বৃহস্পতিবার কোচবিহারে সস্ত্রীক রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। নিজস্ব চিত্র।
এক দিনের কোচবিহার সফরে এসে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কড়া মন্তব্য করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তাঁর দাবি, সারা দেশে পশ্চিমবঙ্গের পরিচয় এখন রাজনৈতিক সংঘর্ষ ও প্রতিহিংসার কারণেই। পাল্টা হিসেবে রাজ্যপালকেও ‘বিজেপির এজেন্ট’, ‘পলিটিক্যাল সার্ভেন্ট’-এর মতো বাছা বাছা বিশেষণে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজ্যপাল কোচবিহারে আসেন। ঘটনাচক্রে এ দিনই আলিপুরদুয়ারে রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি দিলীপ ঘোষের গাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে। সে প্রসঙ্গে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা খুবই নিন্দনীয়। গোটা দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের পরিচয় রাজনৈতিক সংঘর্ষ ও প্রতিহিংসার কারণে। রাজনৈতিক হিংসা কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না। কারণ সরকারি কর্মীরাই আজ রাজনৈতিক কর্মীর কাজ করেন।’’ রাজ্য সরকারের কাজকর্ম তিনি জানতে পারছেন না বলে এ দিন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল।
রাজ্যপালও যেমন সুযোগ পেলেই রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেন, তৃণমূল নেতা-নেত্রীরাও তাঁকে পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়েন না। এ দিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি। চাঁছাছোলা ভাষায় কল্যাণ বলেন, ‘‘রাজ্যের এক নম্বর পাবলিক সার্ভেন্ট হলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। অথচ তিনিই সবচেয়ে বড় পলিটিক্যাল সার্ভেন্ট। উনি কাকে জ্ঞান দিচ্ছেন? উনি তো বিজেপির এজেন্ট। উনি বিজেপির সাংসদদের নিয়ে, গুন্ডাদের নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। উনি পলিটিক্যাল সার্ভেন্ট হয়ে কী করে জ্ঞান দিতে আসেন?’’
আরও পড়ুন: কাঁথির অধিকারী বাড়িতে ভোটকৌশলী প্রশান্ত কিশোর, ছিলেন না শুভেন্দু, কথা হল শিশিরের সঙ্গে
কখনও রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে, কখনও বা অন্য কোনও কারণে মাঝেমধ্য়েই রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের রাজভবনে ডেকে পাঠান রাজ্যপাল। তা নিয়ে শ্রীরামপুরের সাংসদের কটাক্ষ, ‘‘শুনুন রাজ্যপাল মশাই, আপনি মনে হয় সংবিধানের কিছুই জানেন না। জানেন না বলেই এই সমস্ত কথাবার্তা বলছেন। সকাল-বিকেল হোম সেক্রেটারি আর পুলিশ অফিসারদের ডাকার অধিকার আপনাকে কেউ দেয়নি।’’
আরও পড়ুন: বিধায়ক পদ থেকে আচমকা পদত্যাগ বেচারাম মান্নার, চিঠি দিয়ে এলেন স্পিকারকে
গোটা নভেম্বর মাসটাই রাজ্যপাল দার্জিলিঙে থাকবেন। তার মধ্যেই বৃহস্পতিবার তিনি সস্ত্রীক কোচবিহারে আসেন। এ দিন সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ তাঁরা কোচবিহার বিমানবন্দরে নামেন। সেখান থেকে রাসমেলা মাঠের পাশে পঞ্চানন বর্মার মূর্তিতে মাল্যদান করেন রাজ্যপাল। মদনমোহন মন্দিরে পুজো দেওয়ার পর তাঁরা কোচবিহারের রাজপ্রাসাদ পরিদর্শনে যান। রাজপ্রাসাদের মিউজিয়ামের উন্নয়নে তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান।
রাজ্যপালের এই লম্বা সফর নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি কল্যাণ। বলেন, ‘‘আপনি একটা অপদার্থ, অযোগ্য। আপনার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে। গিয়েছেন তো ওখানে গুন্ডাগিরি করতে। লজ্জা করে না আপনার?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy