Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

অনুমতি নেই! ক্রসিং তুলতে চাপ

জলপাইগুড়িতে এমন ৭০টি রেল ‘ক্রসিং’ রয়েছে। যেগুলিতে কোনও প্রহরী নেই, নেই রেলগেটও।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২০ ০৫:৫৬
Share: Save:

রেল গেট নেই, কিন্তু লাইনের উপর দিয়ে পিচ বা মাটির রাস্তা রয়েছে। সেখান দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন পথচারীরা, চলে যানবাহনও। রেলগেট নেই এমন সব ‘ক্রসিং’ বন্ধ করে দিতে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিল রেল। তা নিয়েই এ বার টানাপড়েন শুরু হয়েছে রেল এবং জেলা প্রশাসনের মধ্যে।

জলপাইগুড়িতে এমন ৭০টি রেল ‘ক্রসিং’ রয়েছে। যেগুলিতে কোনও প্রহরী নেই, নেই রেলগেটও। রেলের দাবি, স্থানীয় প্রশাসনই রেললাইনের উপর দিয়ে রাস্তাগুলি তৈরি করেছে। তাই সেই রাস্তা বন্ধ করতে হবে জেলা প্রশাসনকেই। রেলের দাবি, জেলা প্রশাসন প্রস্তাব পাঠালে ওই ক্রসিংগুলির প্রতিটি ক্ষেত্রেই তৈরি করে দেওয়া হবে আন্ডারপাস। কিন্তু আন্ডারপাস তৈরির টাকা দিতে হবে জেলা প্রশাসনকেই। জেলা প্রশাসনের দাবি, রেলের দাবি পুরোপুরি অযৌক্তিক। ওই পথগুলি বন্ধ করা কোনওমতেই সম্ভব নয়। জেলা প্রশাসনের দাবি, প্রয়োজনে রেল ওই ক্রসিংগুলিতে গেট বসাক।

শুধু জলপাইগুড়ি নয়। এমন অসংখ্য রেল ক্রসিং রয়েছে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং কালিম্পঙেও। যেগুলি রেলের অনুমোদিত নয় বলে দাবি। দুর্ঘটনা এড়াতে ক্রসিং এলাকা দিয়ে ধীরে গাড়ি চালানোর নির্দেশ দেওয়া থাকে চালকদের। রেলের দাবি, ওই ক্রসিংগুলি না থাকলে জলপাইগুড়ি থেকে উত্তরপূর্ব ভারতের সঙ্গে সংযোগরক্ষাকারী ট্রেনের গতি বৃদ্ধি পাবে। ওই ক্রসিং উঠে গেলে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও কমবে বলে দাবি। উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, “মোট ২১৩টি অনুমোদনহীন রেল ক্রসিং রয়েছে। এর কোনওটাই রেল তৈরি করেনি। স্থানীয় ভাবে তৈরি হয়েছে। জেলাপ্রশাসনকে সেগুলিকে দ্রুত বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। যাতায়াতকারীদের নিরাপত্তা নিয়েই আমরা ভাবছি। এই পথগুলি বন্ধ হলে দুর্ঘটনা ঘটনার আশঙ্কা থাকবে না।”

জেলা প্রশাসনের পাল্টা দাবি, রেল অযৌক্তিক ভাবে পুরো দায়ভার জেলা প্রশাসনের উপরে চাপিয়ে দিয়েছে। রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলে এলাকায় বিক্ষোভ হবে বলে দাবি প্রশাসনের। প্রশাসনের দাবি, রাস্তা বন্ধ করলে পুরো পরিস্থিতির দায় নিতে হবে তাদের। রেল সুকৌশলে প্রশাসনের ঘাড়ে এটা চাপাতে চাইছে বলে দাবি। এক একটি আন্ডারপাস তৈরি করতে এক-দেড় কোটি টাকা প্রয়োজন হয়। জলপাইগুড়িতে ৭০টি প্রহরীবিহীন ক্রসিং রয়েছে। এত টাকা প্রশাসনের পক্ষে বরাদ্দ করা সম্ভব নয় বলে প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক অভিষেক তিওয়ারি বলেন, “রেলের একটি চিঠি আমরা পেয়েছি। তার বিষয়বস্তু আমরা খতিয়ে দেখছি।”

এর আগে জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং মেল তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছিল জেলা প্রশাসন। রেলকে চিঠিও পাঠানোর কথা জানিয়েছিল প্রশাসন। এ বার রেল অবৈধ ক্রসিং বন্ধ করতে পাল্টা চাপ দিল জেলা প্রশাসনকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Level Crossing Indian Railways Jalpaiguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE