Advertisement
E-Paper

‘মানুষখেকো’ সন্দেহে নজরে ২

একের পর-এক চিতাবাঘ ধরা পড়ার পর এবার ‘মানুষখেকো’র সন্ধানে তৎপরতা শুরু হল বন দফতরের অন্দরে৷ দক্ষিণ খয়েরবাড়িতে গত পাঁচদিনে ধরা পড়া চারটি চিতাবাঘকে রাখা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৫:৫০
খাঁচাবন্দি চিতাবাঘ। ফাইল চিত্র

খাঁচাবন্দি চিতাবাঘ। ফাইল চিত্র

একের পর-এক চিতাবাঘ ধরা পড়ার পর এবার ‘মানুষখেকো’র সন্ধানে তৎপরতা শুরু হল বন দফতরের অন্দরে৷ দক্ষিণ খয়েরবাড়িতে গত পাঁচদিনে ধরা পড়া চারটি চিতাবাঘকে রাখা হয়েছে। সূত্রের খবর, খাঁচাবন্দি ওই চিতাবাঘগুলির মধ্যে দু’টির উপরেই সবচেয়ে বেশি সন্দেহ বন আধিকারিকদের৷ খাঁচার মধ্যে ওই দু’টি চিতাবাঘ কেমন আচরণ করছে তা জানতে প্রতি মুহূর্তে তাদের উপর নজর রেখে চলেছেন বনকর্মীরা৷ একইসঙ্গে মাদারিহাটের চা বাগান এলাকায় আরও চিতাবাঘকে খাঁচাবন্দি করার চেষ্টাও চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

চা বাগান এলাকায় চিতাবাঘের উপদ্রব নতুন কোনও ঘটনা নয়৷ বিশেষ করে, প্রসবের সময় স্ত্রী চিতাবাঘেরা জঙ্গল লাগোয়া চা বাগানের নালা বা ঝোপঝাড়ে আশ্রয় নেয়৷ ফলে চিতাবাঘের সঙ্গে মানুষের সংঘাতের সম্ভবনা, সেই সময়টাতেই বেড়ে যায়।

গত ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে মাদারিহাটের চা বাগান এলাকায় চিতাবাঘ-মানুষের সংঘাত যে হারে বেড়েছে তাতে উদ্বেগ ছড়ায় নানা মহলে। গত দু’মাসে ওই ব্লকের বিভিন্ন চা বাগানে চিতাবাঘের হানায় তিন শিশু, কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এক বৃদ্ধ ও এক কিশোরকে জখম হতে হয়েছে। পাল্টা, একটি চা বাগানে বিষ মেশানো মাংস খাইয়ে দু’টি চিতাবাঘকে মেরে ফেলার অভিযোগও উঠেছে।

এই অবস্থায় মাদারিহাটের চা বাগানগুলিতে পনেরোটি খাঁচা পাতা হয়। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যার উদ্দেশ্য ছিল দু’টি। প্রথমত, চা বাগানে উপদ্রব চালানো চিতাবাঘগুলিকে বন্দি করা। দ্বিতীয়ত, মানুষ খেকো চিতাবাঘকে ধরা। দফতর সূত্রের খবর, গত দুই মাসে এই পনেরোটি খাঁচায় আটটি চিতাবাঘ ধরা পড়েছে।

এর মধ্যে দু’টি চিতাবাঘকে সবচেয়ে বেশি সন্দেহের তালিকায় রেখেছেন বন আধিকারিকরা। যার মধ্যে একটি গত শুক্রবার ধুমচিপাড়া চা বাগানে ধরা পড়ে। যেটি পূর্ণ বয়স্ক পুরুষ চিতাবাঘ। অপরটি, গত রবিবার গ্যারগেন্দা চা বাগানে ধরা পড়ে৷ সেটা অবশ্য পূর্ণ বয়স্ক স্ত্রী চিতাবাঘ।

বন দফতর সূত্রের খবর, প্রথমদিকে দফতরের আধিকারিকদের সন্দেহ হয়েছিল মানুষ খেকো চিতাবাঘটি আসলে পুরুষ চিতাবাঘ। তবে তার দু’দিন পর গ্যারগেন্দা চা বাগানে ধরা পড়া স্ত্রী চিতাবাঘটি যেভাবে খাঁচার ভিতরে টোপ হিসাবে রাখা মানবপুতুলকে ক্ষত-বিক্ষত করেছে, তা দেখে সেটির উপরেও সন্দেহ দানা বাঁধে আধিকারিকদের অনেকের।

সূত্রের খবর, দক্ষিণ খয়েরবাড়িতে রাখা আটটি চিতাবাঘের উপরেই এখন সারাক্ষণ নজর রেখে চলেছেন বনকর্মীরা। ‘মানুষ খেকো’ সন্দেহে বিশেষ নজর রয়েছে ওই দু’টির উপর। জলদাপাড়ার ডিএফও কুমার বিমল বলেন, “আমাদের সন্দেহের তালিকায় দু’টি চিতাবাঘ রয়েছে৷ ওই দু’টি চিতাবাঘের আচরণের উপর নজর রাখা হচ্ছে।”

মাদারিহাটের বিভিন্ন চা বাগানে নতুন করে আরও চিতাবাঘ ধরার চেষ্টা এখনও অব্যাহত রয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে নতুন নতুন নানা পদ্ধতি অবলম্বন করে খাঁচা পাতছিলেন বন আধিকারিকরা। তাতে সাফল্য এসেছে বলে বনকর্মীদের দাবি। খঁাচা পাতার কাজ এখনও চলছে। পাশাপাশি, চা বাগানগুলির জলের উৎস যেখানে যেখানে রয়েছে, সেখানেও এবার নজরদারি শুরু করেছেন বন দফতরের ট্র্যাঙ্কুলাইজেশন দলের কর্মীরা। যাতে করে কখনও জল খাওয়ার জন্য সেখানে গেলে চিতাবাঘগুলিকে কাবু করে ধরে ফেলা যায়।

বন দফতরের লঙ্কাপাড়া রেঞ্জের আধিকারিক বিশ্বজিৎ বিষই বলেন, “এই মুহূর্তে চারটি ট্রাঙ্কুলাইজেশন দল এই কাজে নিযুক্ত রয়েছে৷”

Wildlife Leopard Maneater Alipurduar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy