ঘটনাস্থলে: তদন্তে বম্ব স্কোয়াড ও ফরেন্সিক বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশকর্মীরা। ছবি: স্বরূপ সাহা
কালিয়াচকের নয়াগ্রামে বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্তে এল রাজ্যের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ দল। রবিবার দুপুরে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ মৌসুমী রক্ষিত এসে ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেন। এ দিন দুপুরে সিআইডির বম্ব স্কোয়াডের একটি দলও ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেছে। ঘটনাস্থলে ছিলেন পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতিও। এ ছাড়া, রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের ডিজ়াস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ ও দমকলের আধিকারিকরা এসেও এ দিন পৃথক ভাবে তদন্ত চালান। শনিবার সকালে এই বিস্ফোরণে এক শিশুর মৃত্যুতে গোটা এলাকা এ দিনও ছিল থমথমে।
শনিবার সকাল সাতটা নাগাদ কালিয়াচকের নওদা যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের হাবিবুর রহমানের পাকা বাড়ির একাংশে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণে সেই পাকা বাড়ির একাংশ কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। সে সময় বাড়ির বারান্দায় খেলছিল হাবিবুরের চার বছরের ছেলে তাবরেজ আকতার। বিস্ফোরণে তাবরেজের মৃত্যু হয়। পরিবারের দাবি, রান্নাঘরে থাকা গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে ওই বিস্ফোরণ হয়েছিল। রান্নাঘরে বড় একটি গ্যাসের সিলিন্ডারের পাশাপাশি ছোট একটি সিলিন্ডারও ছিল। বড় সিলিন্ডারটিই ফেটেছে। এ ছাড়া একটি মোটরবাইকও রান্নাঘরের পাশে রাখা ছিল। ফলে বিস্ফোরণের ভয়াবহতা অনেক বেশি হয়। প্রাথমিক তদন্তে মালদহ জেলা পুলিশেরও দাবি, রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার ফেটেই বিস্ফোরণ। তবে ওই ঘরের আশেপাশে বিস্ফোরক জাতীয় কিছু ছিল কিনা সেটাও সন্দেহের তালিকায় রেখেছে পুলিশ।
এ দিন সকাল থেকেই কালিয়াচক থানার বিশাল পুলিশবাহিনী ওই বাড়িটি ঘিরে থাকে। দুপুর দুটো নাগাদ নয়াগ্রামের ঘটনাস্থলে আসেন রাজ্য পুলিশের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ মৌসুমী রক্ষিত। তিনি নিজে এবং জেলা পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন। পরে মৌসুমী বলেন, "বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এ সব ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করার পরেই জানা যাবে বিস্ফোরণের কারণ। এই মুহূর্তে আর কিছু বলা সম্ভব নয়।" এ দিকে সিআইডির বম্ব স্কোয়াডের একটি দলও এ দিন ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে। পাশাপাশি ঘটনাস্থলে বোমা বা বিস্ফোরক জাতীয় কিছু রয়েছে কিনা তা খোঁজার চেষ্টা করে। এ ছাড়া এ দিন রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের চতুর্থ ব্যাটালিয়ানের ডিজ়াস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের কর্মীরা এসেও ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখে। পৃথক ভাবে দমকলের আধিকারিকেরাও তদন্ত চালান এ দিন। পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, "ফরেন্সিক দল রিপোর্ট দিলেই বিস্ফোরণের কারণ পরিষ্কার হবে। রিপোর্ট দ্রুত মিলবে বলে আমরা আশাবাদী। ঘটনার তদন্ত চলছে।"
এ দিকে বড় ছেলে তাবরেজকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ হাবিবুর ও তাঁর স্ত্রী চাঁদনি বিবি। পরিবারের অন্য সদস্যরাও শোকে মুহ্যমান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy