Advertisement
০৯ মে ২০২৪
tea business

চায়ের শহরে মেয়েদের হাতে তৈরি ‘এবং চা’

হোম সূত্রের খবর, ৬-১৮ বছর বয়সের মেয়েদের এই হোমে রাখা হয়। হোমের আবাসিকদের এক বড় অংশ কেউ পাচারের শিকার হয়েছিল, আবার কেউ বা সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপের সূত্রে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করে পরে সব হারিয়ে এখানে আসতে বাধ্য হয়েছিল।

অজুর্ন ভট্টাচার্য 
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২০ ০৫:৪৯
Share: Save:

চায়ের শহর বলে পরিচিত জলপাইগুড়ি। ১৯৫২ সালের অক্টোবর মাসে লন্ডনের টাইমস পত্রিকায় চা নগর হিসেবে জলপাইগুড়ির নাম প্রকাশিত হয়েছিল, জানান অনেক চা-বিজ্ঞই। সেই চায়ের শহরেই এ বারে ‘এবং চা’ শিরোনামে অনুভব হোমের মেয়েদের স্বনির্ভর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনুভব সঙ্কল্প এবং চর্যাপদ সাংস্কৃতিক সংস্থার তরফে এই উদ্যোগ। নানা স্বাদের চা ও মুখরোচক খাবারের সম্ভার থাকবে এই আসরে। সঙ্গে থাকবে নানা স্বাদের বই। একই সঙ্গে এখানে মিলবে হোমের আবাসিকদের হাতে তৈরি জেলার বিভিন্ন জনজাতি গোষ্ঠীর গয়না ও বস্ত্র সামগ্রীও।

হোম সূত্রের খবর, ৬-১৮ বছর বয়সের মেয়েদের এই হোমে রাখা হয়। হোমের আবাসিকদের এক বড় অংশ কেউ পাচারের শিকার হয়েছিল, আবার কেউ বা সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপের সূত্রে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করে পরে সব হারিয়ে এখানে আসতে বাধ্য হয়েছিল।

হোমের এই আবাসিকদের স্বনির্ভর করার উদ্দেশ্য নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে ‘অনুভব সঙ্কল্প’ স্বনির্ভর গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীর সদস্যরা নানা ধরনের হাতের কাজ করছে বলে দাবি হোম কর্তৃপক্ষের। প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ব্যবহার রুখতে হোমের মেয়েরা নিজেদের হাতে তৈরি কাপড়ের ব্যাগ বাজারে নিয়ে এসেছে। এই ব্যাগও মিলবে ‘এবং চা’-এর স্টলে।

হোমের আবাসিক আফসানা পরভিন বলেন, ‘‘১৮ বছর বয়সের পর আমাদের তো আর এই হোমে রাখা হয় না। তাই হাতের কাজ শিখে স্বনির্ভর হতে পারলে আমরা নিজেরাই নিজেদের মতো করে বাঁচতে পারব। এই কাজ শিখতে পেরে আমরা তাই খুশি।’’

জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের ‘কর্মতীর্থ’ সরকারি বিক্রয় কেন্দ্রের দোতলায় ‘এবং চা’-এর স্টল ১৪ মার্চ বিকেল থেকেই চালু করা হবে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন।

অনুভব হোমের সমন্বায়ক দীপশ্রী রায় বলেন, ‘‘চর্যাপদ সাংস্কৃতিক সমবায় সংস্থা এগিয়ে এসে অনুভব সংকল্পের হাত ধরেছে। বড় আশাবাদী আমি। একই সঙ্গে খুশিও। কারণ, নিজের পায়ে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার পাশাপাশি একটি রুচিশীল সাংস্কৃতিক পরিসরও পাবে আমাদের আবাসিকেরা।’’

চর্যাপদ সাংস্কৃতিক সংস্থার তরফে শৈবাল বসু বলেন, ‘‘শুধুমাত্র গান, নাটক, আবৃত্তি— এ সব ললিতকলা হলেও মানুষের ভাল থাকার সাধনাটাও বড় সংস্কৃতি। এই আবাসিকদের স্বনির্ভর করার উদ্দেশ্যেই আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি।’’

চা চর্চার এমন পরিসর জলপাইগুড়িকে ঋদ্ধ করবে, মনে করছেন শহরবাসীরাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tea business women empowerment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE