প্রাক্তন অস্থায়ী উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র। ফাইল চিত্র।
আচার্য সি ভি আনন্দ বোসের নির্দেশে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অস্থায়ী উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্রের বিরুদ্ধে তদন্তের কথা জানিয়ে বর্তমান উপাচার্য চিঠি দিয়েছিলেন বুধবার রাতে। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জবাব দিয়ে উপাচার্যের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ওমপ্রকাশ মিশ্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন, ‘স্ট্যাটুট’ বা ‘রেগুলেশন’ মেনে আচার্য এ ধরনের তদন্তের নির্দেশ দিতে পারেন না বলেও তাঁর অভিমত। ওই চিঠি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-পড়ুয়া মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
আচার্য তথা রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস ১ জুলাই উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্রের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেন বলে রাজভবন সূত্রে জানানো হয়। তৎকালীন উপাচার্য সঞ্চারী রায় মুখোপাধ্যায় সে ব্যাপারে পূর্বতন উপাচার্যকে কিছু জানাননি বলে দাবি। গত ১৭ জুলাই সঞ্চারীর বদলে উপচার্যের দায়িত্বে আসেন রথীন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অস্থায়ী প্রাক্তন উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্রকে চিঠি দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তের বিষয়টি জানান। তারই জবাবে প্রাক্তন উপাচার্য জানিয়েছেন, রথীন বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে উপাচার্য হিসাবে পরিচয় দিয়ে তাঁকে চিঠি দিলেও অস্থায়ী ভাবেই তিনি উপাচার্যের দফতরের কাজ চালানোর কর্তৃত্ব পেয়েছেন। আরও বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন, ‘স্ট্যাটুট’ বা ‘রেগুলেশন’ আচার্যকে এই কর্তৃত্ব দেয়নি যে, তিনি পূর্বতন উপাচার্যের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেবেন। গত ২০ মে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য পদে ওমপ্রকাশ মিশ্রের মেয়াদ ফুরিয়েছে। তার পরে, আইনের কোন ধারায় আচার্য উপাচার্যকে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন, তা জানতেও তিনি উৎসাহী বলে ওমপ্রকাশ জানান। বলা হয়েছে, ‘স্ট্যাটুট’-এ কোনও কিছু বলা না থাকলে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর বিরুদ্ধে তদন্ত করা যায় না বলে সুপ্রিম কোর্টের যে সিদ্ধান্ত রয়েছে, তা আচার্যকে যেন উপাচার্য রথীন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান।
চিঠির এই বক্তব্য নিয়ে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালের উপাচার্য কিছু বলতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘কেউ কিছু বললেই উত্তর দেওয়ার বিষয় নেই। তদন্ত নিয়ে কিছু বলারও নেই।’’
যদিও গোটা বিষয়টি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সম্পাদক অর্ধেন্দু বিশ্বাস বলেন, ‘‘কেউ যদি আচার্য এবং উপাচার্যকে চ্যালেঞ্জ করেন, তা হলে আচার্য বা উপাচার্যের দফতর তাঁদের মতো নিশ্চয়ই দেখবে। ওমপ্রকাশ মিশ্রকেও শর্তসাপেক্ষে উপাচার্যের দায়িত্ব সাময়িক ভাবে দেওয়া হয়েছিল। তখনও তো তা হলে, তিনি উপাচার্য ছিলেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়।’’ উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির সম্পাদক সুমন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, রাজ্য সরকার এবং রাজ্যপালের লড়াইয়ের আখড়া বিশ্ববিদ্যালয় হতে পারে না। তিনি বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার রক্ষা না করতে পারার জন্য এ সব ঘটছে। এটা পড়ুয়াদের পড়াশোনার জায়গা। এ সবে ক্ষতি হবে শিক্ষা ব্যবস্থার। এ সব বন্ধ হওয়া দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy