কখনও হাতি, কখনও বা বাইসনের মতো বন্যপ্রাণী ঢুকে পড়ার ঘটনা ঘটেছে লোকালয়ে। শুক্রবারেও কোচবিহারের মাথাভাঙা ২ ব্লকে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছিল জোড়া বাইসন। এই পরিস্থিতিতে মাধ্যমিক পরীক্ষার দিনগুলিতে কোচবিহারের জঙ্গল লাগোয়া চারটি এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল বন দফতর। পরীক্ষার দিনগুলিতে সকাল থেকে ওই সব এলাকায় টানা টহলদারি করবেন বনকর্মীরা। সেই সঙ্গে ঘুম পাড়ানি গুলি ছোঁড়ায় অভিজ্ঞ বনকর্মীদেরও তৈরি রাখা হবে।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার তুফানগঞ্জ মহকুমার আটিয়ামোচড় , মাথাভাঙা মহকুমার পুঁটিমারি বক্সিরবস, মেখলিগঞ্জের জামালদহ ছাড়াও কোচবিহার সদর মহকুমার পাতলাখাওয়া এলাকায় ওই বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাধ্যমিকের দিনগুলিতে পরীক্ষার্থীদর নিরাপত্তা দিতে সংশ্লিষ্ট এলাকার যাতায়াতের রাস্তায় সকাল থেকেই নজরদারি শুরু হবে। সন্ধ্যে পর্যন্ত টানা নজরদারি ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে। কোচবিহারের এডিএফও বিজন কুমার নাথ বলেন, “জঙ্গল লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সে জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার রাস্তায় পরীক্ষার দিনে বাড়তি নজরদারি হবে।” ২০২৩ সালে জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকে শুঁড়ে জড়িয়ে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে আছাড় মেরে হত্যা করে হাতি। সেই ঘটনার কথা মাথায় রেখেই মাধ্যমিকের আগে সচেতন বন দফতর।
এ দিকে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কিছু দিন আগেই মাথাভাঙার গ্রামে হাতি ঢুকে পড়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। দিন দুয়েক আগেও ঘোকসাডাঙা এলাকার বড় শিমুলগুড়ি গ্রামে খাবারের খোঁজে ঢুকে পড়ে দলছুট দু’টি বাইসন। পরে বনকর্মীরা ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু করে সে দু’টিকে। শুক্রবার সকালেও ফের মাথাভাঙা ২ ব্লকে প্রেমেরডাঙা পঞ্চায়েতের ধারিমারা, কালপানি, চাপাগুড়ি খট্টিমারি শালমারা দ্বিতীয় খণ্ড এলাকায় জোড়া বাইসন দাপিয়ে বেড়ায়।। এ দিন, একটি বাইসনের গুঁতোয় আঠারোকোঠা কালপানি গ্রামের বাসিন্দা সহিদার রহমান (৪২) নামে এক ব্যক্তি জখম হয়েছে বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, স্থানীয়দের চিৎকার চেঁচামেচিতে বাইসন দুটি কখনও তোর্সার চরে, আবার কখনোও কলাবাগানে ছোটাছুটি করতে থাকে। বনকর্মীরা দীর্ঘক্ষণের চেষ্টার পরে শালমারা দ্বিতীয় খণ্ড এলাকায় ঘুমপাড়ানি গুলিতে বাইসন দুটিকে কাবু করতে সক্ষম হন। বন কর্মীদের অনুমান, ঘন কুয়াশায় দলছুট হয়ে বাইসনদুটি তোর্সা পেড়িয়ে পাতলাখাওয়া বনাঞ্চল ছেড়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছিল। মাধ্যমিকের মুখে এই ঘটনায় ওই সব এলাকার পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন অভিভাবকেরা।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)