Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
শিলিগুড়ি পুরভোট

বিজেপিতেও বিক্ষোভ প্রার্থী ঘোষণার পর

প্রার্থী ঘোষণার পরে তৃণমূলে নেতা-কর্মীদের ক্ষোভ অচেনা নয়। এ বার সেই ক্ষোভের ছায়া পড়ল বিজেপিতেও। শনিবার পুরভোটের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরে সকাল থেকে বিক্ষোভ, ঘেরাও এমনকী রাতারাতি দলবদলও দেখল শিলিগুড়ি। বিজেপির ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের তুমুল বিক্ষোভের মুখে ঘণ্টাখানেক ঘেরাও হয়ে থাকলেন দলের রাজ্য সম্পাদক বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী এবং দার্জিলিং জেলা সভাপতি রথীন বসু। বিশ্বপ্রিয়র গাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভও চলল বেশ কিছুক্ষণ। পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে দেখে শিলিগুড়ি জার্নালিস্টস ক্লাবে ছুটে আসে পুলিশ।

শনিবার বিজেপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরেই শিলিগুড়ি জার্নালিস্ট ক্লাবের সামনে শুরু হয়ে যায় কর্মী-সমর্থকদের একাংশের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

শনিবার বিজেপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরেই শিলিগুড়ি জার্নালিস্ট ক্লাবের সামনে শুরু হয়ে যায় কর্মী-সমর্থকদের একাংশের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৫ ০২:৪৮
Share: Save:

প্রার্থী ঘোষণার পরে তৃণমূলে নেতা-কর্মীদের ক্ষোভ অচেনা নয়। এ বার সেই ক্ষোভের ছায়া পড়ল বিজেপিতেও। শনিবার পুরভোটের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরে সকাল থেকে বিক্ষোভ, ঘেরাও এমনকী রাতারাতি দলবদলও দেখল শিলিগুড়ি।

বিজেপির ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের তুমুল বিক্ষোভের মুখে ঘণ্টাখানেক ঘেরাও হয়ে থাকলেন দলের রাজ্য সম্পাদক বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী এবং দার্জিলিং জেলা সভাপতি রথীন বসু। বিশ্বপ্রিয়র গাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভও চলল বেশ কিছুক্ষণ। পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে দেখে শিলিগুড়ি জার্নালিস্টস ক্লাবে ছুটে আসে পুলিশ। সেখানে বিক্ষুব্ধদের হটিয়ে দিলেও ভিড় থেকে বারবারই উড়ে আসে বিশ্বপ্রিয়র বিরুদ্ধে স্লোগান। শোনা যায় কটাক্ষ, ‘টাকা নিয়ে প্রার্থী করছেন নেতারা!’ বিশ্বপ্রিয় অবশ্য দাবি করেছেন, “কর্মীরা আবেগের বশে উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন। এর বেশি কিছু ঘটেনি।” ঘেরাও হয়ে থাকার কথাও মানতে চাননি তিনি। তাঁর দাবি, “নিজেদের মধ্যে আলোচনার জন্যই বেশ কিছু ক্ষণ ক্লাবে বসে ছিলাম। ঘেরাও হওয়ার প্রশ্ন নেই। পুলিশও ডাকা হয়নি।”

শুক্রবার সকালে প্রায় একই চেহারা নিয়েছিল উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা দলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতম দেবের বাড়ি ও তার লাগোয়া এলাকা। পরে হিলকার্ট রোডে তৃণমূলের জেলা অফিসেও তুমুল বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন কর্মী-সমর্থকরা। সন্ধ্যায় বিক্ষুব্ধদের মিছিলও বেরিয়ে ছিল শহরের বিভিন্ন রাস্তায়।

শনিবার দুপুরে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম চত্বরে জার্নালিস্টস ক্লাবে বিজেপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগে থেকেই জমতে শুরু করেছিল সমর্থকদের ভিড়। এই সময়ে দলের জেলা নেতাদের কয়েক জনকে দেখা মাত্র প্রকাশ্যেই প্রার্থী করার আব্দার করতে দেখা যায় অনেককে। অনেকের গলায় ছিল হুমকির সুরও। চাপের মুখে প্রার্থী ঘোষণার সময় কিছুটা পিছিয়ে দেন নেতারা। তবে ক্ষোভ সামাল দেওয়া যায়নি তাতেও। ভিড়ে কার্যত বন্দি হয়ে পড়েন বিশ্বপ্রিয়-সহ জেলা নেতারা। পরে জেলা সভাপতি রথীন বসু অবশ্য ওই বিক্ষোভের ব্যাখ্যা দিয়ে দাবি করেছেন, “প্রার্থী হওয়া নিয়ে আগ্রহ থেকেই হুড়োহুড়ি। যার অর্থ, বিজেপির সঙ্গে সাধারণ মানুষের সমর্থন রয়েছে।”

শিলিগুড়ি পুরসভার ৪৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২টি ছাড়া সব ওয়ার্ডেই বিজেপি এ দিন তাদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে। অধিকাংশ ওয়ার্ডে দলের পুরনো মুখদেরই রেখেছেন জেলা নেতৃত্ব। তবে দলের তরফে কাউকেই মেয়র পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি। কংগ্রেস ছেড়ে আসা পুরসভার প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র সবিতা অগ্রবাল, তৃণমূল থেকে আসা হরিসাধন ঘোষ-সহ কয়েক জনকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী করা হয়েছে লালু মায়া ছেত্রীকে। দলীয় সূত্রে খবর, মোর্চার অনুরোধেই পদ্মের টিকিট পেয়েছেন তিনি।

তবে ৪৩ নম্বরের ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি আকাশ বর্মনের অভিযোগ, “প্রার্থী নির্বাচনের ব্যাপারে ওয়ার্ড কমিটির সঙ্গে আলোচনাই করেননি জেলা নেতারা।” ৫ নম্বর ওয়ার্ডের রীতা সাহানি কোনও রাখঢাক না রেখেই বলছেন, “প্রার্থী করার আশ্বাস পেয়েছিলাম, করেনি। নির্দল হিসেবেই লড়ব।”

বিজেপির জেলা সভাপতি রথীনবাবু বলছেন, “বিজেপিতে টাকা দিয়ে প্রার্থী হওয়া যায় না। রাজ্য থেকেই তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে।” দিনভর বিক্ষোভের মাঝে উল্টো ছবিও রয়েছে। এ দিন সকালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর পূরবী সেন-সহ ৪ জন। যার মধ্যে, শিক্ষা সেলের সদস্য নিত্যানন্দ পাল, ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের যুব তৃণমূলের সভাপতি বিক্ষুব্ধ নেতা তাশি লামা এবং তাঁর স্ত্রী এইচ পি ভুটিয়াও রয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE