Advertisement
০৮ মে ২০২৪
Balurghat

বিপ্লবকে ‘গো ব্যাক’, কলেজে ছাত্র-সংঘর্ষ

বিকেল ৪টে নাগাদ বিপ্লব পরিচালন সমিতির বৈঠকে যোগ দিতে আইন কলেজে পৌঁছতেই আন্দোলনরত ছাত্রদের পক্ষ থেকে ‘বিপ্লব মিত্র গো ব্যাক’ স্লোগান ওঠে।

) বিপ্লব কলেজে আসতেই ‘গো ব্যাক’ স্লোগান। নিজস্ব চিত্র

) বিপ্লব কলেজে আসতেই ‘গো ব্যাক’ স্লোগান। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৩ ০৮:১৮
Share: Save:

কলেজের কর্তৃত্ব নিয়ে শাসক দলের নেতাদের মধ্যে ঠান্ডা লড়াইয়ের অভিযোগ ছিলই। এ বার কার্যত তার প্রতিফলন ঘটল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে। শনিবার দুপুরে বালুরঘাট আইন কলেজে সংঘর্ষে চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রের মাথা ফাটে। তাঁকে বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আহত দু’পক্ষের ছ’জন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়।

আইন কলেজে এ দিন পরিচালন সমিতির বৈঠক ছিল। কলেজ সূত্রের খবর, প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ অর্পিতা ঘোষ ওই কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র। দলের অন্দরে তাঁর ‘বিরুদ্ধ’ গোষ্ঠীর বলে পরিচিত একদল ছাত্র বিভিন্ন দাবিতে এ দিন কলেজে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেন।

কলেজ সূত্রের দাবি, সে সময় মন্ত্রীর ‘অনুগামী’ ছাত্রদের সঙ্গে তাঁদের বচসা বাধে। এর পরেই দু’পক্ষ ব্যাট, উইকেট নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে বালুরঘাট থানা থেকে বিরাট পুলিশ বাহিনী গিয়ে উত্তেজনা সামাল দেয়।

বিকেল ৪টে নাগাদ বিপ্লব পরিচালন সমিতির বৈঠকে যোগ দিতে আইন কলেজে পৌঁছতেই আন্দোলনরত ছাত্রদের পক্ষ থেকে ‘বিপ্লব মিত্র গো ব্যাক’ স্লোগান ওঠে। অপর গোষ্ঠী ‘বিপ্লব মিত্র স্বাগতম’ স্লোগান দিতে থাকেন। উত্তেজনা চরমে উঠলে পুলিশ বাহিনী দুই গোষ্ঠীর মাঝখানে দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

বিপ্লব অভিযোগ করেন, ‘‘এই আইন কলেজ যাতে বালুরঘাট থেকে উঠে যায়, তার চক্রান্ত হচ্ছে। বারবার গন্ডগোল করানো হচ্ছে।’’ তাঁর আরও দাবি, তৃণমূলের কেউ গো-ব্যাক স্লোগান দেয়নি। সিপিএম, আরএসপি এবং বিজেপির লোকেরা ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেন বলে বিপ্লবের দাবি। যদিও ওই তিন দলের নেতারাই বিষয়টি তৃণমূলের ‘অন্তর্দ্বন্দ্বের ফল’ বলে মন্ত্রীর দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, ‘‘বিপাকে পড়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’’

এ দিকে মন্ত্রীর ‘বিরুদ্ধ’ গোষ্ঠীর বলে পরিচিত ছাত্রদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে কলেজে অডিট হয় না। কলেজের সিসি ক্যামেরা অকেজো। পঠনপাঠনের পরিকাঠামো বেহাল। কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে কোনও সুরাহা হচ্ছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রের দাবি, ‘‘শনিবার কলেজ বন্ধ। অথচ, তার মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের অন্ধকারে রেখে পরিচালন সমিতির বৈঠক ডাকা হয়।’’ এর প্রতিবাদে এ দিন ধর্নায় বসলে বহিরাগতদের নিয়ে তাঁদের উপরে হামলা হয় বলেও ছাত্রটির অভিযোগ।

জখম এক ছাত্রের দাবি, ‘‘আমি গন্ডগোলের মধ্যে ছিলাম না। জোর করে ধরে নিয়ে গিয়ে উইকেট দিয়ে আমার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ চারটি সেলাই পড়েছে তাঁর মাথায়।

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জ্যোতিপ্রকাশ রায় বলেন, ‘‘আন্দোলনরত ছাত্রেরা মিথ্যা অভিযোগ করেছে। তা ছাড়া, কলেজে এখন ছাত্র সংসদ নেই। বিবদমান দু’দল ছাত্রের মধ্যে গন্ডগোল দেখে পুলিশকে খবর দিই।’’ পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে বলে তিনি দাবি করেন।

প্রাক্তন সাংসদ অর্পিতা ঘোষ বলেন, ‘‘কলেজে এ দিনের ঘটনা এবং সমস্যা নিরসনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে কথা হয়েছে।’’

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃণাল সরকারের দাবি, ‘‘নিজেদের মধ্যে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে আইন কলেজের ছাত্রদের ওই গোলমাল।’’ তবে বালুরঘাট আইন কলেজের নতুন পরিচালন সমিতি গঠনের জন্য শিক্ষা দফতরে তালিকা পাঠানো হয়েছে বলে মৃণাল জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Balurghat TMCP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE