান্তি বরাবরই শান্তিপ্রিয় এলাকা। মানুষকে আতঙ্কে থাকবেন, এটা হতে পারে না। নিশ্চয়ই পুলিশ সবটা দেখছে। কিন্তু সকলেরই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।” পুলিশের ব্যাপক ধরপাকড়ের জেরেও ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ব্যবসাও জমছে না বলে বৈঠকে উপস্থিত অনেকেই জানান। এর পরেই জেলা পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি জানান, আতঙ্কের অবকাশ নেই। কারণ এখন আর কোনও ধরপাকড় চলবে না। কিন্তু পুলিশ যে তদন্তে ঢিলে দিচ্ছে না তা জানিয়ে তিনি বলেন , “এখনও বেশ কিছু নাম আমাদের কাছে আছে। তাই যারা অধরা, পুলিশ তাদের রেহাই দেবে না।” পুলিশি ধরপাকড়ের আতঙ্কে অনেকেই ক্রান্তি ছেড়ে বাইরে রয়েছেন। জড়িত না হয়েও গ্রেফতার হতে পারে এই আতঙ্কেও অনেকে গা ঢাকা দিয়েছেন।
কিন্তু এতসবের পরেও রাজনৈতিক তরজার উর্ধ্বে উঠতে পারেনি এই বৈঠক। কারণ বিজেপি, সিপিএম কোনও পক্ষই এই বৈঠকে যোগ দেয়নি । বিজেপির মালবাজার মণ্ডল নেতা কমলেন্দু দেবশর্মা জানান, “তৃণমূলের এক নেতা আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন কিন্তু প্রশাসন বা সাংসদের তরফ থেকে কোনও ডাক আসেনি। কাজেই তৃণমূলের নিজস্ব ঘরোয়া বৈঠকে যোগ দিতে যাইনি।” তৃণমূলের ক্রান্তি ব্লক সভাপতি শ্যামল বিশ্বাস বলেন, “ক্রান্তিতে সিপিএম আর নেই বিরোধীরা এখন সবাই বিজেপি কিন্তু বিজেপি নিজেই এই গোলমালে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িয়ে থাকার কারণেই বৈঠক থেকে ওরা দূরে সরে থাকছে।”