তৎপরতা: পরিবেশবান্ধব বাজি কেনার ভিড়। নিজস্ব চিত্র।
বাজির প্যাকেটে নেই কিউআর কোড। প্যাকেটের উপর লেখা ‘গ্রিন’ কথাটি দেখিয়ে বিক্রেতা জানালেন, এটাই পরিবেশবান্ধব বাজি। এগুলিই তো বিক্রি হচ্ছে। শিলিগুড়ি মহাবীরস্থান বাজারের একটি পাইকারি বাজি দোকানের ছবি। মঙ্গলবার সেখান থেকে শিলিগুড়ি এবং উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় খুচরো বাজি বিক্রেতাদের অনেকে বাজি নিয়েছেন। একান্তে তাঁদের দাবি, সাধারণ ক্রেতাকে বোঝাতে পারলেই হল। পোড়ানোর পরে তো আর কেউ যাচাই করতে যাবেন না পরিবেশবান্ধব কি না?
ঠিক একই ভাবে জলপাইগুড়িতেও এ দিন দেদারে বিক্রি হয়েছে বাজি। কিন্তু সেইসব বাজি পরিবেশবান্ধব কিনা, তা দেখার কোনও নজরদারি ছিল না প্রশাসনের তরফে। জলপাইগুড়িতে দোকান খোলার আগেই গ্রামের একাধিক ছোট ছোট ব্যবসায়ী বাজি কিনতে দিন বাজারের পাইকারি বাজির দোকানে ভিড় করলেন। অন্যদিকে, মোটা টাকার বিনিময়ে আতশবাজির আড়ালে একাংশ বাজি ব্যবসায়ী শব্দবাজি বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ। যদিও জেলা পুলিশের দাবি, তাদের বিশেষ দলের নজরদারি চলছে।
শিলিগুড়ির মহাবীরস্থানের এক বাজি ব্যবসায়ীর দাবি, তাঁরা গত বছর থেকে পরিবেশবান্ধব বাজি দোকানে তুলেছিলেন। সেগুলিতে কিউআর কোড ছিল না। এ বছর নতুন করে পরিবেশবান্ধব বাজিতে কিউআর কোড দেওয়া হয়েছে। গত বছরের বাজিও পরিবেশবান্ধব। কিছু অবৈধ ব্যবসায়ীর জন্য তো বৈধ বাজি বিক্রি বন্ধ হতে পারে না। তিনি বলেন, ‘‘অনেকে অর্ডার দিয়ে রেখেছিলেন। অনুমতি মিলতেই দ্রুত বাজারে পরিবেশবান্ধব বাজি ছেয়ে গিয়েছে।’’ বিধান মার্কেট, নিবেদিতা মার্কেট থেকে জংশন, প্রধাননগর এলাকার কিছু দোকানেও এমন বাজি বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ। নিবেদিতা মার্কেটের একটি বাজির দোকানে চকলেট বোমা চাইলে দোকানের ভিতরে যেতে বলা হয়। কিন্তু ভিড়ের মধ্যে দিতে চাননি ওই বিক্রেতা। সোমবার পরিবেশবান্ধব বাজিতে ছাড় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার এক ধাক্কায় এত বাজি এল কী ভাবে সে নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
জলপাইগুড়ির বাজি ব্যবসায়ীদের দাবি, অল্প টাকার বাজি ব্যবসায় বিনিয়োগ করলে লাভ বেশি। এই কারণে অসংখ্য ব্যবসায়ী বাজি ব্যবসায় যুক্ত হয়েছেন।
পরিবেশপ্রেমীদের দাবি, পরিবেশবান্ধব বাজি কোনটা তা সঠিক যাচাই হচ্ছে না। সাধারণ ক্রেতাদের পক্ষে অনেকে অবৈধ বাজি ধরতেও পাচ্ছেন না। পরিবেশপ্রেমী সংস্থা ন্যাফের কোঅর্ডিনেটর অনিমেষ বসু জানান, কিউআর কোড স্ক্যান করে বাজিতে কোন রাসায়নিকের পরিমাণ কেমন রয়েছে তা অনেকের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। ফলে অবৈধ বাজিতে পরিবেশ দূষণ বাড়বে। আগাম সচেতন থাকতে হবে সকলকেই। তিনি বলেন, ‘‘অবৈধ বাজি বন্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’
জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পরিবেশবান্ধব বাজি পোড়ানো যাবে। এর বাইরে শব্দবাজি যাঁর কাছ থেকে পাওয়া যাবে গ্রেফতার করা হবে। বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, বাজি বাজেয়াপ্ত হয়েছে।’’ (প্রতিবেদন: নীতেশ বর্মণ ও বিল্টু সূত্রধর)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy