Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Malda

ভোট ফুরোলেই হিমঘরে প্রতিশ্রুতি

গাজলের বাসিন্দা সুনীল দাস বলেন, “এখনও মনে আছে, পুরসভা ঘোষণার খবরে আমরা খুশি হয়ে আবির খেলেছি। মোড়ে-মোড়ে লাড্ডু বিলি করেছি। তার পরেও পঞ্চায়েত থেকে যাওয়ায়, খুব কষ্ট হয়।”

গাজলের ব্লক সদরেই নিকাশি এমনই রয়েছে। নিজস্ব চিত্র

গাজলের ব্লক সদরেই নিকাশি এমনই রয়েছে। নিজস্ব চিত্র

অভিজিৎ সাহা
মালদহ শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:০৬
Share: Save:

ঘোষণাই সার। কেটে গিয়েছে সাত বছর। এখনও পুরসভা হল না মালদহের গাজল। ফলে, গাজলে আরও এক বার পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি শুরু করল রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি প্রশাসনও।

শুধু পুরসভাই নয়, ঘোষণার পরেও কাজ না হওয়ার তালিকায় রয়েছে দমকল কেন্দ্র, বাস টার্মিনাসও। প্রশাসন উদ্যোগী হয়ে জমি দেখার কাজ শুরু করেছিল। তবে ওই পর্যন্তই। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে, প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন গাজলবাসী। তাঁদের আক্ষেপ, ভোটের আগে প্রকল্প ঘোষণা হয়। জমিও দেখা হয়। কিন্তু ভোট ফুরোলেই প্রতিশ্রুতি, ঘোষণা সব হিমঘরে চলে যায়।

গাজলের বাসিন্দা সুনীল দাস বলেন, “এখনও মনে আছে, পুরসভা ঘোষণার খবরে আমরা খুশি হয়ে আবির খেলেছি। মোড়ে-মোড়ে লাড্ডু বিলি করেছি। তার পরেও পঞ্চায়েত থেকে যাওয়ায়, খুব কষ্ট হয়।”

দীর্ঘদিনের দাবি মেনে ২০১৪ সালের ১১ জুন ১৫টি পঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত গাজলকে পুরসভা হিসেবে ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। পুরসভা ঘোষণা হওয়ায় গাজলে উৎসবও হয়। উড়েছিল আবিরও। সে রঙ ফিকে হয়েছে। গ্রামবাসীর স্বপ্নও যেন ফিকে হয়েছে।

কেন আটকে গাজল পুরসভা? ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, এলাকা চিহ্নিত থেকে শুরু করে জনগণনা সবই হয়েছিল। গাজল ১-এর ২১টি বুথ, মাজরা, সাহাজাদপুর, এবং গাজল-২ পঞ্চায়েতের দু’টি করে বুথ নিয়ে পুরসভা এলাকা চিহ্নিত হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী, পুরসভা এলাকার জন্য প্রয়োজন প্রায় ৩০ হাজার মানুষের বসবাস। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, “গাজলের ২৭টি বুথ মিলিয়ে মোট জনসংখ্যা ছিল ৩৫ হাজারেরও বেশি। এ ছাড়া, ওই এলাকা গুলির মধ্যে প্রচুর দোকান, সরকারি এবং বেসরকারি অফিস রয়েছে। ফলে, আয় হওয়ার ক্ষেত্রেও অসুবিধে নেই গাজলে।” সমস্ত কিছু উল্লেখ করে রাজ্যে প্রাথমিক রিপোর্টও পাঠানো হয়েছিল বলে দাবি প্রশাসনের কর্তাদের।

যানজটের সমস্যা থেকে শুরু করে পানীয় জল, নিকাশি নালা, রাস্তা, পথবাতির সমস্যা এলাকায় রয়েছে। এ ছাড়া, বাড়ি-বাড়ি শৌচাগার তৈরি থেকে আবর্জনা সাফাই নিয়েও গ্রামবাসীদের ক্ষোভ রয়েছে। তাঁদের দাবি, পুরসভা হলে নাগরিক পরিষেবার উন্নতি হবে। পঞ্চায়েতের তরফে সে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়, দাবি কর্তৃপক্ষের।

গাজলের বিধায়ক বিজেপির চিন্ময় দেব বর্মণ বলেন, “রাজ্য সরকার পুরসভা ঘোষণার নামে অনুষ্ঠান করে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করেছে। পুরসভার মতো গাজলে বাস স্ট্যান্ড, দমকলের প্রতিশ্রুতি পুরণ হয়নি।”

গাজলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের রেজিনা পারভিনের জবাব, “পুরসভা, বাস টার্মিনাস, দমকল কেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব নয়। প্রশাসন সে বিষয়গুলো নিয়ে দেখছে। রাস্তাঘাট, পানীয় জল, নিকাশি নালার উন্নয়ন হয়েছে। কেন্দ্রের ১০০ দিনের প্রকল্প বন্ধ, আবাসের টাকাও দিচ্ছে না। তার পরেও প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ করেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Malda gajal Panchayat Election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE