রেলগেটে আটকে পড়া গাড়ির লাইন। নিজস্ব চিত্র।
তখন সকাল সাড়ে ৯টা। নিউ কোচবিহার হয়ে দিনহাটার দিকে যাচ্ছে উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস। অন্তত পক্ষে মিনিট বারো লেভেল ক্রসিংয়ের গেট পড়ে রয়েছে। দু'পাশে দীর্ঘ গাড়ির লাইন। অসংখ্য বাইক, টোটো, সাইকেল আটকে। যখন রেলগেট খুলে গেল, সেই সময় শুরু হল
যানজট। আরও অন্ততপক্ষে মিনিট কুড়ি। সব মিলিয়ে আধ ঘণ্টারও বেশি সময় আটকে রইলেন পথচলতি মানুষ। কোনও কোনও সময় ওই যানজট এমন জায়গায় পৌঁছয় যে এক ঘণ্টাতেও রাস্তা খালি হয় না। এখানেই শেষ নয়, ঘণ্টা খানেকের ফারাকে আরও অন্ততপক্ষে একটি ট্রেন (কোনও-কোনও দিন দুটি) ওই লাইন দিয়ে যায়। ফলে কারও স্কুলে পৌঁছতে দেরি, কারও বা অফিসে ঢুকতে।
কোচবিহার শহরে প্রবেশের মুখে হরিণচওড়ায় এই সমস্যা নিত্য দিনের। কোচবিহারে প্রবেশের মুখে পাঁচটি রাস্তায় এমন পাঁচটি লেভেল ক্রসিং রয়েছে। তার মধ্যে হরিণচওড়া ও রেলঘুমটি ব্যস্ততম। ওই দুটি পথে সব থেকে যানজট হয়।
এর বাইরেও বিবেকানন্দ স্ট্রিট, ব্যাংচাতরা রোড এবং পান্থশালা রোডে একটি করে রেলগেট রয়েছে। সেখানেও একই সমস্যা। ওই লেভেল ক্রসিংগুলিতে উড়ালপুলের দাবিতে সরব হয়েছেন বাসিন্দারা। বিশেষ করে হরিণচওড়া ও রেলঘুমটিতে খুব দ্রুত উড়ালপুলের দাবি উঠেছে। নিউ কোচবিহার থেকে যে ট্রেন দিনহাটা যায়, এই প্রত্যেকটি স্টেশন পার হয়েই সেই ট্রেন চলাচল করে। দিনহাটা, মাথাভাঙা, মেখলিগঞ্জ মহকুমা থেকে কোচবিহার শহরে যাতায়াতে হরিণচওড়ার ওই গেট পার হতে হয়।
এ ছাড়াও, দূরপাল্লার বেশির ভাগ ট্রাক শিলিগুড়ি, চ্যাংরাবান্ধা হয়ে ওই হরিণচওড়া, রেলঘুমটির রেলগেট পার হয়েই কোচবিহার শহর হয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতে যাতায়াত করে। আবার তুফানগঞ্জ মহকুমা বা অসম থেকে কোচবিহার শহরে যাতায়াত করতে রেলঘুমটি রেলগেট পার হতে হয় যে কোনও গাড়িকে।
ঘুঘুমারি থেকে প্রতিদিন কোচবিহার শহরে যাতায়াত করেন সঞ্জীব রাজভর, আলমগীর হোসেনরা। তাঁরা বলেন, ‘‘প্রতিদিন নানা কাজে কোচবিহার শহরে যাতায়াত করতে হয়। বিশেষ করে ছেলেমেয়েদের স্কুলে নিয়ে যেতে হয়। রেলগেটের জন্য অনেকটা সময় হাতে রেখেই আমাদের বেরোতে হয়।’’ কোচবিহার অভিভাবক মঞ্চের সভাপতি শিবেন রায় বলেছেন, ‘‘স্থানীয় মানুষের তো প্ৰতিদিন অসুবিধের মুখে পড়তে হয়ই, এ ছাড়া নানা জায়গা প্রচুর মানুষ নানা কাজে যাতায়াত করেন। রেলগেটের জন্য আটকে পড়ে অসুবিধের মুখে পড়তে হয় তাঁদের।’’
উড়ালপুলের দাবি নিয়ে একমত হলেও শাসক-বিরোধীদের মধ্যে দড়ি টানাটানি রয়েছে। কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভার মধ্যেই কোচবিহার শহর এলাকা। ওই বিধানসভার বিধায়ক বিজেপির নিখিলরঞ্জন দে। তিনি বলেছেন, ‘‘হরিণচওড়া ও রেলঘুমটিতে উড়ালপুলের অত্যন্ত প্রয়োজন। সে প্রসঙ্গ বিধানসভায় তুলেছি। কিন্তু সেখানে উড়ালপুল করতে হলে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। রাজ্য তা না করাতেই উড়ালপুল হচ্ছে না।’’ কোচবিহারের পুরপ্রধান তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেছেন, ‘‘উড়ালপুল না থাকায় যানজটের সমস্যা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার ও রেল কোনও সদর্থক ভূমিকা নিচ্ছে না। শহর থেকে কিছু দূরে ডোডেয়ার হাটে একটি উড়ালপুল অর্ধেক কাজ হয়ে পড়ে রয়েছে। সেই কাজও আর হচ্ছে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy