Advertisement
E-Paper

দুলাল-খুনে ৫০ লক্ষের সুপারি! তৃণমূলের সদর সভাপতি ও তাঁর শাগরেদই ‘মূল চক্রী’, জানাল পুলিশ

২ জানুয়ারি মালদহের ইংরেজবাজার শহরের ঝলঝলিয়ার কাছে নিজের কারখানার সামনেই খুন হন দুলাল সরকার। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, প্রাণ বাঁচাতে কারখানায় ঢুকে পড়েছিলেন তৃণমূল নেতা।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:৫৭
তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার (মাঝখানে) খুনে মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি (বাঁ দিকে)। জানালেন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার (ডান দিকে)।

তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার (মাঝখানে) খুনে মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি (বাঁ দিকে)। জানালেন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার খুনে ‘মূল চক্রী’ তৃণমূলের মালদহ শহরের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি এবং তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ স্বপন শর্মা। ইংরেজবাজারের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলরকে খুনের জন্য ৫০ লক্ষ টাকার সুপারি দেওয়া হয়েছিল। বুধবার এমনই জানালেন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার।

পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, নরেন্দ্রনাথের সঙ্গে দুলালের গন্ডগোলের কথা। খুনের নেপথ্যে আর্থিক লেনদেনের বিষয় উঠে এসেছে। যদিও কোন বিষয়ে ওই টাকার লেনদেন হয়, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বুধবার নরেন্দ্রনাথ এবং স্বপনকে আদালতে হাজির করানো হলে তিন দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। আদালতে পুলিশ জানিয়েছে, টাকার লেনদেন, ফোনের কল রেকর্ডিং ইত্যাদি দেখে ওই দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তের প্রয়োজনে দু’জনকে হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন। আদালতে সরকারি আইনজীবী দেবজ্যোতি পাল বলেন, ‘‘এটা রাজনৈতিক খুন।’’

তৃণমূল নেতা নরেন্দ্রনাথ এবং স্বপনের আইনজীবীরা আদালতে জানান, তাঁদের মক্কেলরা শারীরিক ভাবে অসুস্থ। তাই তাদের জামিন মঞ্জুর করা হোক। যদিও আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক। সরকারি আইনজীবী জানান, দুলাল সরকার খুনের ঘটনায় আরও তথ্য সংগ্রহ করতে ওই দু’জনকে হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন ছিল। আদালত সেই আবেদন মেনেছে।

তৃণমূল নেতা খুনে এ পর্যন্ত সাত জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম জানান, পাঁচ ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদের পর নরেন্দ্রনাথকে থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তাঁকে এবং স্বপনকে মঙ্গলবার রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। সকালে দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়। সুপ্রতিম বলেন, ‘‘স্বপন এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী। বোমাবাজি, খুন, দাঙ্গাহাঙ্গামায় তাঁর নামে অজস্র অভিযোগ রয়েছে। তিনি এবং নরেন্দ্রনাথ এই ঘটনার (দুলাল খুনে) মূল চক্রী ছিলেন। কিন্তু কী কারণে তাঁরা টাকা দিয়েছিলেন, এখনও জানা যায়নি। এই খুনের জন্য ৫০ লক্ষ টাকার বরাত দেওয়া হয়েছিল। মোট চার দুষ্কৃতীকে ওই টাকা দেওয়া হয়েছিল। তাদের মধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি দু’জন এখনও পলাতক।’’

পুলিশ জানিয়েছে, তৃণমূল নেতাকে খুনের জন্য আর এক তৃণমূল নেতা কেন চক্রান্ত করেছিলেন, তা স্পষ্ট নয়। সুপ্রতিম বলেন, ‘‘এই মামলার দ্রুত চার্জশিট দেওয়ার চেষ্টা করব আমরা। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আর ৫০ লক্ষ টাকার ‘ডিল’ হলেও ওই টাকার পুরোটা দেওয়া হয়েছে কি না, সেটাও দেখা হচ্ছে।’’

দুলালের খুনের বিষয়ে ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী জানান, তৃণমূলের মালদহ (শহর) সভাপতি নরেন্দ্রনাথ মূল অভিযুক্ত। তিনি এ-ও জানান, অনেক আগেই নরেন্দ্রনাথ দুলালকে প্রাণে মেরে ফেলার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। এলাকার দখল নিয়ে দুই নেতার বিরোধ ছিল বলে দাবি করেন তিনি। আবার আদালতে ঢোকার সময়ে কৃষ্ণেন্দুনারায়ণকেই ‘মূল চক্রী’ বলেন ধৃত নরেন্দ্রনাথ। তিনি দাবি করেন, তাঁকে ফাসানো হচ্ছে। দুলালের খুনের নেপথ্যে রয়েছেন ‘বড় মাথারা’।

Dulal Sarkar Murder Case arrest police Supratim Sarkar tmc leader arrested
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy