Advertisement
E-Paper

ঘরে দেহ এল চার পরিযায়ী শ্রমিকের

করোনাকালে লকডাউনে চাঁচল মহকুমার অন্তত ১০ জন শ্রমিক মারা গিয়েছেন। কেউ বাড়ি ফেরার পথে, কেউ ভিন্ রাজ্যে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায়।

রতুয়া

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:৫৬
অসহায়: ভিন্ রাজ্যে মৃত রতুয়ার দুই ভাই আজিজ ও হবিবুরের মা-বাবা। নিজস্ব চিত্র।

অসহায়: ভিন্ রাজ্যে মৃত রতুয়ার দুই ভাই আজিজ ও হবিবুরের মা-বাবা। নিজস্ব চিত্র।

ভিন্ রাজ্যে কাজে গিয়ে মৃত্যু হল মালদহের রতুয়ার চার পরিযায়ী শ্রমিকের। এদের মধ্যে রতুয়ার ভাদো এলাকার তিন শ্রমিক রয়েছেন। অন্য জনের বাড়ি রতুয়ার আশুটোলায়। বুধবার ট্রাক্টরে চেপে কাজে যাওয়ার সময় তা উল্টে ঘটনাস্থলেই তিন জন মারা যান। পরদিন হাসপাতালে মারা যান আরও একজন। পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, ভাদো এলাকায় মৃত তিন শ্রমিকের নাম আব্দুল আজিজ (৪০), হবিবুর রহমান (২৯) এবং আব্দুল মইনুদ্দিন (৪৫)। আশুটোলার মৃত শ্রমিকের নাম মহম্মদ জাহির (৩০)। হিমাচলপ্রদেশে একই সংস্থায় টাওয়ারের কাজ করতেন তারা। এদের মধ্যে আজিজ ও হবিবুর দুই ভাই। শুক্রবার দুপুরে দেহ এলাকায় ফিরতেই পরিজনদের পাশাপাশি এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে।

স্থানীয় পঞ্চায়েত ও মৃতদের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রত্যেকেই অভাবি পরিবারের। দীর্ঘদিন ধরেই ভিন্ রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতেন তারা। লকডাউনে দিল্লি থেকে ফিরে বাড়িতেই ছিলেন। পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হতেই গত নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে হিমাচলপ্রদেশে যান। সেখানে মোবাইল ফোনের টাওয়ার বসানোর কাজ করতেন। বুধবার দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মারা যান হবিবুর, মইনুদ্দিন ও জাহির। পরে হাসপাতালে মারা যান আজিজ।

করোনাকালে লকডাউনে চাঁচল মহকুমার অন্তত ১০ জন শ্রমিক মারা গিয়েছেন। কেউ বাড়ি ফেরার পথে, কেউ ভিন্ রাজ্যে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায়। এবার একসঙ্গে একই এলাকার চার শ্রমিকের মৃত্যুর জেরে আতঙ্কিত ভিন্ রাজ্যে থাকা শ্রমিকের পরিজনেরা। এলাকায় কাজ না মেলায় অভাবের তাড়নায় তাদের ঝুঁকি নিয়েও ভিন্ রাজ্যে যেতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

ভাদো বটতলা এলাকায় বাড়ি আজিজ, হবিবুরের এবং মইবুদ্দিনের। আজিজরা তিন ভাই। ছোট ভাই সাহেবজান আলিও শ্রমিক। বাড়িতে রয়েছেন আজিজের বৃদ্ধ বাবা, মা, স্ত্রী রুকসানা ও তিন নাবালক সন্তান। হবিবুরের স্ত্রী রুকসানাবিবি অন্তঃস্বত্ত্বা। একইসঙ্গে দুই ভাইয়ের মৃত্যুতে শোকে পাথর হয়ে গিয়েছে পরিবারের সবাই। মইনুদ্দিনেরও স্ত্রী ও তিন নাবালক সন্তান রয়েছে। আজিজের বাবা আব্দুল তোয়াব বলেন, ‘‘সব শেষ হয়ে গেল। ওদের আয়েই সংসার চলত। একসঙ্গে এভাবে দুই ছেলেকে হারাতে হবে ভাবিনি।’’

খবর পেয়েই এলাকায় গিয়ে পরিবারের পাশে দাঁড়ান জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক শেখ ইয়াসিন, জেলা পরিষদের স্থানীয় সদস্য হুমায়ুন কবীর। প্রত্যেককে ব্যাক্তিগত উদ্যোগে ২০ হাজার টাকা করে দেন ইয়াসিন। চাঁচলের মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল বলেন, ‘‘দুঃখজনক ঘটনা। প্রশাসনের তরফে নিয়ম মেনে ওদের সবরকম সাহায্য করা হবে।’’

migrant workers Malda Accident Death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy