Advertisement
E-Paper

টাকার দাবিতে স্কুলে হুমকি পোস্টার, আতঙ্ক

রবিবার ছিল ছুটির দিন। সোমবার স্কুল খুলতেই স্কুলের দেওয়ালে সাঁটা হুমকি পোস্টার নজরে আসে পড়ুয়া ও শিক্ষকদের। দু’লক্ষ টাকা না দিলে স্কুলের ১০ ছাত্রকে অপহরণ করা হবে বলে এই পোস্টারে হুমকি দেয় দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনায় প্রথমে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ইংরেজবাজারের ফুলবাড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নঘরিয়া হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ। তড়িঘড়ি পুলিশকে খবর দিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৫ ০২:১৯

রবিবার ছিল ছুটির দিন। সোমবার স্কুল খুলতেই স্কুলের দেওয়ালে সাঁটা হুমকি পোস্টার নজরে আসে পড়ুয়া ও শিক্ষকদের। দু’লক্ষ টাকা না দিলে স্কুলের ১০ ছাত্রকে অপহরণ করা হবে বলে এই পোস্টারে হুমকি দেয় দুষ্কৃতীরা।

এই ঘটনায় প্রথমে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ইংরেজবাজারের ফুলবাড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নঘরিয়া হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ। তড়িঘড়ি পুলিশকে খবর দিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়। পরে পোস্টারে উল্লেখ করা ফোন নম্বরে যোগাযোগ করে স্কুলের কয়েকজন বুঝতে পারেন, নিছক ভয় দেখাতেই কেউ এই কাণ্ড করে থাকতে পারে দুষ্কৃতীরা।

জানা গিয়েছে পোস্টারে যে নম্বরটির উল্লেখ ছিল সেটি কালিয়াচকের একজন ব্যবসায়ীর। তাঁর পরিচিত কেউ তাঁকে ফাঁসিয়ে দিতে নম্বরটি ব্যবহার করেছে বলে পুলিশের সন্দেহ। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা তদন্ত করে ফোন নম্বরের গ্রাহকের নাম জানতে পেরেছি। তিনি জড়িত নন বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। গুজব ছড়ানোর জন্য এমন হতে পারে। তবে আমরা গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখছি। স্কুলে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশও দিয়েছি।”

স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুনীল কুমার সরকার বলেন, “কেউ রসিকতা করেও এমন করতে পারে। তবে বিষয়টি হালকা ভাবে নেওয়া যাবে না। মনে রাখতে হবে, স্কুলে প্রায় দু’ হাজার ছাত্র ছাত্রী রয়েছে। তাদের নিরাপত্তার ব্যপার রয়েছে।” স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি আব্দুল খালেক জানান, দু সপ্তাহ আগে পাশের গ্রামে হুমকি চিঠি পেয়েছিল ছ’টি পরিবার। সে জন্যই আতঙ্ক তৈরি হয়েছে বলে তাঁর ধারনা। যদিও স্কুলের কয়েকজনের সন্দেহ, কাঁচা হাতে লেখা পোস্টারটি কেউ আতঙ্ক ছড়াতে সেঁটেছে।

ইংরেজবাজারের নঘরিয়া হাই স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। এদিন সকাল ৯টা নাগাদ মুল গেটের পাশে দুটি পোষ্টার নজরে আসে স্কুল কর্তৃপক্ষের। পুলিশ গিয়ে পোষ্টার গুলি খুলে নিয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা শম্ভু সিংহ, সুজয় সরকার বলেন, “গুজব ছড়ানোর জন্য কেউ এমন কাণ্ড করে থাকতে পারে। কারণ সপ্তাহ দুয়েক ধরে ইংরেজবাজারের বিভিন্ন গ্রামে ডাকাতির আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে গ্রাম গুলির শান্তি শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছে। পঠনপাঠনে বিঘ্ন ঘটাতে স্কুলে এমন পোষ্টার দেওয়া হতে পারে। তবে ফোন নম্বর দিয়ে হুমকি দেওয়া হাস্যকর। কারা এর পিছনে জড়িত রয়েছে পুলিশ তাদের খুঁজে বের করুক।” এই ঘটনায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুনীলবাবু লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। তিনি বলেন, “উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকায় আমরা ব্যস্ত ছিলাম। তাই থানায় লিখিত অভিযোগ করিনি। তবে মৌখিক ভাবে থানায় এবং জেলা শিক্ষা দফতর, পরিচালন কমিটিকে জানিয়েছি।”

ওই এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “ঘটনাটি আমি শুনেছি। এর পিছনে এক শ্রেণির মানুষ রয়েছে, যারা এমন গুজব ছড়িয়ে অশান্তির পরিবেশ তৈরি করছে। তাই পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যারা গুজব ছড়াছে তাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে।” রাজ্যের আরেক মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী বলেন, “কেউ মজা করে এমন করে থাকতে পারে। ওই গ্রাম গুলিতে চিঠি, পোষ্টার দিয়ে গ্রামবাসীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। পুলিশকে ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।”

তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি তথা পুরসভার ভাইস চেয়ার ম্যান দুলাল সরকার বলেন,“মানুষের কাছে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।”

উত্তর মালদহের সাংসদ তথা জেলা কংগ্রেসের সভানেত্রী মৌসম নূর বলেন, “শুধু ইংরেজবাজার,মানিকচক নয়,রতুয়াতেও মানুষের মনে এমন আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এখানে পুলিশের গাফিলতি রয়েছে। যারা এই আতঙ্ক ছড়াছে তাদের গ্রেফতার করা উচিৎ। তা হলেই মানুষের মধ্যে থেকে আতঙ্ক কমবে।”

সম্প্রতি ইংরেজবাজার থানার শোভানগর গ্রামপঞ্চায়েতের বাঁধাগাছ গ্রামে ছয়টি পরিবার লালখামে মোড়া হুমকি চিঠি পান। পুলিশকে জানানোর পাশাপাশি রাত পাহারা শুরু করেন এলাকার মানুষজন।

threat school maldaha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy