Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সামসির জের, কড়া গৌড়বঙ্গও

সামসি কলেজ কান্ডে আগামী তিন দিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিলেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ পেলে অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানালেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপাল মিশ্র। তিনি বলেন, ‘‘কলেজে ঠিক কী হয়েছিল সেই রিপোর্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট পেলে তদন্ত কমিটি গঠন করে অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে আমরা কড়া পদক্ষেপ নেব। এমন ধরনের ঘটনা কখনও কাম্য নয়। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৫ ০২:২৮
Share: Save:

সামসি কলেজ কান্ডে আগামী তিন দিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিলেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ পেলে অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানালেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপাল মিশ্র। তিনি বলেন, ‘‘কলেজে ঠিক কী হয়েছিল সেই রিপোর্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট পেলে তদন্ত কমিটি গঠন করে অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে আমরা কড়া পদক্ষেপ নেব। এমন ধরনের ঘটনা কখনও কাম্য নয়। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক।’’ সামসি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনোজ ভোজ বলেন, ‘‘আমরা খুব শীঘ্রই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ঘটনা রিপোর্ট পাঠাব।’’

দুই শিক্ষিকাকে কলেজের মধ্যেই অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করার ঘটনায় শিক্ষামহলে নিন্দার ঝড় উঠেছে। অধ্যাপক সংগঠনগুলি থেকে শুরু করে বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষরাও এর তীব্র নিন্দা করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, অতীতে জেলাতে অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের ছাত্রদের হাতে হেনস্থা, মারধরের শিকার হতে হয়েছে। তবে সামসি কলেজের ঘটনা জেলার সমস্ত কলেজের ঘটনাকে ছাপিয়ে গিয়েছে বলে তাঁদের মত। এই বিষয়ে গৌড়বঙ্গ মহাবিদ্যালয়ের বাংলার শিক্ষিকা সুস্মিতা সোম বলেন, ‘‘আগে ছাত্রদের কাছে ধাক্কাধাক্কি খেয়েছি। হেনস্থার স্বীকার হতে হয়েছে। তবে এমন ভাষায় গালিগালাজ করার মতো বিষয় কখনও শুনেনি। ঘটনাটি খুবই নিন্দনীয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এক্ষেত্রে অভিযুক্ত ছাত্রটিকে শাস্তি দেওয়ার পাশাপাশি তাঁর কাউন্সিলিং করা উচিত।’’

দুই শিক্ষিকাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালি দেওয়ার তীব্র বিরোধিতা করেছেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষা চৈতালি চট্টোরাজও। তিনি বলেন, ‘‘ছাত্রেরা যে এমন ভাষা ব্যবহার করতে পারে তা ভাবাই যায় না। বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ কর্তৃপক্ষের উচিত ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখা।’’

বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের হাতে দীর্ঘ ক্ষণ ঘেরাও হতে হয়েছে অধ্যক্ষ, অধ্যাপকদের। বহু কলেজে তাঁদের হেনস্থা হতে হয়েছে। তবে ‘রেপ করিয়ে দেওয়ার’ হুমকির অভিযোগ শুনতে হয়নি। সামসি কলেজে পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে বের হতে বলায় দুই শিক্ষিকাকে ওই হুমকি দেয় টিএমসিপির ছাত্র নেতা তথা ওই কলেজের ছাত্র সংসদের সংস্কৃতির সম্পাদক তাজামুল হক।

শাসক দলের মদত পেয়েই ছাত্রেরা এমন বেপরোয়া হয়ে উঠছে বলে দাবি ওয়েবকুটার। ওয়েবকুটার জেলা সম্পাদক অধ্যাপক সৌহরাব আলি বলেন, ‘‘শাসক দলের মদত পেয়েই এমন বেপরোয়া হয়ে উঠছে ছাত্ররা। অধ্যপকদের মারধর এবং নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছে। তবে এমন হুমকি কখনও শুনতে হয়েছে বলে আমার মনে পড়ে না। আমরা অভিযুক্ত ওই ছাত্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’

ঘটনার নিন্দা করেছেন মালদহের ওয়েবকুপারের সদস্যেরাও। ওয়েবকুপারের জেলা আহ্বায়ক নরেশ রায় বলেন, ‘‘ওই কলেজে ঠিক কী হয়েছে, আমি বলতে পারব না। তবে এমন ঘটনাকে আমরা সমর্থন করি না। ঘটনাটি ঘটে থাকলে তা খুবই নিন্দনীয়। আর শাসক দলের মদতে এমন হচ্ছে অভিযোগ করাটা ঠিক নয়।’’

এই ঘটনা প্রসঙ্গে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা সমূহের নিয়ামক সনাতন দাস বলেন, ‘‘ওই ছাত্রটি পরীক্ষা দিতে কলেজে আসেনি। ফলে পরীক্ষাকেন্দ্রে তার থাকার কথা নয়। পরীক্ষা শুরুর আগে এবং চলাকালীন পরীক্ষাকেন্দ্রে যাতে বহিরাগতরা ঢুকতে না পারে সেই বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষকে নজর দিতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE