Advertisement
০৬ মে ২০২৪

বৃষ্টির দাপটে অনিশ্চিত লক্ষ্মীর ঘরে আগমনও

বরুণদেবের রোষে এ বার ঘরে লক্ষ্মী আসাতেও বাধা! লক্ষ্মীপুজোর ঠিক আগে এ বছর এমন আশঙ্কাই তৈরি হয়েছে জলপাইগুড়িতে৷ টানা বৃষ্টির জেরে উত্তরবঙ্গের এই জেলার অনেক মৃৎশিল্পী এ বার হয় প্রতিমা গড়ছেন না, নয়তো সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছেন।

রোদের দেখা নেই। তাই গ্যাসের আগুনেই শুকোতে হচ্ছে লক্ষ্মীপ্রতিমা। জলপাইগুড়িতে। — সন্দীপ পাল

রোদের দেখা নেই। তাই গ্যাসের আগুনেই শুকোতে হচ্ছে লক্ষ্মীপ্রতিমা। জলপাইগুড়িতে। — সন্দীপ পাল

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৫১
Share: Save:

বরুণদেবের রোষে এ বার ঘরে লক্ষ্মী আসাতেও বাধা!

লক্ষ্মীপুজোর ঠিক আগে এ বছর এমন আশঙ্কাই তৈরি হয়েছে জলপাইগুড়িতে৷ টানা বৃষ্টির জেরে উত্তরবঙ্গের এই জেলার অনেক মৃৎশিল্পী এ বার হয় প্রতিমা গড়ছেন না, নয়তো সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছেন। যার জেরে জলপাইগুড়ির বাজারে এবার খড় বা পোয়ালের ওপর মাটি দিয়ে তৈরি লক্ষ্মী প্রতিমার যোগান যে অনেকটাই কম হবে তা বলছেন খোদ কারিগররাই ৷ ষষ্ঠীর দিন থেকেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি৷ চলছে এখনও। আর তাতেই এ বার সঙ্কট ঘনীভূত হয়েছে।

মৃৎশিল্পী জীবন পাল৷ মাশকলাইবাড়ির বাসিন্দা এই শিল্পী এ বার অনেকগুলি দুর্গা প্রতিমা তৈরি করেছেন৷ কিন্তু লক্ষ্মী প্রতিমা এ বার আর বিশেষ তৈরি করছেন না তিনি ৷ তার ছেলে বাবাই পালের কথায়, ‘‘যে হারে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে প্রতিমা তৈরি সম্ভব হচ্ছে না৷ তাই অনেক আগে যে দু-তিনজন অর্ডার দিয়েছিলেন তাদেরটাই এ বার করছি৷ বাকি আর কারও অর্ডার নিইনি৷’’ শহরের আরেক মৃৎশিল্পী রতন পালের কথায়, “প্রতি বছর খড় বা পোয়াল দিয়ে অনেকগুলি লক্ষ্মী প্রতিমা গড়ি ৷ কিন্তু এ বার যখন প্রতিমা শুকোতেই পারবো না তখন গড়ে লাভ কী হবে? তাই তিনটে প্রতিমা গড়ছি৷ ওই তিনটাও গড়তাম না, যদি আগে না বুঝেই সেগুলির তৈরির কাজ শুরু করতাম ৷ এমন আবহাওয়ার জন্য এ বার অনেক শিল্পীই সেভাবে প্রতিমা গড়ছেন না ৷’’

মাসকলাইবাড়ি এলাকার আরেক মৃৎশিল্পী উত্তম পাল বলেন, “যা পরিস্থিতি তাতে মনে হচ্ছে অনেককেই তাই ছাঁচের তৈরি লক্ষ্মী প্রতিমা কিংবা সরার ওপর নির্ভর করতে হবে ৷”

তবে জলপাইগুড়িতে ছাঁচের লক্ষ্মী প্রতিমা বা সরা যাঁরা বানান তাঁরাও যে ভাল অবস্থায় রয়েছেন তা-ও কিন্তু নয়৷ বড় শিল্পীদের মত তাঁদের ক্ষেত্রেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সেই বৃষ্টিই৷ অরবিন্দনগরের বাসিন্দা প্রবীণ মৃৎশিল্পী রাধেশ্যাম পাল বলেন, “প্রতি বার যে কয়েকটা প্রতিমা বা সরা বানাই, বৃষ্টির জন্য এ বার তার অর্ধেকের বেশী করতে পারিনি৷” আরেক মৃৎশিল্পী অখিলচন্দ্র পালও জানালেন, বৃষ্টির জন্য তিনিও এ বার গত বারের চেয়ে কম প্রতিমা ও সরা তৈরি করেছেন৷ তার কথায়, “না শোকানোর ফলে যেগুলি তৈরি করছি সেগুলিতে রঙ-ই করতে পারছি না ৷ নতুন করে আর গড়ি কী করে?”

ইতিমধ্যেই জলপাইগুড়ি শহরে লক্ষ্মী প্রতিমা ও সরার বাজার বসে গিয়েছে৷ কিন্তু বিক্রেতা শংকর পাল বা রঞ্জন বণিকদের কথায়, ‘‘দোকান প্রতি বারের মত প্রায় একই সংখ্যায় বসলেও, এ বার জোগানটা যেন একটু কমই মনে হচ্ছে৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rain Laxmi puja trouble
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE