Advertisement
E-Paper

ঐক্য রক্ষা করতে সই নেহাদেরও

বাবুপাড়ার বাসিন্দা তুলসি লামা তিন বছরের মেয়ে টুইঙ্কলকে নিয়ে এসেছিলেন সিটি সেন্টার ঘুরে ছুটির দিন কেনাকাটা করতে। সঙ্গে বোন পুজা এবং তাঁর আট বছরের মেয়ে প্রাচী।

সৌমিত্র কুণ্ডু

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৭ ০২:৪০
সুকনার কাছে পাহাড়ের দলগুলির ডাকে মানববন্ধন কর্মসূচি। নিজস্ব চিত্র।

সুকনার কাছে পাহাড়ের দলগুলির ডাকে মানববন্ধন কর্মসূচি। নিজস্ব চিত্র।

মাইকে গান বাজছে। গান বাজছে পাহাড়ে হিংসা থামিয়ে, বাংলার ঐক্য বজায় রাখার। একদিকে টাঙানো ফেস্টুনে সই করছেন নেহা সুব্বা, সুরভি গুপ্তা, তুলসি লামারা। সই করার পর রিমা দাস, দেবযানী হাজরা, বরণ কুলাচার্যরা তাঁদের হাতে সৌভ্রাত্বের রাখি তথা ‘ব্যান্ড’ পরিয়ে দিচ্ছেন। ঝিরঝিরে বৃষ্টি। গরমের মধ্যে স্বস্তি এনে দিয়েছে। তার মধ্যেই রবিবাসরীয় বিকেলে ‘ফ্রেন্ডশিপ ডে’-তে শিলিগুলির সিটি সেন্টারের সামনে এক দল তরুণ, তরুণীর এই কর্মসূচি বাংলাভাগের চেষ্টার বিরুদ্ধে পাহাড়, সমতল মিলেমিশে থাকার বার্তা ছড়িয়ে দিল।

বাবুপাড়ার বাসিন্দা তুলসি লামা তিন বছরের মেয়ে টুইঙ্কলকে নিয়ে এসেছিলেন সিটি সেন্টার ঘুরে ছুটির দিন কেনাকাটা করতে। সঙ্গে বোন পুজা এবং তাঁর আট বছরের মেয়ে প্রাচী। আবার দেবীডাঙার বাসিন্দা নেহার কাছে ঘুরতে এসেছেন বান্ধবী দার্জিলিঙের সুরভি গুপ্তা। তাঁরাও এ দিন শপিং সেন্টারে এসে সই সংগ্রহ অভিযানের জায়গায় ছিলেন। তাঁদের হাতে রাখি পরিয়ে দিলেন উদ্যোক্তারা। হিন্দিতে বুঝিয়ে দিলেন বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে, পাহাড় সমতল এক হয়ে থাকার বার্তা দিয়ে তাঁরা সই সংগ্রহ করতে অভিযান করছেন। তা শুনে একগাল হেসে নিজেরাই সই করতে এগিয়ে গেলে তুলসী, নেহা সুব্বারা।

তুলসীদেবীর কথা, ‘‘মিথ্যে অশান্তি ছড়ানো হচ্ছে। পাহাড়ে যা চলছে তা করে কী লাভ? হিংসার বাতাবরণ আমরা তো কেউই চাই না। সকলে মিলে শান্তিতে থাকাটাই তো শ্রেয়।’’ যা শুনে হাতহাতি দিয়ে উঠলেন দাঁড়িয়ে থাকা অনেকেই।

শিলিগুড়িতে থাকা পাহাড়ের বাসিন্দা অমন তামাঙ্গ, বিনয় গৌতম, উইলিয়াম শেরপাদের মতো অনেকেই সই সংগ্রহ অভিযানে সামিল হয়ে সই করেন। রাখি পরলেন। পাহাড় সমতল এক হয়ে থাকা দরকার বলেই জানিয়ে দিলেন। উইলিয়াম বলেন, ‘‘সকলে মিলে এক থাকার বিষয়টি পাহাড়ে যারা আন্দোলন করছে তাদের বোঝা উচিত।’’

জয় বাংলা নামে শিলিগুড়ির ওই তরুণ-তরণীরা এক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন জায়গায় সই সংগ্রহ অভিযান করছেন। এ দিন সন্ধ্যাতে শিলিগুড়ির মাটিগাড়ায় ওই শপিং সেন্টারের সামনে ফেস্টুন, মাইক নিয়ে হাজির প্রদীপ দাশগুপ্ত, রিমা দাস, রায় চৌধুরী, অভিজিৎ ভট্টাচার্য, দেবারতি মিশ্রদের মতো অন্তত ২০ জন। মেঘলা আকাশ বৃষ্টির জন্য খোলা আকাশের নিচে সই সংগ্রহ অভিযান শুরু করতে দেরি হয়।

বৃষ্টি কমলে পৌনে সাতটা নাগাদ ফেস্টুন টাঙানো মাত্রই তা দেখে নাসিরুদ্দিন মণ্ডল, তাঁর স্ত্রী নাসিমা, জয়িতা চক্রবর্তী, শম্পা সিংহ, জয়তী ভৌমিকরা এগিয়ে যান সই করতে। রিওয়াজ রাই, সিদ্ধার্থ রাই, বিনয় গৌতমদের মতো অনেকেই শপিং সেন্টারে ঢোকার মুখে ওই কর্মসূচি দেখে দাঁড়িয়ে পড়েন।

ক্রমেই আনাগোনা বাড়তে থাকে। এক ঘন্টার মধ্যেই ফেস্টুন ভরে ওঠে বাসিন্দাদের সইতে। দ্বিতীয় ফেস্টুন টাঙানো হয় সই সংগ্রহে। উদ্যোক্তাদের অন্যতম প্রদীপ দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘সই সংগ্রহে ভাল সাড়া মিলেছে এদিন। পাহাড়বাসীদের অনেকেই সামিল হয়েছেন। তাঁরাও যে পাহাড়ে অশান্তি চান না এদিন তাঁদের কথায় স্পষ্ট।’’

Human chain program Siliguri unity
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy