জেলা সদরের দুয়ারে তিস্তার মূল বাঁধে ফাটল দেখা দিল রবিবার। ফাটল দিয়ে তিস্তার জল ঢুকতে শুরু করেছিল জনপদে। খবর পেয়ে চমকে ওঠে জলপাইগুড়ি পুর প্রশাসন। বাঁধের বড়সর ক্ষতি হলে তিস্তার জল ঢুকতে শুরু করবে জলপাইগুড়ি শহরে। পুরসভার কর্তারা ছুটে যান জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া বিবেকানন্দপল্লিতে। পুরসভা তড়িঘড়ি বালির বস্তা ফেলতে শুরু করে। বালির বস্তা দিয়ে আটকানো হয় বাঁধ চুঁইয়ে নদীর জলের লোকালয়ে ঢোকা। বিকেলে এলাকায় পরিদর্শনে গিয়েছিলেন শিলিগুড়িরমেয়র গৌতম দেব।
লক্ষ্মীপুজোর আগের দিন পাহাড়-সমতলে বৃষ্টি বিপর্যয় জলপাইগুড়ি শহরে ফিরিয়ে এনেছে ১৯৬৮ সালের বন্যার স্মৃতি। সে বছরও লক্ষ্মীপুজোর আগের রাতেই বন্যায় ভেসেছিল জলপাইগুড়ি। সে বছরের বন্যার তারিখ ছিল ৪ অক্টোবর। এ বছরও শনিবার তথা ৪ অক্টোবর রাত থেকে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছিল জলপাইগুড়িতে। সমাজমাধ্যমে তা নিয়ে ৬৮ সালের বন্যার আতঙ্ক টেনে এনে নানা পোস্ট হতে শুরু করে। রবিবার সকালে শহর লাগোয়া তিস্তা বাঁধে ফাটলের খবর পেয়ে আতঙ্ক উস্কে ওঠে। জলপাইগুড়ির উপ পুরপ্রধান সৈকত চট্টোপাধ্যায় ঘটনাস্থলে ছিলেন। তিনি বলেন, “আমরাই প্রথম খবর পেয়ে বিবেকানন্দপল্লিতে গিয়ে দেখি বাঁধ ফাটিয়ে তিস্তার জল ঢুকছে। শহর সহ লাগোয়া এলাকা বিপন্ন বলে আশঙ্কা হয়। পুরসভা এলাকা না হলেও বৃহত্তর কারণে আমরা বালি ফেলে বাঁধ মেরামতি শুরু করে দেই। সেচ দফতরের সঙ্গে সমন্বয় করি।”
জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের তিস্তা নদী লাগোয়া কয়েকশো ঘরবাড়ি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। কয়েক হাজার মানুষ ঘর ছাড়া। পানীয় জলের সঙ্কট শুরু হয়েছে। প্রশাসনের তরফে মাইকে ঘোষণা করে সর্তক করা হচ্ছে স্থানীয়দের। জলপাইগুড়ি জেলা স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছে দুর্গতদের জন্য। গবাদিপশু নিয়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা।
গজলডোবা ব্যারাজ থেকে জল ছাড়া হচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি, গত কয়েক বছর ধরে জলপাইগুড়ির জুবলি পার্ক এলাকার দিকে তিস্তা নদীতে জল খুব একটা হয়নি৷ এ বছর ওই এলাকাও প্লাবিত হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)