Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
নদীতে মিশছে নয়নের জল

টানা বৃষ্টিতে ফুঁসছে নদী,দুর্ভোগে জলবন্দী মানুষ

টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার। জল বেড়ে চলেছে কোচবিহারের নদীগুলিতে। প্রশাসন সূত্রের খবর, কোচবিহারে তোর্সা ও তুফানগঞ্জে রায়ডাক ১ নদীর জল বাড়ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৬ ০৮:০৬
Share: Save:

টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার। জল বেড়ে চলেছে কোচবিহারের নদীগুলিতে। প্রশাসন সূত্রের খবর, কোচবিহারে তোর্সা ও তুফানগঞ্জে রায়ডাক ১ নদীর জল বাড়ছে। কালজানি, মানসাই, গদাধর, ঘরঘরিয়া, সুটুঙ্গা, তিস্তা নদীও রীতিমতো ফুঁসছে। কোচবিহার শহরের তোর্সা চর ও সংলগ্ন এলাকা ছাড়াও হরিণ চওড়া, টাকাগছ-রাজারহাট, মোয়ামারি, চান্দামারি সহ কিছু এলাকার কয়েকশো পরিবার জলবন্দি হয়ে পড়েছেন। রাতে পাহাড় ও সমতলে ফের প্রবল বৃষ্টি হলে কোচবিহারেও বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতি পুষ্পিতা ডাকুয়া বলেন, “ জেলার প্রায় সব নদীই ফুঁসছে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি।” কোচবিহারের সদর মহকুমা শাসক অরুন্ধতী দে জানান, নদী লাগোয়া ও নিচু কিছু এলাকায় বৃষ্টির জল জমেছে। ব্লক প্রশাসনের কর্তারা এলাকায় গিয়েছেন।

মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার প্রায় দিনভর কোচবিহার জেলাজুড়ে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। ফলে কোচবিহার শহরের সুনীতি রোড, কেশব রোড, স্টেশন রোড, ব্যাঙচাতরা রোড, কালিকাদাস রোড সহ বিভিন্ন এলাকায় জল জমে যায়। অমর তলা, নিউটাউনের কিছু অংশেও জল জমে যায়। ভোগান্তির মুখে পড়েন পথচারীরা।

বিরোধীদের অভিযোগ, কোচবিহার পুরসভার নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়নে মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে কাজ করা দরকার। তা হচ্ছে না বলেই বৃষ্টি হলে বিভিন্ন এলাকায় জল জমছে। অবশ্য পুরসভার বক্তব্য, নিকাশির উন্নয়নে অনেক কাজ হয়েছে। এখন আগের মত দীর্ঘসময় জল দাঁড়াচ্ছে না। বেশিরভাগ এলাকায় অল্প সময়ের মধ্যে জল নেমে যাচ্ছে। টানা প্রবল বৃষ্টি হলে বিক্ষিপ্তভাবে সমস্যা হয়।

মঙ্গলবার রাতে আলিপুরদুয়ার প্রায় ২৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। তাতেই শহরের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা জলবন্দী হয়ে পড়েন। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার হাসিমারায় ১৩২.৮০ মিলিমিটার, আলিপুরদুয়ারে ২৩৩.৮০ ও বানারহাটে ১২১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

শহরের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড, চাপরেরপাড় ১ গ্রামপঞ্চায়েতের দ্বীপচর, মধ্যপাড়া-সহ বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড কার্যত জলবন্দী। জেলা শহর আলিপুরদুয়ারের তিন দিকে রয়েছে ডিমা, কালজানি ও নোনাই নদী। আলিপুরদুয়ার পুরসভার চেয়ারম্যান আশিস দত্ত বলেন, “ শহরের জমা জল বের করতে সমস্যা হচ্ছে। নিকাশির লগ গেটগুলি বন্ধ। উল্টে নদীর জল ঢুকছে। ওই লগ গেটগুলি মেরামত করতে হবে। শহরে জমা জল বের করতে পাঁচটি পাম্প চালানো হয়েছে। নদীর চরে জল বাড়ায় বেশ কিছু বাসিন্দা বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।”

আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের বিডিও নরবু শেওয়াং শেরপা জানান, পশ্চিম জিৎপুর এলাকায় ডিমা নদীর জল বাড়ায় নদী পারাপার করতে সমস্যায় পড়েছেন বাসিন্দারা। সেখানে নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আলিপুরদুয়ার শহরের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রদীপ সাহা, শংকর কুন্ডুরা বলেন, ‘‘প্রতিবছর বর্ষায় ভোগান্তি বাড়ে। একরাত টানা বৃষ্টি হতেই এক হাঁটু জল জমে গিয়েছে এলাকায়। জল পেড়িয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। বৃষ্টি হতে থাকলে এই জল নামতে দু’দিন সময় নেবে।’’ আলিপুরদুয়ার অভিভাবক মঞ্চের সম্পাদক ল্যারি বসু বলেন, ‘‘প্লাস্টিক ও আবর্জনায় ভর্তি নিকাশি নালাগুলি। ফলে জল উপচে শহর জলবন্দী। নালাগুলিরও সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rain Monsoon
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE